November 24, 2024, 2:08 am

News Headline :
রাজশাহীতে চাঁদাবাজি ও দখলদারত্ব বন্ধে কঠোর হুশিয়ারি যুবদল নেতা রবি’র পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু রাজশাহীতে কোথাও স্থাপনা করতে না পেরে শেষমেস ভাঙারির দোকানে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত আ.লীগ: নাছিম রাজশাহীতে আলু ও তেলের দাম বাড়তি রাজশাহীতে ‘সমন্বয়ক’ সোহেল রানাকে ‘ভুয়া’ বললো মহানগর ছাত্রদল প্রধান উপদেষ্টার সাথে খালেদা জিয়ার মতবিনিময় দেশের সকল ক্ষমতার মালিক হবেন জনগণ: ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজশাহীতে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন দালালের ফাইলে আগে সই করেন রাজশাহী পাসপোর্ট অফিসের ডিডি
রাজশাহীতে জমে উঠেছে ঈদ বাজার

রাজশাহীতে জমে উঠেছে ঈদ বাজার

নাহিদ ইসলাম,নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদের বকি আর মাত্র ১১ দিন। দিন যত গড়াচ্ছে রাজশাহীর ঈদ বাজার ততই জমে উঠছে। বিশেষ করে থ্রি পিস, শাড়ি ও পাঞ্জাবি বিক্রি বেড়েছে। এছাড়ও লেহেঙ্গা, ফ্লোর টাচ, আলিয়া, নায়রা, সিঙ্গেল কোত্তাসহ বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক সহজেই ক্রেতাদের নজর কাড়ছে। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে বাজার তত জমে উঠছে। প্রতিদন গড়ে ৭০ থেকে ৮০ কোট টাকার বেচাকেনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা।

ক্রেতাদের অভিযোগ, গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিটি পোশাকের দামই উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেশি। ঈদুল ফিতরে নারী ও শিশুদের পোশাকের বিক্রি বেশি হয়। সেসব পোশাকের দামও যেন এর মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশি। নতুন পোশাকের পসরা সাজানো বিক্রেতাদের দাবি, পাইকারিতেই এবার তাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে পোশাক। আর ক্রয়মূল্য বেশি হওয়ার কারণেই তাদের বেশি দামে বিক্রিও করতে হচ্ছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রাজশাহীর সাহেববাজার, আরডিএ মার্কেট ও গণকপাড়া এখন বেশ সরগরম। রমজানের প্রথম ১০ দিন পার হওয়ার পর এসব এলাকায় বিপণিবিতানগুলোতে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে।

প্রতি বছরের মতো এবারও ভিন্ন ভিন্ন নামের পোশাক এসেছে বাজারে। এ বছর আলিয়া কাট, আরিগ্রাউন্ড, ইন্ডিয়ান গ্রাউন্ড, নাইরা কাট, সারারা, গাড়ারা ও পাকিস্তানি গাউন বেশি চলছে। এর মধ্যে ক্রেতাদের প্রধান আকর্ষণে পরিণত হয়েছে নারীদের ‘আলিয়া কাট’ আর ‘নাইরা কাট’ জামা। এ ছাড়া বাচ্চাদের পোশাক, বিশেষ করে বিভিন্ন নকশার পাঞ্জাবিতেও রয়েছে সমান আকর্ষণ। ১২০০ থেকে শুরু করে ১৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব পোশাক।

নগরীর সাহেববাজারে অবস্থিত আরডিএ মার্কেটের ক্রেতাগোষ্ঠী প্রধানত মধ্যম আয়ের মানুষ। এবারও এই মার্কেটে বাহারি রঙের পোশাক এসেছে। তবে দাম বেশি বলে অসন্তুষ্টি জানাচ্ছেন ক্রেতারা।

বাবা মমিনুল ইসলামের হাত ধরে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছিল ছোট্ট শিশু মাসুদা। তারও পছন্দ ‘নাইরা কাট’ জামা। বাবা মমিনুল ইসলাম বলেন, “দাম অনেক বেশি। গতবারে চেয়ে অন্তত দেড় থেকে দ্বিগুণ বেশি দামে পোশাক বিক্রি হচ্ছে। এখন উৎসব তো, যত কষ্টই হোক না কেন, বাচ্চাদের নতুন পোশাক কিনে দিতেই হবে। একটা ‘নাইরা কাট’ জামা কিনেছি, ১৮০০ টাকা নিয়েছে। এটা অনেক বেশি।”              রাজশাহীর আরডিএ মার্কেটের বিক্রেতা মাসুদ রানা বলেন, রোজার প্রথম থেকেই ক্রেতারা ঈদের কেনাকাটা করতে আসতে শুরু করেছেন। গত বছরের চেয়ে এ বছর সব পোশাকের দামই বেড়েছে। এবার বেশি আলিয়া কাট, আরিগ্রাউন্ড, ইন্ডিয়ান গ্রাউন্ড, নাইরা কাট, সারারা, গাড়ারা ও পাকিস্তানি গাউন। তবে তরুণীদের বেশি আগ্রহ আলিয়া কাট ও নাইরা কাটে। এগুলো মানভেদে ১২০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। নগরীর সব বিপণিবিতান আর বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুমগুলোও ঝলমলে আলোতে সাজানো হয়েছে। বিক্রেতারা আশাবাদী এবারের ঈদবাজার নিয়ে। ফড়িং রাজশাহী শাখার ম্যানেজার এমরান হোসেন বলেন, আমরা ঈদকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছি। নতুন নতুন নকশার বিভিন্ন ফ্যাশনের পণ্য আনা হয়েছে। বিশেষ করে নাইরা কাটিং, সিকুন্সের পাঞ্জাবি, বিভিন্ন নিজস্ব ডিজাইনের থ্রিপিস আনা হয়েছে।

বেচা-বিক্রি বাড়তে থাকায় নগরীর শপিং মল থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিপণনি বিতানগুলো যেনো সেজেছে নতুন রূপে। ক্রেতাদের টানতে মার্কেটগুলোতে বাহারি রংয়ের বিভিন্ন ডিজাইনের নায়রা, আলেয়া, সিঙ্গেল কোত্তা, ফ্লো-টার্চসহ ভারতীয় বিভিন্ন ল্যাহেঙ্গার আধিক্য রয়েছে।ক্রেতারা বলছেন, দেশী-বিদেশি যাই হোক ঈদে চাই পছন্দের পোশাক। কিন্তু তা হতে হবে সাধ্যের মধ্যে। শুধু মার্কেট নয়, বিভিন্ন দেশীয় ব্র্যান্ডের আউট লেটেও যাচ্ছেন ক্রেতারা। শুধুমাত্র দেশীয় পোশাকের টানে।

রাজশাহী নগরীর আলুপট্টি মোড়ে আড়ং ফ্যাশানে কেনাকাটা করতে এসেছেন মাসুদা খাতুন। তিনি বলেন, ইন্ডিয়ান বা অন্য পোশাকগুলো সবাই আনতেই পারে। কিন্তু দেশীয় পণ্যগুলো মূলত একটি কোম্পানির এক একটি আলাদা ডিজাইন থাকে। ইউনিক হয়। তাই এখানেই কিনতে এসেছি। ভালোও লাগছে। দামও সমর্থের মধ্যে।

লারিভ ফ্যাশানে ক্রেতা ইমন হোসেন বলেন, দেশীয় পণ্য বেশ সুন্দর হয়। এছাড়াও পরিধান করেও বেশ স্বাচ্ছন্দ্য লাগে। তাই দেশীয় পণ্যের উপরেই ঝুঁকেছি। এবার দেশীয় পণ্যেই ঈদ করবো।
ক্রেতা চাহিদা মাথায় রেখে বিদেশি পোশাকের পাশাপাশি দেশীয় আউট লেটগুলোতে শোভা পাচ্ছে, লং কামিজ, আবায়া, নাগিসাস, টারকিস, যা ক্রেতাদের বেশ আকৃষ্ট করছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

গ্রামীণ চেক রাজশাহী শাখার ম্যানেজার শামসুল হক বলেন, গ্রামীণ চেক বেশ ভালো প্রস্তুতি নিয়েছে এবার। দেশীয় ডিজাইনের উপর বেশ কিছু শাড়ি আনা হয়েছে। ব্যবসাও বেশ ভালো হচ্ছে।

দর্জি বাড়ি ফ্যাশানের ম্যানেজার ফয়সাল হোসেন বলেন, দেশীয় ফ্যাশন হিসেবে এবার অনেক কিছু এসেছি। আশা করছি বেশ ভালো ব্যবসা হবে। আমাদের যে টার্গেট তা পূরণ করতে পারবো। বেশ সাড়া পাচ্ছি।

রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দোর আলী বলেন, ঈদের কেনাকাট জমে উঠেছে। দিন যত এগোবে ব্যবসার হার তত বাড়বে। এবার ৫০০ কোটি টাকার বেচাকেনা হবে বলে আশা করছি। এখন গড়ে প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ কোট টাকার বেচাকেনা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

ads



© All rights reserved © 2024
Developed by- .:: SHUMANBD ::.