রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, দশমী পূজার অঞ্জলী দিচ্ছেন ভক্তরা। নারীরা দেবীকে মিষ্টি মুখ করাচ্ছেন। এরপর একে অন্যের কপালে ও পায়ে সিঁদুর দিয়ে ও মিষ্টি খাওয়ানোর মধ্য দিয়ে পালন করেন বিজয়া দশমী। সিঁদুর খেলা বাঙালি সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজা উদযাপনের একটি ঐতিহ্যবাহী উপাদান।
বিজয়া দশমীতে বুধবার দেবী দুর্গা মর্ত্য ছেড়ে ফিরে যাবেন কৈলাসে। সারা বছরের অপেক্ষা শেষ হবে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। তবে এর আগে মণ্ডপে মণ্ডপে দেবীর বিজয়া উদযাপনে শুরু হয় রমণীদের সিঁদুর খেলা। এই দৃশ্য বহু বছর ধরে চলে আসছে।
নগরীর সাগরপাড়া শিবমন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, সকাল ১০টা থেকেই সিঁদুর খেলা শুরু হয়েছে। এর আগে ৯টা ৫৭ মিনিটে দেবীর দশমী বিহিত পূজা শেষ হয়, সেই সঙ্গে দেয়া হয় দর্পণ-বিসর্জন।
নগরীর সব মণ্ডপগুলোতে সকাল থেকে একই চিত্র দেখা যায়। দেবীকে বিদায় দেয়ার প্রাক্কালে চলছে সিঁদুর খেলা।
হিন্দুধর্মে বিশ্বাস করা হয়, সিঁদুর এর স্ত্রী তার সিঁদুরের শক্তি দিয়ে স্বামীকে রক্ষা করেন। সিঁদুরের লাল রং শক্তি ও ভালোবাসা বোঝায়। তাই এদিন মায়ের আশীর্বাদে চলে সিঁদুর খেলা।
অন্যদিকে এটাও বিশ্বাস করা হয় যে, টানা ৯ দিন মহিষাসুরকে যুদ্ধে হারানোর পর আজকের দিনে জয়লাভ করেন দেবী দুর্গা। তাই বিজয় উদযাপনে খেলা হয় সিঁদুর।
অনেকেই মনে করেন, দেবীকে মর্ত্য থেকে কৈলাসে স্বামী শিবের কাছে পাঠানোর সময় সিঁদুর দিয়ে বিদায় দিতে হয়। তাই এই সময় বিবাহিত নারীরা সিঁদুর খেলা করেন।
মন্দিরে সিঁদুর খেলা নিয়ে ব্যস্ত ঋতু সরকার বলেন, সারা বছর মায়ের জন্য অপেক্ষা করে থাকি। আর এই দিন আমাদের কাছে বিশেষ কিছু। দশমীর আগে সিঁদুর খেলা বিজয়ার তাৎপর্য ও স্মৃতিকে আরও সতেজ রাখে আমাদের মনে।
একই কথা অন্যসব পুণ্যার্থীরও। বিজয়া দশমীর প্রধান তাৎপর্য তাদের কাছে সিঁদুর খেলার মধ্যে নিহিত।
এবার রাজশাহীতে ৪৬৮টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে জেলার ৯টি উপজেলায় ৩৮৯টি এবং মহানগরে ৭৯ মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।