November 24, 2024, 2:31 pm

News Headline :
রাজশাহীতে চাঁদাবাজি ও দখলদারত্ব বন্ধে কঠোর হুশিয়ারি যুবদল নেতা রবি’র পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু রাজশাহীতে কোথাও স্থাপনা করতে না পেরে শেষমেস ভাঙারির দোকানে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত আ.লীগ: নাছিম রাজশাহীতে আলু ও তেলের দাম বাড়তি রাজশাহীতে ‘সমন্বয়ক’ সোহেল রানাকে ‘ভুয়া’ বললো মহানগর ছাত্রদল প্রধান উপদেষ্টার সাথে খালেদা জিয়ার মতবিনিময় দেশের সকল ক্ষমতার মালিক হবেন জনগণ: ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজশাহীতে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন দালালের ফাইলে আগে সই করেন রাজশাহী পাসপোর্ট অফিসের ডিডি
তানোরে মনো দ্বন্দ্বে জর্জরিত ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ

তানোরে মনো দ্বন্দ্বে জর্জরিত ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ

বিশেষ করে নিয়োগ বানিজ্য ও মুক্তিযোদ্ধার বেদখল মাটি ক্রয় থেকে শুরু করে নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন মৌসুমী নেতারা

তানোর প্রতিনিধি

রাজশাহীর তানোরে সম্মেলন পরবর্তী, নেতৃত্ব দুর্বল, নব রত্নদের ব্যপক আভির্বাবে নিজেদের মধ্যে চরম মনোদ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে বলে একাধিক দলীয় সিনিয়র নেতারা অভিযোগ তুলেছেন।

বিশেষ করে নিয়োগ বানিজ্য ও মুক্তিযোদ্ধার বেদখল মাটি ক্রয় থেকে শুরু করে নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন মৌসুমী নেতারা। অবশ্য সবাই একই সাথে সভা সমাবেশ করলেও অভিযোগের শেষ নেই। যা ইতিপূর্বেই ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় দুইজন অথিতিকে সর্বাত্মক ক্ষমতা দেওয়া, নিয়োগ বানিজ্যসহ নানান বিষয়ে একক ক্ষমতা দেওয়া থেকে শুরু করে অর্থ বানিজ্যের কারনে বিব্রত তৃনমুল । অবশ্য এসব নিয়ে জনপ্রতিনিধিরা এমপিকে পর্যন্ত অভিযোগ করেছেন, তারপরও রহস্য জনক কারনে কোন ধরনের পরিবর্তন আসেনি। তবে নতুন নেতৃত্ব নিয়েও রয়েছে ক্ষোভ যদিও অপেন প্রকাশ হচ্ছেনা। কারন রাব্বানীর বিকল্প কলমা ইউপি নির্বাচনে জামানত হারানো মাইনুল ইসলাম স্বপনকে সভাপতি ও মামুনের বিকল্প হিসেবে সদরের প্রভাষক কয়েকবার পৌর নির্বাচনে পরাজিত আবুল কালাম আজাদ প্রদীপ সরকারকে সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে। ফলে সম্পাদক নিয়ে তেমন প্রশ্ন না উঠলেও ব্যপক প্রশ্ন সভাপতিকে নিয়ে। অপর দিকে তানোর পৌর সদরে মুক্তিযোদ্ধার বেদখল উচ্চ আদালতে মামলাধীন জায়গা কিনে চরম সমালোচিত আবুল বাসার সুজন। আর হাতুড়ী প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান আবু বাক্কারকে বেশকিছু স্কুলের সভাপতি নিয়োগে লেনদেনের ঘটনাও রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত।

দলীয় নেতারা জানান, চলতি বছরের ১৫ জুলায় উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে ভোটের আয়োজন থাকলেও সবকিছু বাতিল করে নতুন সভাপতি হিসেবে ঘোষনা দেওয়া হয় কলমা ইউপির সাবেক সভাপতি গত ইউপি নির্বাচনে নৌকা নিয়ে বিদ্রোহীর কাছে জামানত হারানো মাইনুল ইসলাম স্বপন ও সম্পাদের দায়িত্ব পান তানোর পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ প্রদীপ সরকার।

সম্পাদকের বিরুদ্ধে তেমন প্রশ্ন না উঠলেও একেবারে অযোগ্য সভাপতি দলের বোঝা হয়ে পড়েছেন বলেও তৃনমুলের অভিমত। কারন তার নিজ এলাকায় তিল পরিমান অবস্থান নেয়। বলা চলে এক প্রকার পুতুল সভাপতি। অবশ্য তিনি ২০১৯ সালে উপনির্বাচনে নৌকা প্রতিকে প্রশ্ন বিদ্ধ ভাবে নির্বাচিত হয়ে ভাগ্য বদল করে ফেলেছেন। এমন জনবিচ্ছিন্ন, কর্মীহীন ব্যক্তিকে সভাপতির মত গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার কারনে জনশূন্য হীন হয়ে পড়েছে দলটি। অপর দিকে সকল ধরনের নিয়োগ বানিজ্যসহ, কে কি দায়িত্বে থাকবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন আবুল বাসার সুজন ও হাতুড়ীর ভাইস চেয়ারম্যান আবু বাক্কার সিদ্দিক।

তানোর পৌর সদরের নেতারা জানান, শামসুদ্দিন মাস্টারের বাড়ির সামনে দ্বিতল ভবন রয়েছে।জায়গাটি স্থানীয়দের সহযোগিতায় হিন্দুপাড়া গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার, বেদখল উচ্চ আদালতে মামলা ধীন জায়গাটি টাকার জোরে কিনে ভবন করেছেন যশপুর গ্রামের হাবিব। তার কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা দিয়ে কিনেছেন আবুল বাসার সুজন। এঘটনায় চরম বিব্রত সদরের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

অবশ্য সুজনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, কাউকে কিছু বলার দরকার নেই, মুক্তিযোদ্ধার ছেলে সম্রাট আমাকে মোবাইল করেছিল। আপনি মামলা ধীন জায়গা কিভাবে কিনলেন জানতে চাইলে পরে কথা বলছি।

এছাড়াও তিনি ও ভাইস চেয়ারম্যান আবু বাক্কার একাধারে নিয়োগ বানিজ্য করছেন। সম্প্রতি চানপুর মাদ্রাসার দুই পদে প্রায় ১৭ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেন। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে রাজশাহী মাদ্রাসায় বসানো হয় নিয়োগ বোর্ড।
একাধিক সিনিয়র নেতারা জানান, অতীতেও নিয়োগ বানিজ্য হয়েছে কিন্তু এত অপেন লেনদেন হয় নি। আর সুজন ও বাক্কারকে এমপি কি এমন পাওয়ার দিল যে তারা বেপরোয়া ভাবে কাজ করছেন এবং ফেসবুকে প্রতিনিয়তই তাদেরকে নিয়ে লিখালেখি হচ্ছে। শুধু তাই না যারা লিখছেন তাদেরকে দেওয়া হচ্ছে নানা ধরনের হুমকি ধামকি।

সদরের বেশকিছু ব্যক্তিরা জানান, সুজনের সব কিছুই ভালো ছিল। কিন্তু সম্মেলনের পর থেকে সুজন নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে তিনি প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা নিশিতের মামলা ধীন জায়গা কিনে চরম সমালোচনার পাত্র হয়েছেন। সেই জায়গা নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান। তারপরও সুজন কেন এই জায়গা কিনবেন। তার উচিত ছিল মুক্তিযোদ্ধার জায়গা না কিনে তাদেরকে সহযোগিতা করা।

এক শিক্ষক জানান, যে প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ হবে সেখানেই বোর্ড বসাতে হবে, তাছাড়া নিয়োগ বৈধ হবে না। অথচ সুজন, বাক্কার ও মাধ্যমিক কর্মকর্তা মিলেমিশে বিভিন্ন জায়গায় গোপনে নিয়োগ দিচ্ছেন। যার কারনে আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতা থেকে শুরু করে তৃনমুলে বইছে তীব্র ক্ষোভ ও ধরেছে ভাঙ্গন।

তৃনমুলের ভাষ্য, দলের দূর্দিনে যেসব ত্যাগী নেতারা যত কর্মসুচী সবকিছু সফল ভাবে পালন করেছেন তাদের আজ দলে কোন মূল্যয়ন নেয়। অথচ আজ সেই নেতাদের বিরুদ্ধে মৌসুমী নেতারা এমপিকে ভুল বুঝিয়ে দলকে ডুবাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। রাব্বানী মামুন দ্বন্দ্ব করেছে প্রকাশ্যে আর এরা দ্বন্দ্ব করছে কাছে থেকে। যা আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রচুর প্রভাব পড়বে। সুজন হাট ব্যবসায়ী তাকে দিয়ে কখনো সংগঠন হবে না। তিনি থাকা মানে দলের সর্বনাশ ডেকে আনা। আর বাক্কারের গায়ে থেকে যায়নি হাতুড়ীর গন্ধ, তাকে বানানো হয়েছে একাধিক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি। সুজনও হয়েছেন অনেক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি।

সবচেয়ে অবাক করার বিষয় কালিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনারুল ইসলামকে বাদ দিয়ে সুজনের একান্ত কর্মচারী রামিল হাসান সুইটকে করেছেন বিদ্যালয়ের মত প্রতিষ্ঠানের সভাপতি । যার কারনে ওই স্কুলের শিক্ষক ও দলীয় নেতারা চরম ক্ষুব্ধ।

ওই এলাকার এক নেতা বলেই দিলেন, সারা জীবন দল করে কোন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে পারলাম না, অথচ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার মত সম্মানিত লোককে অসম্মান করে বাদ দিয়ে সুইটের মত জুনিয়র একজনকে সভাপতি করা হল এর চেয়ে লজ্জার আর কি হতে পারে।

মুক্তিযোদ্ধা পুত্র সম্রাট জানান, জায়গাটি নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান। যার নম্বর সিভিল ডিভিশন ২৯৩৪/২০০৫। যা হাইকোর্টে চলমান। মামলা থাকার পরও সুজন কিভাবে জায়গা কিনল বুঝে আসছে না। তিনি পৌরসভায় আগামীর নেতৃত্ব দিবেন বলে প্রচারিত, আর তিনিই যদি মুক্তিযোদ্ধার জায়গা নিয়ে ছিনিমিনি করেন তাহলে কিভাবে আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব দিবেন। কেউ জায়গা কিনল না আর বহিরাগত সুজন বায়নামা করেছে। এটা অত্যান্ত দু:খ্য জনক। তার কাছে পৌরবাসী এটা আসা করেননি।

চানপুর মাদ্রাসার সুপার বেলাল উদ্দিন জানান, নিয়োগ বোর্ড বসেছিল রাজশাহী মাদ্রাসায়। মাদ্রাসার সভাপতি ভাইস চেয়ারম্যান আবু বাক্কার সবকিছু লেনদেন করেছেন।

মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দিক হোসেন জানান, প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বোর্ড বসাতে হবে এমন কোন আইন নেই, যে কোন জায়গায় নিয়োগ বোর্ড বসানো যায় বলেও দম্ভক্তি প্রকাশ করেন এই কর্মকর্তা।

Please Share This Post in Your Social Media

ads



© All rights reserved © 2024
Developed by- .:: SHUMANBD ::.