নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা চারঘাট উপজেলা বর্তমানে মাদকের প্রভাব সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে ইউসুফপুর, মোক্তারপুর, পাইকানপাড়া, ও শলুয়া ইউনিয়ন এলাকায় মাদক কারবার অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। আর এলাকায় চুরি-ছিনতাই ও মারামারি-সংঘাতসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডের পেছনের উৎস মাদক।
মাদকে ছেয়ে গেছে চারঘাট পৌরসভার প্রতিটি এলাকা। মাদক ব্যবসায়ীরা নিজেদের ক্ষমতাসীন দলের লোক পরিচয় দিয়ে নিশ্চিন্তে ব্যবসা করছেন। স্থানীয় অন্তত ৫০ জন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের মূলে রয়েছেন এখানকার প্রভাবশালী এক রাজনীতিকের কাছের লোকেরা। ফলে মাদক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে মানুষ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার লোকজন বলছেন, মাদক ব্যবসায় জড়িত ব্যক্তিদের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগের এক নেতা।
এলাকার অনেকে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বিভিন্ন সভা-সেমিনারে রাজনৈতিক নেতারা মাদকের বিরুদ্ধে শপথ করান। আবার তাঁরা নিজেরাই মাদকের ব্যবসা করেন, মাদক সেবন করেন। পুলিশ এসব দেখেও চুপ থাকে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গলায় গামছা, হাতে ধারলো একটি বড় হাসুয়া। সাথে রয়েছে ফেনসিডিলের বোতল। লুঙ্গির ভাজেও গুজা রয়েছে আরও দুইটি ফেনসিডিলের বোতল। আরেক হাতে হেরোইনের প্যাকেট। আর মোটর বাইক আরোহী তার কাছ থেকে কিনছেন ফেন্সিডিল ও হেরোইন।
এই দৃশ্য রাজশাহীর মোক্তারপুরের পাইকানপাড়া গ্রামের মাদক কারবারীদের মাদক বিক্রয়ের দৃশ্য। এভাবেই নিজ বাড়ির সামনে মাদক দ্রব্য বিক্রি করছেন রাজশাহীর চারঘাট পৌরসভার মোক্তারপুরের পাইকানপাড়া, গ্রামের মৃত: তাহারউদ্দিন এর ছেলে আলমগীর (৪০)। এভাবেই চারঘাটে অপ্রতিরোধ্য মাদক কারবারি ও তাদের গডফাদাররা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে চারঘাট থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদক মামলাও রয়েছে। বেশ কয়েকবার জেলও খেটেছেন তিনি। কিছু দিন আগেও সেই মাদক দ্রব্যসহ গ্রেপ্তার হয়েছিল। জেল থেকে বের হয়ে ফের মাদক কারবার শুরু করেছে আলমগীর।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর বলেন, তাঁদের দৌরাত্ম্যে সাধারণ মানুষের শান্তিতে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কিন্তু ওই সব গডফাদাররা সবসময় থেকে যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাইরে।
এবিষয়ে মাদক ব্যবসায়ী আলমগীর বলেন, আমি আওয়ামীলীগ করি আমি কোন মাদক ব্যবসা করিনা বলে ফোন কেঁটে দেন।
জানতে চাইলে চারঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তুষার বলেন,আওয়ামী লীগের কোন দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ মাদক ব্যবসা করতে পারবেনা।
চারঘাট মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন,চারঘাট থানা এলাকায় মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান অব্যহত রয়েছে।এছাড়াও মাদক কারবারিদের গডফাদারদেরও আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। তাদের ধরতেও অভিযান অব্যাহত আছে।দ্রুত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। ওসি আরও বলেন, ‘আমরা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করি।