নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসলামী ছাত্রশিবিরের এক নেতার সন্ত্রাসী সংগঠন মিজু গ্যাংয়ের ১১ সদস্যকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৫)। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ মে) গভীর রাতে রাজশাহী মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-৫। এ সময় এক এক করে ১১ সদস্যকে আটক করে র্যাব।
আটক ১১ জনের মধ্যে একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক। অন্য ১০ জন হলেন, মিজু গ্যাংয়ের প্রধান রাজশাহী মহানগরের মতিহার থানার খোঁজাপুর এলাকার মিজানুর রহমান ওরফে মিজু (৩০), একই এলাকার মো. বকুল (৩৮), ডাঁসমারী পূর্বপাড়া এলাকার ঈমান (২৪), ধরমপুর পূর্বপাড়ার মো. শাকিব (২৫), মো. রবিন (২০), মো. রাব্বি (২৪), মো. অনিক (২১), ধরমপুরের ইয়ামিন আলী (২৮), মো. আমান (২২) এবং জেলার চারঘাট উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের বিপ্লব আলী (২২)।
তাদের কাছ থেকে ১৮টি ধারালো হাসুয়া, সাতটি ধারালো তলোয়ার, দুটি চাকু, তিনটি কাটার হাতল, একটি চাইনিজ কুড়াল, একটি খেলনা পিস্তল, হ্যান্ড গ্রেনেড হিসেবে ব্যবহৃত সিমেন্ট দিয়ে বানানো ৫৩টি ছোট ছোট ব্লক ও তিনটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।
বুধবার (১৫ মে) সকালে র্যাব-৫ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।
তিনি বলেন, অভিযানের আটক মিজু গ্যাংয়ের প্রধান মিজানুর রহমান মহানগর ছাত্রশিবিরের আইনবিষয়ক সম্পাদক। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। অভিযানের সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও শিবিরকর্মী রমজান আলী পালিয়ে গেছেন। এই মিজু গ্যাং রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি আহমেদ আব্দুল্লাহ ও সেক্রেটারি রোহান কবিরের নির্দেশনায় পরিচালিত হয়ে আসছে। জানতে পেরে প্রায় একমাস ধরেই গ্যাংয়ের সদস্যদের গতিবিধি নজরে রাখছিল র্যাব। সবশেষ এই মিজু গ্যাং একটি ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তবে দ্রুত অভিযান চালিয়ে এর আগেই অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
তিনি আরও জানান, এই গ্যাংয়ের সদস্যরা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে রাজশাহী শহরের বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি ও অন্যের হয়ে জমিদখলের কাজ করত। কোনো ব্যক্তি বাড়ি কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাজ শুরু করতে হলেই তাদের চাঁদা দিতে হতো। চাঁদা না দিলে দলবলে হামলা চালাত বাহিনীর সদস্যরা। তারা টেন্ডারবাজি ও ছিনতাইয়েও জড়িয়ে পড়েছিল।
র্যাব অধিনায়ক আরও জানান, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি মিজু গ্যাং শিবিরের জন্য সদস্য সংগ্রহ করত। এভাবে তারা তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডও বিস্তৃতি করছিল। এরা মতিহার থানার ধরমপুর পূর্বপাড়া এলাকায় রমজানের নির্মাণাধীন ভবনে একটি অফিস বানিয়েছিল।
সেখানেই গড়ে তোলা হয়েছিল অবৈধ অস্ত্রের মজুদ। এছাড়া আটককৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরও দুটি স্থান থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এই গ্যাংয়ের সদস্যরা সিমেন্ট দিয়ে তৈরি গ্রেনেডের মতো ব্লক ছুঁড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করত। তারা একটি ডাকাতির প্রস্তুতি নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ১১ জনকেই মতিহার থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। এছাড়া র্যাবের পক্ষ থেকে মামলাও করা হয়েছে।