নিজস্ব প্রতিনিধি: ঢাকাকে যেমন বলা হয় মসজিদের শহর। সিলেটকে বলা হয় হাড়রের শহর, আর বরিশালকে বলা হয় খালের শহর। প্রায় ৮০’র দশকে সময়ে রাজশাহীকে বলা হতো পুকুরের শহর। তবে এটি এখন কেবলই ইতিহাস। দিনের পর দিন রাতের আঁধারে একের পরে এক পুকুর হারিয়ে যাচ্ছে । তবে পুকুর ও জলাশয় ভরাটে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও উপজেলার চেয়ারম্যান । এদের থাবায় বিলিন হচ্ছে ঐতিহাসিক রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন প্রকার জলাশয়।
সম্প্রতি অভিযোগ উঠে আসে ৫ নং হরগ্রাম ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ও নাটোর গুরুদাসপুর থানার এসআই শাহজাহানের ছেলে নিয়ন রাতের আঁধারে পুকুর হত্যার আয়োজন করেন। জায়গাটির পরিমাণ সর্বমোট ২৫ কাটা যার মধ্যে ১৪ কাঠা কাগজে পুকুর হয়ে রয়েছে। পুকুরের শ্রেণী পরিবর্তন না করে আইন রক্ষকের ছেলে ও একজন জনপ্রতিনিধি কিভাবে বেআইনি কাজ করে এটি মানতে নারাজ সুশীল সমাজ।
সরেজমিনে রাজশাহী মহানগরীর পবা উপজেলার অচিনতলা মোড়ে উপস্থিত হলে এলাকাবাসীর কাছে জানা যায়, পুলিশ আর চেয়ারম্যানের দাপট দেখিয়ে এসআই শাহজাহানের ছেলে নিয়ন স্বয়ং নিজে দাঁড়িয়ে থেকে পুকুরে বালি ফেলা শুরু করে। গাড়ি ও পুকুরে বালি ফেলার শব্দে এলাকাবাসী হাজির হলে একপ্রকার দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়।
এলাকাবাসী এক এক করে জড়ো হতে থাকলে নিয়ন সেখান থেকে সরে পড়ে। এলাকাবাসীর অভিযোগ নিয়ন তার পিতা এসআই শাহজাহানের ক্ষমতার বলে কাউকে তোয়াক্কা করেন না। উনার পিতাকে অভিযোগ দিলেও সেটা কখনোই কাজে দেয় না। ছেলের অপকর্ম ঢাকতে বাপের ঘুষের টাকা যথেষ্ট। প্রশাসনের কর্মী হয়ে দুর্নীতির টাকায় ছেলের অপকর্ম ঢাকতে এসআই শাহজাহান ও চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ সব সময় সাপোর্টে থাকে বলে জানান এলাকাবাসী।
আরোও জানা যায়, চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ও এস আই শাহজাহান আড়ালে থেকে নিয়নকে দিয়ে সমস্ত অপকর্ম করিয়ে থাকে। নির্বাচনের সময় চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের জন্য ভোট কেনার সমস্ত কাজ নিয়ন এর দাড়াই করায় চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ।
এ বিষয়ে জানতে এসআই শাহজাহানকে ফোন দিলে তিনি জানাই, সেখানে আমার আড়াই কাঠা জমি আছে দক্ষিণ দিকে। এই কাজটি আমি বা আমার ছেলে কেউ করছিনা। বেশিরভাগ জমি চেয়ারম্যানের। সে এই কাজটি করছে। আপনারা তার সাথে কথা বলুন। অথচ ঘটনার রাতে উনার ছেলে নিয়ন স্বয়ং উপস্থিত থেকে পুকুর ভরাট করান। বিষয়টি তিনি অস্বীকারও করেন।
এ বিষয়ে ৫ নং হড়গ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে রাজপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, পুকুর খনন বা ভরাটের বিষয়টি আমাদের দেখার কথা না। এটা দেখবেন এসিল্যান্ড বা পরিবেশ অধিদপ্তর। তাঁরা যদি অভিযান পরিচালনা করেন তাহলে পুলিশ তাঁদের সহযোগীতা করবেন।