নাহিদ ইসলাম,নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মহানগরীজুড়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি ও ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানগুলোর দাপটে বিল্ডিং কোড অমান্য করে একের পর এক বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা অভিযোগ করলেও কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েই দায়িত্ব সারে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-আরডিএ। কারণ ভবন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের কাছ থেকে ঘুষ নেন আরডিএর কতিপয় কর্মকর্তা। ঘুষ দিয়ে ভবনের প্ল্যান অনুমোদন দেওয়াই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। সাততলা ভবনের জন্য এক লাখ টাকা ও ১০ তলা ভবনের জন্য দুই লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়। বাড়তি টাকা গুনতে হয় ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্সের জন্যও। এ নিয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে তার কাজ আর অনুমোদন পাবে না এমন আশঙ্কায় এই ঘুষের হাটে কেউ কথা বলেন না।
তবে ঘুষের অভিযোগ অস্বীকার করে আরডিএর অথরাইজড অফিসার আবুল কালাম আজাদ আমাদের সময়কে বলেন, ঘুষ ছাড়া কারও প্ল্যান পাস হয়নি এমন নজির আমার জানা নেই। কেউ অভিযোগ করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে বলতে হবে। তা না হলে প্রতিকারের উপায় থাকবে না।
জানা গেছে, রাজশাহী মহানগরীর দেবিশিংপাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলীর বাড়ির পাশেই বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন গোলাম আজম। অভিযোগ রয়েছে আরডিএ অনুমোদিত নকশার বাইরে এ ভবন নির্মাণ করছেন তিনি। এ কারণে আরডিএতে অভিযোগ করে এরশাদ আলীর পরিবার। অভিযোগ তদন্ত করে অনিয়মের সত্যতা পেয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার পাশাপাশি ভবনটির চারদিকের প্ল্যানবহির্ভূত বর্ধিত অংশ ভেঙে ফেলতে চিঠি দেয় আরডিএ। কিন্তু ওই নির্দেশনা আমলে নেননি গোলাম আজম।
একইভাবে আরেকটি পরিকল্পনাবহির্ভূত বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে নগরীর রানীবাজার টাইলসপট্টি এলাকার একটি ড্রেন দখল করে। এ ভবনের মালিক পাভেল, তার মা ও বোন। অভিযোগ পেয়ে আরডিএ ভবনটির মালিককে নির্মাণকাজ বন্ধের পাশাপাশি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। এদিকে বিল্ডিং কোড অমান্য করে মহানগরীর লক্ষ্মীপুরে জিপিও পোস্ট অফিসের উত্তরে একটি বহুতল ভবন নির্মাণকাজ শুরু হয় তিন বছর আগে। একপর্যায়ে ভবনটির দক্ষিণের বাড়িতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ভুক্তভোগী আরডিএতে অভিযোগ দেন। কিন্তু একাধিকবার কারণ দর্শাতে বলার পরও এর নির্মাণকাজ বন্ধ করতে পারেনি আরডিএ। গত বছর শেষের দিকে ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। ভবনটি একটি হাসপাতাল ভাড়া নিয়েছে।
আরডিএ বলছে, প্রতিবছর গড়ে এক হাজার ভবনের পরিকল্পনা পাসের আবেদন পড়ে। যাচাই-বাছাই শেষে অথরাইজড শাখা নকশার অনুমোদন ও ভবন নির্মাণকাজ পর্যবেক্ষণ করেন। মহানগরীতে গত দুবছরে ভবন নির্মাণের সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণ। তবে অধিকাংশ ভবনই নির্মাণ করা হচ্ছে আরডিএ অনুমোদিত নকশার বাইরে। ব্যক্তিমালিকানাধীন বাড়ির পাশাপাশি ডেভেলপার কোম্পানিও এমন অনিয়মে জড়িয়ে পড়ছে বলে আরডিএর অভিযোগ। তারা অনুমোদিত নকশার বাইরেও ভবন নির্মাণ করে যাচ্ছে।তবে একাধিক ভবন নির্মাণকারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা ভবনের প্ল্যানের অনুমোদনের জন্য আরডিএর নির্ধারিত ফির চাইতে অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে থাকেন। নকশা প্রস্তুতকারীদের মাধ্যমে এই অর্থের লেনদেন হয়। একাধিক ডেভেলপার কোম্পানির মালিক জানিয়েছেন, আরডিএর অথরাইজড ও এস্টেট শাখার কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে ঘুষ না দিলে ফাইল নড়ে না। সাততলা ভবনের প্ল্যান পাসের জন্য এক লাখ ও ১০ তলা ভবনের জন্য দুই লাখ টাকা নির্ধারিত করে দেওয়া হয়। এই টাকা না দিলে প্ল্যান পাস হয় না।তবে একাধিক ভবন নির্মাণকারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা ভবনের প্ল্যানের অনুমোদনের জন্য আরডিএর নির্ধারিত ফির চাইতে অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে থাকেন। নকশা প্রস্তুতকারীদের মাধ্যমে এই অর্থের লেনদেন হয়। একাধিক ডেভেলপার কোম্পানির মালিক জানিয়েছেন, আরডিএর অথরাইজড ও এস্টেট শাখার কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে ঘুষ না দিলে ফাইল নড়ে না। সাততলা ভবনের প্ল্যান পাসের জন্য এক লাখ ও ১০ তলা ভবনের জন্য দুই লাখ টাকা নির্ধারিত করে দেওয়া হয়। এই টাকা না দিলে প্ল্যান পাস হয় না।