নিজস্ব প্রতিনিধি: কেন্দ্রীয় নির্দেশ অমান্য করে রাজশাহী-২ আসনে নৌকার বিপক্ষে মাঠে নেমেছেন যুবলীগ নেতাদের একাংশ। রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী তৌরিদ আল মাসুদ রনি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মুকুল শেখের নেতৃত্বে সংগঠনের নেতাদের একাংশ
বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহী মহানগরীর একটি রেস্টুরেন্টে বৈঠক করেছেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ‘কাঁচি’ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুর রহমান বাদশা। বৈঠকে তারা নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে পরাজিত করতে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ‘কাঁচি’ প্রতীকের পক্ষে কাজ করার জন্য তাদের অনুসারীদের নির্দেশ দেন।
গত ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক দেশজুড়ে সংগঠনটির প্রতিটি নেতাকর্মীর কাছে একটি বার্তা পাঠান। দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ স্বাক্ষরিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ‘আপনাদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আগামী ৭ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী করতে এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে যুবলীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রচার-প্রচারণাসহ প্রাসঙ্গিক কর্মসূচি পালনের নির্দেশনা প্রদান করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে গিয়ে যুবলীগের যে সকল নেতৃবৃন্দ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তাদের দায়িত্ব বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ নেবে না। তাদের দায়িত্ব তাদেরকেই নিতে হবে।’ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনোরকম অপ্রীতিকর ঘটনা বা বিশৃঙ্খলায় জড়িত হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয় ওই চিঠিতে।
এরপর গত ২৬ ডিসেম্বর এই আসনে নৌকার প্রার্থী ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার পক্ষে কাজ করতে কেন্দ্রীয় যুবলীগের দিক নির্দেশনামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয় নগরীর কুমার পাড়াস্থ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে। স্থানীয় যুবলীগ নেতাকর্মীদের এসময় কঠোরভাবে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য সংগঠনের প্রধান নেতাদের নির্দেশ সম্পর্কে অবগত করেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং যুবলীগের নির্বাচনী টিম এর রাজশাহী জেলার আহবায়ক রফিকুল ইসলাম জোয়ার্দার (সৈকত জোয়ার্দার)।
কিন্তু কেন্দ্রীয় সেই নির্দেশ অমান্য করে বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর ভদ্রা এলাকার দারুচিনি রেস্টুরেন্টে মহানগর যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী তৌরিদ আল মাসুদ রনি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মুকুল শেখ তাদের অনুসারীদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। সেখানে উপস্থিত হন ‘কাঁচি’ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুর রহমান বাদশা।
যুবলীগের একটি সূত্র জানায়, তাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রথমে দড়িখড়বোনায় বৈঠকটি ডাকা হয়। পরে অজ্ঞাত কারণে ভেন্যু বদল করা হয়।
বৈঠকের সূত্র জানায়, সেখানে ঢোকার সময় অনেকের মোবাইল ফোন নিয়ে আলাদা করে রেখে দেয়া হয়। সেখানে বলে দেয়া হয়, কোনোভাবেই এই বৈঠকের কোনো ভিডিও রেকর্ড ধারণ করা যাবে না।
এসময় শফিকুর রহমান বাদশা দাবি কথা বলেন। পরে দুই যুবলীগ নেতা রনি ও মুকুল উপস্থিত অনুসারীদের প্রতিটি ওয়ার্ডে ‘কাঁচি’ প্রতীকের পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দেন। তৌরিদ আল মাসুদ রনি এসময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক প্রভাবশালী নেতার নাম উল্লেখ করে বলেন, তার নির্দেশ হলো এই আসনে কোনোভাবেই নৌকার প্রার্থীকে পাশ করতে দেয়া যাবে না। সে জন্য সবাইকে ‘কাঁচি’ প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে সর্বোচ্চ শক্তিতে মাঠে নামতে হবে। রনি এসময় এই স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্য যুবলীগের নির্বাচনী ব্যয় নিজেই বহন করবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে জানতে তৌরিদ আল মাসুদ রনিকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।