নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর বাজারে উঠতে শুরু করেছে নতুন পেঁয়াজ। তার পরেও দুদিনে হঠাৎ দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০-৬০ টাকা হারে। ফলে গতকাল রবিবার একদিনে রাজশাহীর বাজারে কেজিপ্রতি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০০-২১০ টাকা দরে।
এদিকে, চলতি মৌসুমে দেড় লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ রাজশাহীতেই উৎপাদন হবে। এরই মধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে নতুন পেঁয়াজ। আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে বাকি পেঁয়াজগুলোও বাজারে আসবে। এর পরে আসবে শীতকালীন পেঁয়াজ। যেটির বীজতলার পরিচর্যা চলছে কৃষকদের জমিতে।
রাজশাহী নগরীর সাহেবাজারে রোববার সকাল থেকে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি। অথচ শনিবার ও শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকায়। এক রাতের ব্যবধানে সরবরাহ না থাকার অজুহাতে দাম বাড়িয়েছে ৫০ টাকা। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম পাইকারি বাজারে কেজিতে বেড়ে গেছে ৮০ টাকা পর্যন্ত আর দেশি পেঁয়াজে বেড়েছে ৬০ টাকা।
সাহেববাজারের সবজি বিক্রেতা সুজন জানান, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবরে পাইকারি দোকান ও আড়তগুলোতে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে এবং বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
আরেক খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা আজগর হোসেন আহমেদ বলেন, দেশি পেঁয়াজের দাম হঠাৎই বাড়তে শুরু করেছে। গত এক সপ্তাহে আগে পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকেই দাম বাড়তে শুরু করে। ভারত থেকে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণার পর দাম বেড়ে চলেছে। শুক্রবার দেশি পুরোনো পেঁয়াজ ১৪০ টাকায় বিক্রি করেছি। শনিবার ১৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হয়েছে। কিন্তু রবিবারে গিয়ে সেটি বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২১০ টাকা কেজি দরে।
নাজমুল হক নামের এক ক্রেতা বলেন, গত তিনদিন আগেও ১২০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ কিনলাম। বিকেলে বাজারে এসে হঠাৎ শুনলাম পেঁয়াজের দাম ২০০ টাকা। সকালেও পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকায়। পেঁয়াজ যদি এই টাকা দিয়ে কিনতে হয়, তাহলে অন্যন্য জিনিসপত্র কি দিয়ে কিনবো? আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কথা কেউ চিন্তা করে না। সরকারের উচিৎ পেঁয়াজসহ এসব পণ্য দাম বেঁধে দেয়া।
এদিকে, রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা উম্মে সালমা বলেন, রাজশাহীতে বর্তমানে গ্রীষ্মকালীন ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে আসছে। এগুলো রাজশাহীতেই চাষ হয়েছে। তিন থেকে চারটিতে কেজি হয় এ পেঁয়াজ এবার রাজশাহীতে ১৩ শ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। এ পেঁয়াজ গত প্রায় এক মাস ধরে বাজারে আসছে।
তিনি বলেন, ভারতীয় জাতের এ পেঁয়াজ এবার প্রায় ৩৫ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন হবে রাজশাহীতে। এর মধ্যে দেশি ঢেমনা (মুড়ি) পেঁয়াজও উঠতে শুরু করেছে। এ জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়েছে ৭ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। এ মুড়ি পেঁয়াজের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা আছে এক লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। কাজেই পেঁয়াজ আমাদের উদ্বৃত্ত আছে। কিন্তু বাজারে কেন দাম বাড়ছে বলতে পারব না।’