রাজশাহীর তানোর ও মুন্ডুমালা পৌরসভার জন্য ছয়জন ওএমএসএর চাউলের ডিলার রয়েছে। ডিলার মিলার ব্যবসায়ী ও কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরাই এসবের অন্যতম সিন্ডিকেট।
তানোর প্রতিনিধি
সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা, হুহু করে বেড়েই চলেছে সকল ধরনের পণ্যের দাম, সবচেয়ে সমস্যায় রয়েছে খেটে খাওয়া, দিন মুজর ও নিম্ম মধ্যবিত্তরা, দেশে এত পরিমান চাউল থাকলেও অসাধু ব্যবসায়ীদের হাত থেকে সাধারন জনসাধারনের জন্য সরকার বিশাল ভূর্তুকিতে শুরু করেছেন ওএমএসএর মাত্র ৩০ টাকা কেজি দরে চাউল বিক্রি। সারা দেশে সরকারী নিযুক্ত ডিলারদের মাধ্যমে শুধু সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার নাগরিকরা এসুবিধা পাবেন। কিন্তু দূর্যোগের সময় সরকারের এমন মহৎ কাজকে অসাধু কর্মকর্তা ডিলার মিলেমিশে কালো বাজারে পাচার করা হচ্ছে সেই চাউল বলে অহরহ অভিযোগ। রাজশাহীর তানোর ও মুন্ডুমালা পৌরসভার জন্য ছয়জন ওএমএসএর চাউলের ডিলার রয়েছে। ডিলার মিলার ব্যবসায়ী ও কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরাই এসবের অন্যতম সিন্ডিকেট।
গত শনিবার নির্ভরযোগ্য সুত্রে গোল্লাপাড়া বাজারের এক চাউল ব্যবসায়ীর কাছে জানতে চাওয়া হয় খাদ্য গুদামের সাথে ব্যবসা করেন কুঠিপাড়া গ্রামের ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি মিজান চাউল দিয়েছে নাকি, তিনি নাম প্রকাশ না করে জানান, মিজান চাউলের স্যাম্পুল এনেছিল, কিন্তু গন্ধের জন্য নিতে পারিনি।
কিন্তু মিজান জানান, আমি কোন চাউল কিনিনি, কেউ বলতেও পারবে না। মিজানের সাথে সিন্ডিকেট করছেন খাদ্য গুদামের গার্ড ডলার এমন অভিযোগ রয়েছে এবং সে ইনস্পেক্টর হিসেবে নাকি পরিচয় দেন। তবে তিনি সব কিছুই অস্বিকার করেন।
ওই পৌরসভার আরেক ডিলার রফিকুল তানোর পৌরসভার ডিলার নাটের গুরু সুনিল ও সাবেক লেবার সরদার নাজিম উদ্দিন চাউল কিনলেও গুদামেই রেখে দিচ্ছেন। তানোর পৌরসভার কাশিম বাজার এলাকার ডিলার ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা আলফাজ গত মৌসুমে অন্যের বাড়িতে ওএমএসএর চাউল পাচারের অপরাধে ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা দিয়ে ছাড় পায়। এবারো তাকেই রাখা হয়েছে ডিলার, তিনি সুনিল ডিলারের কাছে প্রকাশ্যে বিক্রি করছেন চাউল।
জানা গেছে, চলতি মাস থেকে সিটি ও পৌর এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বর্তমান সরকার ৩০ টাকা কেজি ধরে চাউল বিক্রি করা শুরু করেন। প্রতি জন ৫ কেজি করে চাউল কিনতে পারবেন। প্রতিদিন ২ টন করে চাউল বিক্রি করতে হবে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা রাখতে হবে। থাকবেন ট্যাগ অফিসার।
চাউল পাওয়া বেশির ভাগ ব্যক্তিরা জানান, সারা দিন খুলে রাখার নিয়ম হলেও কখনো থাকে আবার কখনো বন্ধ। সব সময় থাকে না। আবার মাঝে মাঝে খুবই ভালো মানের চাউল পাওয়া যায়। কিন্তু বেশির ভাগ মোটা চাউল। আমাদের এলাকায় এসব ধান উৎপাদন হয় না।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, দুই পৌরসভার ছয় ডিলার কারসাজি করে সুনিল, নাজিম সরদার ও মিজানের কাছে বিক্রি করছেন । গত ১১ সেপ্টেম্বর রোববার দুপুরের দিকে ১২০ বস্তা চাউল পাচার করেন সুনিল, নাজিম সরদার ও মিজান। সাদা বস্তায় মোটা চাকের চার্জার ভ্যানে পাচার করেন।
ডিলার সুনিল , গুদাম থেকে চাউল পাচারের কথা স্বীকার করে বলেন আমি একাই করছি না, তার আগের দিনসহ প্রায় দিন গুদাম সরদার ভুট্রো মোহনপুর ও কেশরহাটে চাউল পাচার করে আসছেন। আর সে সবকিছু জানিয়ে দিচ্ছে। সে লেবার সরদার হয়ে কিভাবে চাউল কিনাবেচা করেন। সে ছয় ডিলারের চাউল নিবে কম টাকা ধরে। না দেওয়ার কারনে এসব করছেন। তাছাড়া কখন কি হচ্ছে সবকিছু মিডিয়াকে বলে দিচ্ছে।
মুন্ডুমালা পৌর এলাকার ডিলার রফিকুলের ছেলে আলম জানান, চাউল নিতে না এলে কি করব, এজন্য বাহিরে বিক্রি করতে হয়।
লেবার সরদার ভুট্রো জানান, আমি কোন চাউল কিনি না, সুনিল ও নাজিম সরদার গুদামের মুল সিন্ডিকেল। তাদের সাথে আছে মিজান। সুনিলের কয়েল শো বস্তা চাউল এখানো গুদামে আছে, যা সরেজমিনে তদন্ত করলেই ধরা পড়বে।
তানোর গুদাম কর্মকর্তা ওসিএলএসডি ওহেদুজ্জামান জানান, গুদামে কিভাবে ব্যবসা হয় তা সবার জানা। হঠাৎ এসব বন্ধ করা যাবে না, তবে অনেকটাই কমে এসেছে আসা করছি আরও কমবে। আগের অফিসারেরা এসব করে গেছেন, সময় লাগবে সিন্ডিকেট দুর করতে।
উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা আজহারুল ইসলামের কাছে ট্যাগ অফিসার ও চাউল পাচারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, কে কোন জায়গার ট্যাগ অফিসার সেটা জানানো যাবে না, ট্যাগ অফিসার থাকেনা এবং চাউল পাচার হচ্ছে প্রশ্ন করা হলে উত্তরে জানান এসব বিষয়ে কোন অভিযোগ পায়নি পেলে ব্যবস্হা নেওয়া হবে।