আজ ২৭ সেপ্টেম্বর ‘বিশ্ব পর্যটন দিবস-২০২২’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ ইতিহাস, বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি আমাদের দেশকে পরিণত করেছে একটি বহুমাত্রিক আকর্ষণসমৃদ্ধ অনন্য পর্যটন গন্তব্যে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন, পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রামের অকৃত্রিম সৌন্দর্য, সিলেটের সবুজ অরণ্যসহ আরও অনেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি, বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ঐতিহাসিক এবং প্রত্মতাত্ত্বিক স্থানসমূহ এবং অতিথি পরায়ণ মানুষ শুধু দেশীয় নয়, বিদেশি পর্যটক ও দর্শনার্থীদের কাছেও সমান জনপ্রিয় এবং সমাদৃত।
তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘বিশ্ব পর্যটন দিবস-২০২২’ যথাযথভাবে উদযাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। জাতিসংঘ বিশ্ব পর্যটন সংস্থা কর্তৃক নির্ধারিত এবারের প্রতিপাদ্য ‘পর্যটনে নতুন ভাবনা’ কোভিড-১৯ পরবর্তী বিশ্বের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে ক্ষেত্রে অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।
শেখ হাসিনা বলেন, পর্যটন শিল্প বিশ্বে একটি অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক ও শ্রমঘন খাত। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য পর্যটন একটি কার্যকর উন্নয়ন কৌশল হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। বিশ্বব্যাপী করোনা অতিমারির কারণে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে পর্যটন শিল্প ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে করোনা অতিমারির সংকট কাটিয়ে পর্যটন শিল্পে নতুন উদ্যোগ ও ভাবনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার করতে শুরু করেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।
তিনি বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মহান স্বাধীনতার পর পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। তিনি অনুধাবন করেছিলেন যে, পর্যটন শিল্পের পরিকল্পিত বিকাশের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার পাশাপাশি সারাবিশ্বে বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা, সংস্কৃতি, পুরাকীর্তি ও প্রত্মতত্ত্ব, ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যময় জীবনধারা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সফলভাবে তুলে ধরা সম্ভব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পর্যটনের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনুধাবন করেই জাতির পিতা দেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় পর্যটনকে গুরুত্ব দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করেন এবং ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি কক্সবাজার ও কুয়াকাটাকে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করার জন্য নানামুখী পরিকল্পনা নিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের পাশাপাশি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন পর্যটন সুবিধাদি সৃষ্টিতে নানা কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। স্থানীয় কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও মূল্যবোধকে সমুন্নত রেখে পর্যটনের উন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে পর্যটন সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন, সম্মিলিতভাবে পর্যটনের উন্নয়ন ও বিকাশে কাজ করে বিশ্ব দরবারে দেশের পর্যটন শিল্পকে কার্যকরভাবে তুলে ধরার মাধ্যমে জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি।
তিনি ‘বিশ্ব পর্যটন দিবস-২০২২’ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।সূত্র: বাসস