নিজস্ব প্রতিবেদক: ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে তরুণীর ছবি সম্পাদন করে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ছড়ানোর দায়ে এক যুবকের ছয় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে নয় মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে রাজশাহী সাইবার ট্রাইবুন্যালের বিচারক জিয়াউর রহমান এ রায় দেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পৃথক তিনটি ধারায় তিনি এ রায় ঘোষণা করেন। কারাদণ্ড আসামীর নাম মিজানুর রহমান তুহিন (২৬)। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চাতরা চৌদ্দমাথা গ্রামের বেলাল উদ্দিনের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এই মামলার বাদী ভুক্তভোগী তরুণী নিজেই। তারা দুজনে রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। সেখানে তাদের বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। আসামী তুহিন ওই তরুণীকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে সে নাকচ করে। একই সাথে বিয়ের প্রস্তাব দিলেও সে না করে। ২০২২ সালের নভেম্বরে তরুণীর বিয়ে হয় অন্য এক যুবকের সাথে। এরপর আসামী তুহিন তরুণীকে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে।
সে বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার ব্যবহার করে তরুণীর মা-বোন সম্পর্কে কটু কথা বলে। এছাড়াও তরুণীর স্বামীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এরপর আসামী তরুণীর বেশকিছু ছবি ও ভিডিও সম্পাদনা করে ফেসবুকে তা পোস্ট করতে থাকে। যা সে ইচ্ছাকৃত ভাবে ভাইরাল করে। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে ২০ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত একটি ফেইক আইডি খুলে আপত্তিকর ভিডিও ও ছবি পোস্ট করে। এছাড়াও তরুণীর স্বামীকেও অশ্লীল ভিডিও ও ছবি দিতে থাকে।
এতে তরুণী সামাজিক ভাবে অপমানিত হয়। দুই পরিবার ও এলাকায় অস্থিরতা শুরু হয়। এরপর তরুণী বাদী হয়ে ২০২৩ সালের ৫ জানুয়ারি মিজানুর রহমান তুহিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় আসামী তুহিনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। পরে আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামীর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এ রায় ঘোষণা করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আরও বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ২৫(২) ধারায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২৬ (২) ধারায় দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও তিনমাস বিনাশ্রশ কারাদণ্ড এবং এবং ২৯ (২) ধারায় এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অনাদায়ে এক লাখ টাকার অর্থদণ্ড অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সাজা একটার পর একটা কার্যকর হবে বলেও রায়ে জানানো হয়।