নিজস্ব প্রতিনিধি: ১৪ দলের নেতারা বলেছেন, যারা শেখ হাসিনাকে নেতা হিসেবে মানেনা; তার দেয়া নৌকাকে যারা অস্বীকার করে নেত্রীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে, তারা বিশ্বাসঘাতক ও মীরজাফর। আমরা ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ সকলে নেত্রীর সিদ্ধান্তের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। কখনোই আমরা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করিনি। তার নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্তকে স্বীকার করেই রাজনীতি করেছি। সুতরাং, আজকে যারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে, আগামী ৭ তারিখে রাজশাহীর মানুষ তাদের আস্তকুড়ে নিক্ষেপ করবে।
সোমবার বিকালে মহানগরীর দরগাপাড়া থেকে শুরু করে ঘোষপাড়া পর্যন্ত নৌকার মিছিল পরবর্তী আয়োজিত পথসভায় দেয়া বক্তৃতায় ১৪ দলের নেতারা এসব কথা বলেন। নৌকার বিশাল এই মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছেন রাজশাহী-২ আসনে শেখ হাসিনার মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার।
পথসভায় নৌকার প্রার্থী ও ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতা ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, গত ১৫ বছরে অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করেছেন। শেখ হাসিনা যেদিন দেশে ফিরে এসেছিলেন; তখন বাংলাদেশে বিএনপি ছিল রাষ্ট্র ক্ষমতায়। জামায়াত ইসলামের তাণ্ডব তখন দেশজুড়ে। সেদিন আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আমাদের নেতা হিসেবে গ্রহণ করেছিলাম। স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে লড়াই করার জন্য আমাদের একজন সাহসী নেতার প্রয়োজন ছিল। বঙ্গবন্ধু কন্যা ছিলেন সেই সাহসী নেতা। ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত শেখ হাসিনাকে নেতা মেনেই রাজনীতি করে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ আজকে কোন জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে সেটি আপনারাই উপলব্ধি করবেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাবেক ভিপি বাদশা বলেন, যারা শেখ হাসিনার উন্নয়ন দেখতে পায় না, তাকে নেতা হিসেবে স্বীকার করে না; তার দেয়া সিদ্ধান্তের যারা বিরোধিতা করে তারা প্রকৃত অর্থেই বিশ্বাসঘাতক ও মীরজাফর। আজকে রাজশাহীতে যারা শেখ হাসিনার দেয়া নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বড় বড় কথা বলছে; তারাও মীরজাফর ও বিশ্বাসঘাতক। তারা শুধু নৌকার বিরোধিতা করছে তাই নয়, তারা শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের বিরোধীতাও করছে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে আজকে যারা আমরা একত্রিত হয়েছি, তাদের জয় অবসম্ভাবী।
কোন “ঠকবাজের” সঙ্গে নয়, সৎ মানুষের সঙ্গে আছি মন্তব্য করে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, তিন তিনবারের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। আপনারা কখনো শুনেছেন, তিনি কখনো মানুষের ক্ষতি করেছে? দেখেছেন কোন মানুষের ঘরবাড়ি দখল করেছে? দেখেছেন কি, কারো জমি দখল করেছে? দেখেছেন-শুনেছেন কি, কাউকে চাকরি দেয়ার নাম করে টাকা নিয়েছে? শুনেছেন কি, কোন ভূমিদস্যু সৃষ্টি করেছে? দেখেছেন কি, কোন পুকুর দখল করেছে? দেখেছেন কি, কোন পুকুর ভরাট করেছে? ফজলে হোসেন বাদশা কখনোই এমনটি করেননি। এ কারণেই আগামী ৭ তারিখে রাজশাহীর মানুষ একজন সৎ ব্যক্তিকেই বেছে নেবে। আমরা যারা ফজলে হোসেন বাদশার সঙ্গে আছি, তারা কোন “ঠকবাজ” লোকের সঙ্গে নাই, সৎ ব্যক্তির সঙ্গে আছি। এই সৎ মানুষ এগিয়ে যাক, মহান রাব্বুল আলামিন তাকে কবুল করুন।
এমপি বাদশাকে নিয়ে বিভিন্ন মিথ্যাচারের জবাব দিয়ে নগর আওয়ামী লীগের দুই বারের এই সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, ফজলে হোসেন বাদশা কখনো জামাত-বিএনপির সঙ্গে আপোষ করেননি। রাজশাহীতে জামাত বিএনপি জোটের আতঙ্কে মানুষ যখন আতঙ্কিত, তখন এই মানুষটিই রাজপথে দাঁড়িয়ে তাদের প্রতিবাদ করেছে। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি জামাত যখন রাজশাহীকে তালেবানি শহরে পরিণত করার চেষ্টা করছিল, তখন এই ফজলে হোসেন বাদশাই রাজপথে দাঁড়িয়ে তাদের প্রতিহত করেছিলেন। বাংলা ভাইকে সৃষ্টি করে বিএনপি জামাত আওয়ামী লীগের ২২ জনকে হত্যা করেছিল। সেদিন এই ফজলে হোসেন বাদশা বাংলা ভাইয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তাকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছিলেন।বাংলা ভাইয়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামের মূল কাতারে ছিলেন তিনি। বাংলা ভাই সেদিন রাজশাহীর ডিসি-এসপিকে স্মারকলিপি দিয়ে গেছিল। সেদিনও ফজলে হোসেন বাদশা সেই ডিসি-এসপির সঙ্গে তর্ক করেছিলেন, ঝগড়া করেছিলেন, এবং তাদের অপসারণের দাবি তুলেছিলেন। মানুষটি তার ছাত্র জীবন থেকে এই পর্যন্ত সবসময় রাজশাহীর মানুষের সঙ্গে ছিলেন। রাজশাহী থেকে অনেক সংসদ সদস্যকে আমরা পার্লামেন্টে দেখেছি। কাউকে এতটা কথা বলতে দেখিনি, যতটা ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন। এসব সত্য। সত্যকে স্বীকার করতে হবে। যারা সত্যকে আড়াল করে মিথ্যাচার করছে; তাদের রাজশাহীর আপমর জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা রফিকুল ইসলাম পিয়ারুল, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রেজাউল ইসলাম বাবলু, সহ-সভাপতি বদরুজ্জামান খায়ের, মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, যুবমৈত্রীর কেন্দ্রীয় সভাপতি তৌহিদুর রহমান, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা আশরাফুল হক তোতা, মহানগর সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাদরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল মতিন, নাজমুল করিম অপু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইসতিয়াক আহমেদ লিমন, সাবেক ছাত্রনেতা মঞ্জুর মোরশেদ হাসান চুন্না, মনোয়ার হোসেন সেলিম, জেষ্ঠ আইনজীবী সুশান্ত দাশ, মহানগর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মুকিদুজ্জামান জুরাত, উপ-দপ্তর সম্পাদক পংকজ দে, উপ-প্রচার সম্পাদক সিদ্দিক আলম, সদস্য আশরাফ উদ্দিন খান, সৈয়দ মন্তাজ আহমেদ, ইসমাইল হোসেন, মুজিবুর রহমান, মাসুদ আহমেদ, আশীষ তরু দে সরকার অর্পণ, আলিমুল হাসান সজল, খাইরুল বাসার শাহীন, শাহ নেওয়াজ সরকার সেডু, জাতীয় শ্রমিক লীগ রাজশাহী মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শরীফ আলী মুনমুন, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকার, রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাসকিন পারভেজ সাতিল, রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান, রাজশাহী মহানগর কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল গাফফার শামীম, মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান রিমেল রিগেন প্রমুখ।