নাহিদ ইসলাম,নিজস্ব প্রতিবেদক: জব্দ করা বিভিন্ন ধরনের গাড়ি রাস্তার ওপর ফেলে রেখেছে রাজশাহীর রাজপাড়া থানা পুলিশ। বছরকে বছর থানার সামনে পড়ে থাকা এই গাড়িগুলোর এখন আর চলার শক্তি নেই। যন্ত্রাংশ ক্ষয়ে ক্ষয়ে মাটিতে মিশে যাচ্ছে। এখন রাস্তাটির সম্প্রসারণ করতে গিয়ে বেকায়দায় পড়েছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক)। বার বার অনুরোধ করা হলেও পুলিশ গাড়িগুলো সরাচ্ছে না।
প্রায় তিনমাস আগে রাজশাহী মহানগরীর ঝাউতলা মোড় থেকে আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসের মোড় পর্যন্ত রাস্তাটির সম্প্রসারণ এবং দুইপাশে নতুন করে ড্রেন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। পুরাতন রাস্তাটি প্রস্থে ৭ মিটার। এটিকে সম্প্রসারণ করে ৯ থেকে ১০ মিটার করার কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু রাজপাড়া থানার সামনে ঠিকাদার সম্প্রসারণের কাজ করতে পারছেন না পড়ে থাকা অচল গাড়িগুলোর জন্য। পুলিশ এ পর্যন্ত গাড়ি সরানোর কোন উদ্যোগ নেয়নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, থানার সামনে রাস্তার দুইপাশে দুটি ট্রাক, তিনটি প্রাইভেটকার ও দুটি মাইক্রোবাস পড়ে আছে। এছাড়া বেশকিছু রিকশা, অটোরিকশা, ভ্যান ও টেম্পুও পড়ে আছে। রিকশা, অটোরিকশা, ভ্যান ও টেম্পুগুলো একটু সরিয়ে ড্রেন নির্মাণের কাজ করেছেন ঠিকাদার। কিন্তু মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ও ট্রাক সরানো সম্ভব হয়নি। আগের মতোই এগুলো রাস্তার সরকারী জায়গা দখল করে পড়ে আছে।
থানার সামনেই ছিলেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আরেস এন্টার প্রাইজের ব্যবস্থাপক কায়সার রহমান। তিনি বলেন, ‘রিকশা-অটোরিকশাগুলো রাস্তার অন্যপাশে সরিয়ে কোনমতে আমরা ড্রেন নির্মাণের কাজটা করেছি। কিন্তু মাইক্রেবাস, প্রাইভেটকার ও ট্রাক সরানোর কোন উপায় নেই। এগুলো না সরালে রাস্তাটির সম্প্রসারণ কাজ করা যাবে না। থানার সামনে আগের সংকীর্ণ রাস্তায় থাকবে।’
সিটি করপোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি বলেন, ‘রাস্তায় পড়ে থাকা গাড়িগুলো নিয়ে প্রায় আড়াই-তিনমাস ধরে আমরা খুব বিপদে আছি। রাজশাহী মহানগর পুলিশকে (আরএমপি) চিঠি দিয়ে গাড়িগুলো সরানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। মৌখিকভাবেও বলা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ কোন উদ্যোগ নেয়নি। আমরা সড়কটা একটু সম্প্রসারণ করছি। এর জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হচ্ছে না। রাস্তারই সরকারী জায়গা আছে। তারপরও কাজটা করা সম্ভব হচ্ছে না পড়ে থাকা গাড়িগুলোর কারণে।’
সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর ইসলাম তুষার বলেন, ‘গাড়িগুলো সরানোর জন্য আমরা একাধিকবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু এখনও পুলিশ কোন উদ্যোগ নেয়নি। শেষ পর্যন্ত পুলিশ গাড়ি না সরালে থানার সামনে রাস্তা সংকীর্ণই থেকে যাবে। তাছাড়া কোন উপায় নাই। তবে আমরা আশা করছি পুলিশ গাড়িগুলোকে সরিয়ে অন্যত্র রাখার ব্যবস্থা করবে।’
জানতে চাইলে রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল হক বলেন, ‘মাদক পরিবহন কিংবা দুর্ঘটনার কারণে গাড়িগুলো জব্দ করা। দীর্ঘদিনেও মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণে গাড়িগুলো এখানেই রাখা হয়েছে। এখন গাড়িগুলো চাইলেই সরানো যায় না। আদালতের একটা ব্যাপার আছে।’
থানার সামনেই রাস্তার ওপরে গাড়ি রাখার জন্য আদালতের নির্দেশনা আছে কি না, এমন প্রশ্নে ওসি বলেন, ‘তা নেই। তবে গাড়িগুলো সরাতে হলে যারা কাজ করছে তাদেরও সহযোগিতা লাগবে। আমরা গাড়ি সরিয়ে নেব।’