নাঈম সিদ্দিক, শাহজাদপুর প্রতিনিধি: গভীর রাতে দোকানে চুরি করতে গিয়ে লক্ষ্মী খাতুন (৮০) নামের এক বৃদ্ধাকে ধর্ষণ, মারধর সহ পৈশাচিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সানি (১৮) নামের এক কিশোর চোরের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে ভুক্তভোগী বৃদ্ধা।
গত ৮ই অক্টোবর রাত আনুমানিক দেড়টায় ঘটনাটি ঘটেছে শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের চক্রবর্তী পাড়ায়। ভুক্তভোগী বৃদ্ধা লক্ষ্মী খাতুন পোতাজিয়ার নিবারণ বাবুর চালা গ্রামের মৃত আব্দুল কাদেরের স্ত্রী। তিনি ও তার মেয়ে ফরিদা খাতুন (৬০) পার্শ্ববর্তী চক্রবর্তী পাড়ায় টং দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করেন। অভিযুক্ত সানি খাতির পাড়া গ্রামের হকার আজাদ আলীর ছেলে, সে ছিচকে চোর ও মাদকাসক্ত হিসেবে এলাকায় পরিচিত।
জানা যায়, লক্ষ্মী খাতুন ও তার মেয়ে ফরিদা খাতুন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দোকানে ব্যাবসা পরিচালনা করে থাকেন। রাতে বৃদ্ধা লক্ষ্মী খাতুন দোকানেই ঘুমান এবং তার মেয়ে ফরিদা বাড়িতে ঘুমান। গভীর রাতে জোর করে দোকানে ঢুকে বৃদ্ধা লক্ষ্মী খাতুনকে পৈশাচিক নির্যাতন ও মারধর করে ধর্ষণ করে সানি।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দিলেও অর্থাভাবে বাড়িতে নিয়ে যায় স্বজনেরা। বৃদ্ধা লক্ষ্মী খাতুনের অবস্থা বর্তমানে আশঙ্কাজনক, তার কোমরে ও পায়ের হাড়ও ভেঙে গেছে।
লক্ষ্মী খাতুনের মেয়ে ফরিদা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, প্রতিদিনের মতো দোকান শেষ করে মাকে শুইয়ে দিয়ে আমি বাড়িতে চলে আসি। গভীর রাতে লোক মারফত জানতে পারি আমাদের দোকানে চুরি হয়েছে। দ্রুত দোকানে গিয়ে দেখতে পাই আমার মা অচেতন অবস্থায় পরে রয়েছে এবং দোকানের মালামাল ও নগদ টাকা চুরি হয়ে গেছে।
মায়ের জ্ঞান ফিরলে তিনি জানান, পার্শ্ববর্তী গাতির পাড়ার আজাদ আলীর ছেলে সানি রাত আনুমানিক দেড়টায় জোর করে দোকানে ঢুকে আমার মায়ের সাথে অনৈতিক কাজ করার চেষ্টা করে। এসময় আমার মা চেঁচামেচি করলে সানি তাকে মারধর করে অচেতন করে ফেলে। ধর্ষণের পর দোকানের সমস্ত মালামাল ও নগদ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। তিনি বলেন এর আগেও সানি আমার মায়ের শ্লীলতাহানি ঘটিয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী স্বপ্না খাতুন (৪৫) বলেন, গভীর রাতে মশার কয়েলের জন্য লক্ষ্মী খাতুনের দোকানে যাওয়ার সময় সানিকে পালিয়ে যেতে দেখি। পরে দোকানে গিয়ে দেখি বৃদ্ধা লক্ষ্মী খাতুন উলঙ্গ ও অচেতন অবস্থায় দোকানের মেঝেতে পড়ে থেকে পানি পানি করছে। পরে প্রতিবেশীর বাড়িতে নিয়ে জ্ঞান ফেরানো হয়। পরে লক্ষ্মী খাতুনের উপর সানির পৈশাচিক নির্যাতনের বর্ণনা দেয়।
এই বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য অভিযুক্ত সানির বাড়িতে গিয়ে পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। এসময় সানির দাদি সাংবাদিকদের বলেন বাইরের কারো কাছে তো আমার নাতি যায়নি। লক্ষ্মী খাতুন তার দাদি হয় তাই গেছে।
শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসলাম আলী বলেন, এতো বৃদ্ধাকে ধর্ষণ করা সম্ভব না। এই ঘটনায় মারধর ও মালামাল লুটের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।