নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ৮ নম্বর কাচারীকোয়ালীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতি, অনিয়ম, ঘুষ গ্রহণ ও দলীয় অবস্থান বদলের মাধ্যমে আত্মরক্ষার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ৮নং কাচারীকোয়ালিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক আওয়ামী লীগের আমলে সতন্ত্র প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর আওয়ামীলীগে যোগদান করেন এরপর থেকে দলীয় প্রভাব দেখিয়ে নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক বরাদ্দ, উন্নয়ন সহায়তা তহবিল, অতিদরিদ্রের কর্মসূচি, ইজিপিপি প্রকল্পের কাজে অনিয়ম দুর্নীতি করে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। এমনকি কাজ না করেও বিল উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি এনামুল হক এর ঘনিষ্ঠ বাগমারা উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল এর বিরুদ্ধে।
গত ৫ আগস্টের পর তিনি এলাকাছাড়া হন এবং বর্তমানে তিনি বিএনপির কিছু নেতার ছত্রছায়ায় প্রভাব বিস্তার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বিএনপি নেতা আব্দুস সোবহান ও আব্দুল গাফফারের নামও এই প্রসঙ্গে আলোচনায় এসেছে।
এছাড়াও আওয়ামীলীগের আমল থেকে দখল হওয়া ইউনিয়নের নাককাটি বিল বর্তমানে বিএনপি নেতা আব্দুল গাফফারের সহযোগিতায় দখল ভোগ করছেন চেয়ারম্যান মোজাম্মেল।
যদিও তাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে ভুক্তভোগীরা মুখ খুলতে শুরু করেছে তার বিরুদ্ধে।
সাম্প্রতিক বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ৮নং কাচারীকোয়ালিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন কাজে অনিয়ম ও দূর্নীতির একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে মাতৃত্বকালীন ভাতা বিতরণে ঘুষ গ্রহণ। ইউপি সদস্যদের বাদ দিয়ে তিনি নিজেই উপকারভোগীদের তালিকা তৈরি করেন এবং প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করে ঘুষ আদায় করেন। একইসঙ্গে জমি সংক্রান্ত একটি সালিশে নিরপেক্ষতা বজায় না রেখে এক পক্ষের কাছ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী বাবুল হোসেন।
আরও অভিযোগ রয়েছে, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দয়ের ঘাট ঈদগাহ মাঠে কাবিটা প্রকল্পের আওতায় কোনো কাজ না করেই বিল উত্তোলন করে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছেন মোজাম্মেল হক। বিষয়টি নিয়ে পিআইও দপ্তর ও ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মোজাম্মেল হক এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং নিজেকে দৈনিক নবচেতনা পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে পরিচয় দেন। তবে পত্রিকার সম্পাদক জানান, রাজশাহী জেলায় মোজাম্মেল হক নামে তার কোনো প্রতিনিধি নেই।
এ বিষয়ে বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম জানান, ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল এর বিরুদ্ধে থানায় কোন মামলা নেই। তার বিরুদ্ধে মামলা হলে অবস্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণের অভিযোগ ক্রমেই বাড়ছে। তদন্ত সাপেক্ষে সত্য উদঘাটন ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না হলে এ ধরনের দুর্নীতির ঘটনা আরও উৎসাহ পাবে বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা।