November 24, 2024, 7:58 am

News Headline :
রাজশাহীতে চাঁদাবাজি ও দখলদারত্ব বন্ধে কঠোর হুশিয়ারি যুবদল নেতা রবি’র পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু রাজশাহীতে কোথাও স্থাপনা করতে না পেরে শেষমেস ভাঙারির দোকানে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত আ.লীগ: নাছিম রাজশাহীতে আলু ও তেলের দাম বাড়তি রাজশাহীতে ‘সমন্বয়ক’ সোহেল রানাকে ‘ভুয়া’ বললো মহানগর ছাত্রদল প্রধান উপদেষ্টার সাথে খালেদা জিয়ার মতবিনিময় দেশের সকল ক্ষমতার মালিক হবেন জনগণ: ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজশাহীতে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন দালালের ফাইলে আগে সই করেন রাজশাহী পাসপোর্ট অফিসের ডিডি
রাজশাহীতে দুই ভারতীয় নাগরিকের ভুয়া জন্মসনদ,জমি দখলের অভিযোগ

রাজশাহীতে দুই ভারতীয় নাগরিকের ভুয়া জন্মসনদ,জমি দখলের অভিযোগ

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে টাকায় মিলেছে ভুয়া জন্মসনদ। সম্প্রতি আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর থেকে বের হচ্ছে একের পর এক থলের বিড়াল। তেমনিই রাজশাহীতে ২জন ভারতীয় নাগরিক ৬৫ বছর বয়সে পেয়েছেন বাংলাদেশের পরিচয়পত্র। ভুয়া এনআইডি ও জন্ম নিবন্ধন করে ২৪০ টি পরিবারের জমি জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় এই দুই নাগরিকের বিরুদ্ধে। রাজশাহীর লিলি হল এলাকায় হঠাৎ প্রায় ৪৮ বিঘা জমির মালিক হয়েছেন এই ২ জন ভারতীয় নাগরিক।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতীয় নাগরিক রসিদুল হক চৌধুরী ও ফজলুল হক চৌধুরী এবং এই জালিয়াতি চক্রের মূল হোতা আব্দুল আলীম সরদার। তানোর উপজেলার ভূমিদস্যু ও দালাল হিসেবে পরিচিত এই মোঃ অব্দুল আলীম সরদার। অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের লক্ষ্যে তার সহযোগী মোঃ রফিকুল ইসলাম এর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় মিথ্যা তথ্য উপাত্ত ব্যবহার করে ৪নং সরঞ্জাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে দুইটি অবৈধ জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করে। যাহার নম্বর ফজলুল হক চৌধুরী (১৯৫৯৮১১৯৪৭৭১০১৯২৪) এবং রসিদুল হক চৌধুরী (১৯৫৫৮১১৯৪৭৭১০১৯২৩)। এর পরে তারা পেয়ে যায় বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র।

জানা যায়, বাংলাদেশে জন্ম নিবন্ধন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুত ও প্রদান শুরু হইয়াছে ২০০৫ সালে। সেহেতু রশিদুল হক চৌধুরী (১৯৫৫) বয়স ৬৯ বছর এবং ফজলুল হক চৌধুরী(১৯৫৯) বয়স ৬৫ বছর। তাদের বর্তমান বয়স ৬৯ বছর এবং ৬৫ বছর হওয়া সত্বেও এত বছর যাবৎ জন্ম নিবন্ধন এবং ভোটার নিবন্ধন করেন নাই কেন? তাহলে এতদিন তদের নাগরিকত্ব পরিচয় কি ছিল তারা কোন দেশের নাগরিক ছিলেন ? এসব জানতে অনুসন্ধানে গিয়ে আরোও জানা যায় তাদের আসল পরিচয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, রশিদুল হক চৌধুরী এবং ফজলুল হক চৌধুরী ২ জনই ভারতীয় নাগরিক (ভারতীয় আধার কার্ড সংযুক্ত) RASIDUL HOQUE CHAWDHURY: Adhar Card NO-740042196147, FAZLUL HOQUE CHOWDHURY: Adhar Card NO-383793342751) ভারতীয় আধার কার্ড নম্বর কিউআর কোড স্ক্যান করে তার সত্যতা পাওয়া যায়।

অনুসন্ধানে আরোও জানা যায়, রশিদুল হক চৌধুরী এবং ফজলুল হক চৌধুরী দুই জনই ভারতীয় নগরিক যা (ইন্ডিয়ান নোটারি পাবলিকের) মাধ্যমে তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব ঘোষণা দিয়েছেন। যাহা
বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইনে ভারত ও বাংলাদেশ একই সাথে দ্বৈত নাগরিকত্ব প্রাপ্তির কোন সুযোগ নেই এবং যদি কোন ব্যাক্তি উক্তরুপে কার্য সম্পাদন করে তাহলে তা বাতিল যোগ্য এবং দন্ডনীয় অপরাধ।

অভিযুক্ত দুই ভারতীয় নাগরিক রশিদুল হক চৌধুরী ও ফজলুল হক চৌধুরী তারা কেউই তানোর উপজেলার জামিন সিধাইড় গ্রামে বসবাস করেন না।
তাদের জন্ম নিবন্ধন এর ঠিকানা অনুযায়ী তানোর উপজেলার জামিন সিধাইড় গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

প্রতারিত ভুক্তভোগীরা তাদের জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে অভিযোগ করলে তারা কখনও কেউ স্বশরীরে উপস্থিত বা তাদের কোন সময় দেখতে পাওয়া যায়নি। শুধু দালাল এর মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের লক্ষ্যে তারা ভুয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি সংক্রান্ত সকল মহল কে প্রভাবিত করে কার্য হাসিল করেছেন।

ভূমি দস্যুদের মূল হোতা তানোর উপজেলার,বারঘরিয়া গ্রামের মৃত মকসেদ সরদারের ছেলে আঃ আলিম সরদার ও তার সহযোগী জামিন সিধাইড় গ্রামের মৃত আইয়ুব আলী মাষ্টার এর ছেলে রফিকুল ইসলাম (ভায়রার) সুবাদে প্রতিবেশি মামুন তৎকালীন ৪ নং সরঞ্জাই ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যােক্তা থাকাকালীন দায়িত্বরত মৃত আঃ মালেক চেয়ারম্যান এর অসুস্থতার সুযোগে অবৈধ টাকার বিনিময়ে রফিকুলের কথা মত রফিকুলের বাড়ির ঠিকানা ব্যবহার করে উদ্যােক্তা মামুন ভূমি দস্যু আঃ আলিম সরদার এর ভারতীয় ২ জনের জন্ম নিবন্ধনের ব্যবস্থা করে দেন। আগের চেয়ারম্যানের আমলে অবৈধ জন্ম নিবন্ধন হওয়ার সুবাদে বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ মোজাম্মেল হক খান ভূমি দস্যু আঃ আলিম সরদার অবৈধ টাকার বিনিময়ে সঠিক তদন্ত যেনো না হয় তার জন্য স্থানীয় মেম্বার আঃ মতিন সরকার সহ এলাকার সাধারণ জনগণের উপর বিভিন্ন ভাবে প্রেসার দিচ্ছেন বলে লোকমুখে জানা যায়।

উক্ত বিষয়ে ভুক্তভোগীরা বলেন, তদন্ত কমিটিকে জন্ম নিবন্ধনে ব্যবহৃত জামিন সিধাইড় গ্রামের সরজমিনে তদন্তের অনুরোধ করা হলেও তদন্ত কমিটি গড়িমসি করছেন। তদন্ত কমিটি জানেন জনৈক ভারতীয় ব্যক্তিদ্বয় উক্ত গ্রামে বসবাস করেন না।

এ বিষয়ে ৪নং সরঞ্জাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মোজাম্মেল হক খান জানান, আমি এই ভারতীয় নাগরিককে জন্ম নিবন্ধন দিই নি আগের চেয়ারম্যান মৃত আঃ মালেক দিয়েছেন। আমি যখন জানলাম তারা ভারতীয় নাগরিক আমি আর এই বিষয়ে কাউকে কোন কাগজপত্র দিই নি। তিনি আরোও জানান তদন্ত চলছে তদন্ত শেষে যে আদেশ দিবেন আমি সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নিবো।

এ বিষয়ে জামিন সিধাইড় ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার জনাব মোঃ আব্দুল মতিন সরকার জানান, ভারতীয় ২ জনের জন্ম নিবন্ধন সনদ যে সম্পূর্ণ জালিয়াতি এ বিষয়ে তিনি অবগত রয়েছেন।

এ বিষয়ে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, এ বিষয়টা আমি অবগত আছি তদন্ত কমিটি দেওয়া হয়েছে কয়েকদিনের মধ্যেই তদন্ত রিপোর্ট আপনাদের সবার কাছে উপস্থাপন করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

ads



© All rights reserved © 2024
Developed by- .:: SHUMANBD ::.