নিজস্ব প্রতিনিধি: বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতি রাজশাহী সদরে চলছে ষড়যন্ত্র ও দখলদারত্বের দৌরাত্ম। ক্ষমতার পালা বদলের সাথে সাথে অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতিকে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারে নানা ট্যাগ লাগিয়ে সুবিধাবাদী অসাধু চক্র ইতোমধ্যে দখল করেছেন রাজশাহী সদর দলিল লেখক সমিতি।। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত এ প্রতিষ্ঠানটি সব সময় নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়েই ভোটে নির্বাচিতরা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
রাজশাহী সদর দলিল লেখক সমিতির সাধারণ ভোটে নির্বাচিতদের নানা রকম ট্যাগ লাগিয়ে আ’লীগ পন্থীর একটি অংশ হঠাৎ করেই বিএনপি সেজে ফায়দা হাসিলের চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন। ইতোমধ্যে বুলবুল, শামীম রেজা হিটলার, সুইট, বদরুদ্দোজা বদর গংরা তাঁদের আওতায় নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।।
শামীম রেজা হিটলারের বাবা পুলিশের কনস্টেবল (অবঃ) এবং মাতা সুদ ব্যবসায়ী লেডি মুক্তা নামে পরিচিত। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ৪নং ওয়ার্ডে তার বাড়ি। তিনিও বরাবরই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ আছে।
একটা সময় যেকোন কারণে রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ও ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার আস্থাভাজন এবং রাজশাহী মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বালু ব্যবসায়ী আজিজুল আলম বেন্টুর নিকট থেকে সুবিধা গ্রহণকারী সুইট, বদর গংদের সাথে চলাফেরা শুরু করেন হিটলার।
সর্বশেষ তাকে ২০২৩ সালের ২১শে জুন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নৌকার প্রচারনা মিছিলেও দেখা যায়। (প্রচার ভিডিও সংগৃহীত)
উল্লেখ্য যে, ২০২৩ সালে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আগে পর্যন্ত তাকে বিএনপির কোন মিছিল মিটিং-এ তেমনটা দেখা যায়নি। পরে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিএনপির ১ টি প্রোগ্রামের ফটোশেসানের ১/২ টি ছবিতে তাকে দেখা যায়।
পরবর্তিতে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর/অক্টোবর মাসের দিকে তার মায়ের সুদের ব্যবসার ঝামেলার কারণে অথবা তার পারিবারিক দ্বন্দের কারণে অথবা কারো সাথে ব্যবসায়িক বা টাকা ভাগাভাগির কোন দ্বন্দের কারণে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে জানা যায়, বিএনপির কোন এক মামলায় তাকে চালান দেওয়া হয়।
জুলাই মাসে ছাত্র আন্দোলন শুরু হলেও ৫ই আগষ্টের আগ পর্যন্ত তার কোন প্রকার কার্যক্রম বা তার ব্যবহৃত ফেসবুক আইডিতেও বিএনপির দলীয় কোন প্রকার পোস্ট পরিলক্ষিত হয়নি। কিন্তু ৫ই আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর থেকে তার বিভিন্ন রকম দখলদারি কার্যক্রম শুরু হয়।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলম বেন্টুর সুবিধা গ্রহণকারী সুইট, বদরুদ্দোজা বদর গং ও বহিরাগত কিছু দুষ্কৃতকারী নিয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে রাজশাহী সদর দলিল লেখক সমিতি দখল করেন। এরপরে কয়েকদিন থেকে বিশেষকরে ঈদে মিলাদুন্নবীর দিন থেকে কোর্ট বুলনপুরে ফুরফুরা শরিফের খানকা দখলের প্রয়াসে লিপ্ত রয়েছে এরা।
এসব বিষয়ে কথা বলতে সুইট, বদরুদ্দোজা বদরের নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলে তাঁদেরকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তাই তাঁদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে হিটলার সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন জোরপুর্বক আমাকে নৌকার মিছিলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। আমি বিএনপি করি, আমার ওয়ার্ডের টুটুল ভাই জানে।
একাধিকবার ফোন দিয়েও ফোন রিসিভ করেননি রাজশাহী সদর দলিল লেখক সমিতি’র সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব মহিদুল হক। তাই তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকাতুল্লাহ মলার ফোনে কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে তিনি দ্বায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানান।
একটি ভিডিও সূত্রে জানা যায়, ১৫ আগস্ট দলিল লেখক সমিতির মিটিং হয়। সেই মিটিং এ ১৪৫ জন দলিল লেখকের মধ্যে ৩/৪ জনের সমর্থন পেয়ে বুলবুল, হিটলার, বদর, সুইট গং একটি আহ্বায়ক কমিটি করেন।
মহানগর বিএনপির কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁরা বিএনপি’র কোনো দলীয় পদে নাই। তবে হিটলারের মা লেডি মুক্তা মহিলা দলের নেত্রী। হিটলার যুবদলের কর্মী বলে পরিচয় দিলেও দু একজন ব্যতিত কেউ তেমন চেনে না।