বগুড়া
কবরে ১০ ঘণ্টা অবস্থান করলেন। অভিজ্ঞতা নিয়ে ভিডিও করলেন তিনি। আর ওপর থেকে সেই কবরের দৃশ্য ধারণ করলেন আরেক ভাই। এ পর্যন্ত সবই ঠিকঠাক চলছে। বিপত্তি দেখা দিলো পুলিশ আসার পর। ঘটনা আঁচ করতে পেরে দুই ভাইকে থানায় নিয়ে গেল পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (২২ আগস্ট) বগুড়ার শাজাহানপুরের আমরুল ইউনিয়নের রাধানগর এলাকায়।
স্থানীয়রা জানায়, দুই ভাই মিলে রাতের আঁধারে নিজ বাড়ির উঠানে কবর খুঁড়লেন। কবরে অক্সিজেন প্রবেশ করানোর জন্য প্লাস্টিকের পাইপ বসানো হয়েছে। আলোর জন্য ভেতরে বৈদ্যুতিক বাল্ব স্থাপন করা হয়েছে এবং কবরের ভেতরে ফ্যান স্থাপনের জায়গা না থাকায় কবরে ফ্যান স্থাপন করা হয়েছে। সেই ফ্যানের বাতাস ভেতরে প্রবেশ করানোর জন্য প্লাস্টিকের পাইপ বসানো হয়।
সব কিছু ঠিকঠাক করে রাত ১১টায় ছোট ভাই মিজানুর রহমান রনি (২২) কবরে প্রবেশ করেন। এ সময় তিনি ভিডিও করার জন্য ক্যামেরা পানির বোতল সঙ্গে নেন। তার বড় ভাই আবু হাসান মিলন (২৫) মাটি চাপা দিয়ে কবরের উপরের অংশ ঢেকে দিয়ে বাহিরের দৃশ্য ভিডিও করেন। এরই মধ্যে কেটে যায় ১০ ঘণ্টা।
সোমবার (২২ আগস্ট) সকালে বিষয়টি নজরে আসে প্রতিবেশীদের। বাতাসের গতিতে এ খবর ছড়িয়ে পরে গ্রামে। বিষয়টি জানতে লোকজন ভিড় জমাতে থাকে। স্থানীয়দের সঙ্গে ছুটে আসে পুলিশ। লোকে লোকারণ্য বাড়ির উঠান। পরিবেশ কখনো থমথমে আবার কখনো হৈ-চৈ শুরু হয়।
অবশেষে তোপের মুখে সকাল ৯টার দিকে রনি কবর থেকে বের হয়ে আসেন। বাইরের এ অবস্থা দেখে ভরকে যান তিনি। একদিকে টানা ১০ ঘণ্টা কবরের অভিজ্ঞতা অন্যদিকে চারপাশে লোকজনের সঙ্গে বাড়ির উঠানে পুলিশের উপস্থিতিতে কিছুটা বিচলিত হয়ে যান রনি।
উপস্থিত সকলের কাছে বিষয়টি বর্ণনা দেন তিনি। গল্পটি বর্ণনা দিলেও পুলিশের কাছে বিষয়টি বোধগম্য হয়নি। রনি এবং তার ভাই মিলনকে আটক করে থানায় নিয়ে যান পুলিশ।
রনির বাবা মোকছেদ আলী বলেন, তার ছেলে রনি একজন ইউটিউবার। রনি পায়ে হেঁটে দেশের বিভিন্ন এলাকা ভ্রমণ করেন। রনির ইউটিউব চ্যানেলে দর্শক বাড়ানোর জন্য এবং কবরের অভিজ্ঞতা অর্জন করে তা ইউটিউবে প্রচার করার জন্য কবরের এ নাটক সাজান।
বিষয়টি স্বীকার করে শাজাহানপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) শামীম হাসান বলেন, আপাতত জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য দুই ভাইকে হেফাজতে রাখা হয়েছে।