তানোর প্রতিনিধি
রাজশাহীর তানোরে ভেজাল, মানহীন, মেয়াদ না থাকা নকল কীটনাশক জব্দ করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ। সোমবার দুপুরের দিকে উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়ন( ইউপির) মাদারিপুর বাজারে ঘটে কীটনাশক পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাটি।
এর কয়েকমাস আগে বালাইনাশক ব্যবসায়ী ময়েজের দোকান থেকে কয়েক কার্টুন কীটনাশক পুড়িয়ে দেওয়া হলেও কোন ব্যবস্থা না নেওয়ার কারনেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে বলে মনে করছেন কৃষকরা। ফলে একের পর এক ভেজাল কীটনাশক জব্দ করা হলেও ব্যবসায়ী ময়েজের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ার কারনে ভেজালে ভেজালে সয়লাব হয়ে পড়েছে। ফলে প্রতিটি বালাইনাশক দোকানে কঠোর অভিযানের মাধ্যমে কৃষকদের রক্ষা করার দাবি তুলেছেন। নচেৎ এক ময়েজের দোকানে অভিযান দিয়ে ভেজাল দুর হবে না।
সোমবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, মাদারিপুর থেকে ধানোরা রাস্তার ও মোর পার হয়ে উত্তরে নাকল পুর্বপাড়া গ্রামের ময়েজ উদ্দিন, পাকা ঘরে বালাইনাশকের লাইসেন্স নিয়ে ভেজাল বিষ সার দেদারসে বিক্রি করে আসছেন। এঅবস্থায় তার দোকানে ভেজাল, মেয়াদ না থাকা ও ভুয়া কোম্পানীর কীটনাশক বিক্রি করছেন। এমন অভিযোগ ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কৃষি অফিসার সাইফুল্লার নেতৃত্বে ময়েজের দোকানে অভিযান দিয়ে এজাতীয় কীটনাশক জব্দ করেন। জব্দকৃত কীটনাশক ময়েজের দোকানের পশ্চিমে কৃষি জমিতে পুড়িয়ে দেন। তবে কিছু প্যাকেট পুড়েছে, বিষগুলো ওভাবেই আছে। ওই সময় ময়েজের দোকান বন্ধ ছিল।
উৎসুক কৃষকরা জানান, ময়েজ যতদিন ধরে দোকান করছেন তার সবকিছুই ভেজাল। তিনি নিয়ামতপুর উপজেলার নাকোল গ্রামের বাসিন্দা, সে কিভাবে তানোর কৃষি অফিস থেকে বালাইনাশকের লাইসেন্স পান। মাদারিপুর বাজারের মত জায়গায় অন্তত ১৫-২০ টির মত বালাইনাশকের দোকান। সব দোকানে অভিযান দিলে অবশ্যই ভেজাল বের হবেই। আর ময়েজ কৃষকের সর্বনাশ করলেও তাকে কেন আটক করা হল না। সামান্য একটু মাদক সেবন করলে কত কি হয়ে যায়, আর ময়েজ তো তার চেয়েও ভয়ংকর অপরাধী কেন ছাড় দেওয়া হল এমন প্রশ্ন কৃষকদের। এঘটনার প্রায় চার মাস আগে একই ভাবে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হয়নি।
ওই ওয়ার্ডের মেম্বার ও ময়েজের দোকানের পশ্চিমে দোকান দিয়ে চালসহ নানা ব্যবসা করেন লুৎফর রহমান, তিনি জানান ময়েজ ও আমার দোকানের মাঝে কৃষি জমিতে কীটনাশক পুড়িয়েছে। যার গন্ধ এখনো বের হচ্ছে। ময়েজ দীর্ঘ দিন ধরে ভেজাল বিষের ব্যবসা করেন। একজন ব্যবসায়ী এত বড় অপরাধ করে কিভাবে ছাড় পায় বুঝে আসেনা। এমনকি বিষগুলো নষ্ট হয় নি পশু পাখি খাওয়া মাত্রই মৃত্যু ঘটবে এবং অনেকে বমন পর্যন্ত করেছে। কৃষি দপ্তরের উচিৎ ছিল বিষগুলো গর্ত করে মাটি দিয়ে ঢেকে দেওয়া। আর এত কেন বালাইনাশকের দোকান হবে। প্রতিটি দোকানে অভিযানসহ ময়েজের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এই জনপ্রতিনিধি।
কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহকে ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ না করায় নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হলে তিনি জানান, ঘটনা অজানা কৃষি অফিসারের সাথে কথা বলে জানানো হবে।
পুনরায় কৃষি অফিসারকে ফোন দেওয়া হলে রিসিভ করে জানান, কীটনাশক জব্দ করে ঘটনাস্থলেই পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ব্যবসায়ী ময়েজের দোকান বন্ধ করা হয়েছে। তিনি বালাইনাশকের ব্যবসা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও কঠোর হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে তাকে।