ঢাকা ইডেন কলেজের ওই ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ৪ বছর ধরে দৌহিক সম্পর্ক স্থাপন করে আসছিলেন রাজশাহীর তানোরের জুয়েল রানা। জুয়েলের ঢাকার বাসার দারোয়ান ওই ছাত্রীকে তার স্ত্রী বলেই জানতেন।
বিয়ের দাবিতে ঢাকা থেকে রাজশাহীর তানোরে আসা ঢাকা ইডেন কলেজছাত্রী চারদিন ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি রয়েছেন। গত বুধবার তানোর থানা পুলিশ ওই ছাত্রীকে তার প্রেমিকের বাড়ি উপজেলার চান্দুড়িয়া গ্রাম থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলেও রহস্যজনক কারনে বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন প্রশাসন। ফলে, অসহায় হয়ে পড়েছেন ওই ছাত্রী। তার পরিবারও তার ডাকে সাড়া দিচ্ছেন না বলেও জানিয়েছেন ওই ছাত্রী।
পুলিশ ও এলাকাবাসীসহ ওই ছাত্রীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, তানোর উপজেলার চান্দুড়িয়া গ্রামের রেজাউল ইসলামের পুত্র জুয়েল রানা (ঢাকায় একটি ওষুধ কোম্পানিতে কর্মরত) গত ৪ বছর আগে হাতির ঝিলে তাদের পরিচয়।
এরই সুত্র ধরে বরিশাল ঝালকাঠী জৈনক ব্যক্তির কন্য ঢাকা ইডেন কলেজের ওই ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ৪ বছর ধরে দৌহিক সম্পর্ক স্থাপন করে আসছিলেন জুয়েল রানা। জুয়েলের ঢাকার বাসার দারোয়ান ওই ছাত্রীকে তার স্ত্রী বলে জানতেন।
এ অবস্থায় জুয়েল রানা তার প্রেমিকা ইডেন কলেজের ওই ছাত্রীকে না জানিয়ে রাজশাহী মহানগরীর নওদাপাড়া এলাকায় জৈনক এক স্কুল শিক্ষকের মেয়েকে বিয়ে করে আবার ঢাকায় গিয়ে তার প্রেমিকার কাছে বিয়ের বিষয়টি গোপন রেখে ওই ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখেন জুয়েল।
এ অবস্থায় গত ১৫ দিন আগে জুয়েলের বিয়ের বিষয়টি জানতে পেরে জুয়েল প্রশ্ন করে কিন্তু জুয়েল বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে। এ অবস্থায় ওই ছাত্রী গত রোববার সকালে জুয়েলের বাড়িতে আসেন। কিন্তু জুয়েলের পরিবার তাকে নির্যাতন করে তাড়িয়ে দিলে একই গ্রামে জুয়েলের নানার বাড়িতে আশ্রয় নেন।
সেখানে একদিন থাকার পর সেখান থেকেও তাকে তাড়িয়ে দিলে ওই গ্রামের জৈনক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নেন। প্রভাবশালী জুয়েল পরিবারের চাপের মুখে পরদিন বুধবার ওই বাড়ির মালিক ওই ছাত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
পরে বুধবার ওই ছাত্রী ৯৯৯ এ ফোন করলে তানোর থানা পুলিশ ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করার পর আর কোন খোজ খবর নেননি।
বর্তমানে ওই ছাত্রী তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অসহায়ের মত পড়ে রয়েছেন। শনিবার সরেজমিন তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে তার সাথে কথা বলার পর তার শারীরিক বিষয়ে জানতে চাইলে কর্তব্যরত নার্স বলেন কয়েকটি পরীক্ষা করাতে হবে। কিন্তু কেউ না থাকায় এ ভাবেই পড়ে রয়েছে ওই ছাত্রী বলেও জানান তিনি।
এবিষয়ে প্রেমিক জুয়েলের পিতা চান্দুড়িয়া গ্রামের রেজাউল ইসলাম বলেন, তাকে কোন নির্যাতন করা হয়নি। তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছি বলেও জানান তিনি।
এব্যাপারে তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, ওই ছাত্রী ৯৯৯ এ ফোন করেছিলো তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন অভিযোদ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।