নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মহানগরীতে “নারী”র ফাঁদ দিয়ে ৫০হাজার টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় ৪জন নারী-সহ ৮জন ভুয়া সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছে শাহমখদুম থানা পুলিশ।
বুধবার (৫ জুন) বিকাল ৫টার দিকে শাহমখদুম থানাধীন বনলতা আবাসিক সংলগ্ন (কৃষি ব্যাংকের পূর্ব দিকে) এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো: দৈনিক নববানী পত্রিকার সাংবাদিক মানিক সাধন (৩০), দৈনিক দেশ পত্রিকার সাংবাদিক মোঃ কাউসার (২৩), একই পত্রিকার রিপোর্টার মোঃ রহমত (২২), ডিডিপি টিভি ও দৈনিক দেশ পত্রিকার সাংবাদিক মোঃ কাউসার আলী (২৩), ডিডিপি টিভির সাংবাদিক মোঃ শাকিল (২৪), দৈনিক দেশ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মোঃ সালাউদ্দিন (৩৬), দৈনিক দেশ পত্রিকার সাংবাদিক মোঃ আশিক হাসান (২৩), মোহাম্মদ রতন (২০) সে পেশায় ছাত্র। নারীদের মধ্যে রয়েছেন মোছাঃ সুমি (২৬), মোছাঃ শম্পা (২০), প্রিয়াঙ্কা খাতুন (২১) ও পপি (৩৪)।
তবে এঘটনার মুল হোতা মোঃ রানা-সহ পালিয়ে গেছে আরও ৩/৪ জন।
পুলিশের দাবি আটককৃতরা সবাই সাংবাদিক পরিচয়দানকারী ভুয়া সাংবাদিক। তারা নিজেদেরকে যে সকল পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়েছেন সেসকল পত্রিকার সম্পাদক তাদের চেনেনা বলে জানিয়েছেন।
এঘটনায় ভুক্তভোগী মোঃ এমরান আলী নামের এক যুবক শাহমখদুম থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এমরান আলী রাজশাহী বাগমারা থানার ডাক্তা গ্রামের সেকেন্দার আলীর ছেলে।
এজাহারে তিনি উল্লেখ করেছেন, বুধবার সকাল ১০দিকে মামলার প্রধান আসামি মোঃ রানা আহম্মেদ তার বাসায় পারিবারিক অনুষ্ঠান আছে বলে তাদের দাওয়াত দেয়। সে অনুযায়ী বিকেল ৪টার দিকে এমরানের সাথে তার বন্ধু মাহাবুর রহমান (২৭) ও মতিউর রহমান (২০) সহ তার বাসায় যায়। সেখানে গিয়ে রানা তার স্ত্রীসহ আরো তিনজন মেয়েকে দেখতে পায় তারা। রানা তার শশুর বাড়ির আত্মীয় বলে পরিচয় করিয়ে দেয় তাদের। তার কিছুক্ষনপর ১০/১২ জনের সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের একটি দল নিজেদের সাংবাদিক পরিচয়ে ওই বাড়িতে প্রবেশ করে তাদের এক রুমে নিয়ে আটক করে রাখে এবং সেখানে ওই সকল নারীদের তাদের পাশে বসিয়ে বিভিন্ন ধরণের হুমকি প্রদান করে। এসময় তারা বলে “এখানে তোরা অসামাজিক কার্যকলাপ করতে এসেছিস, আমাদের ৫০হাজার টাকা চাঁদা দিতে হবে, না হলে তোদের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের নিকট ছবি তুলে পাঠিয়ে দিবো।
টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সাংবাদিক পরিচয়ধারী ব্যক্তিরা তাদের চড় থাপ্পড কিল ঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে।
এসময় রানা ও তার স্ত্রী পপি আক্তার সাংবাদিকদের দাবীকৃত টাকা দিতে বলেন। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করলে তারা জোরপূর্বক এমরান ও তার বন্ধুদের মানিব্যাগ থেকে মোট ৩১ হাজার টাকা বের করে নেয়।
পরবর্তীতে তাদের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে রানাসহ চক্রের ৩/৪ জন সদস্য টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাদের আটক করে নিয়ে আসে থানায়।
এব্যাপারে শাহমখদুম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, নারী দিয়ে ব্ল্যাক মেইলের ঘটনায় ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। পলাতক রয়েছে একজন, তাকেও গ্রেফতারের চেস্টা চলছে বলে জানান ওসি।