তানোর প্রতিনিধি
তানোর পৌরসভায় টিবওয়েল মিস্ত্রী হিসেকে চাকুরী জীবন শুরু, ধীরে ধীরে নিজের বলায় তৈরি করে তকমা লাগিয়ে অফিস সহায়ক, কিন্তু সেই টিবওয়েল মিস্ত্রী হয়ে গেছেন রাজশাহীর তানোর পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে সকল ধরনের বাড়ির প্ল্যান তৈরি করে দেন।
বলছিলাম তানোর পৌর সদর তানোর মুন্নাপাড়া গ্রামের ওমর আলীর কথা। তিনি বিগত ১৯৯৯ সালের প্রথম নির্বাচনের পর টিবওয়েল মিস্ত্রি হিসেবে চাকুরী পান । তিনি মুন্নাপাড়া গ্রামের মৃত দিদার মন্ডলের ছেলে। যদিও পারিবারিক ভাবে তেমন অবস্থা ছিল না, কিন্তু পৌরসভায় চাকুরীর সুবাদে বিধাতা ওমরের দিকে নজর দিয়েছেন। তিনি এখন এক প্রকার টাকা ওয়ালা। হয়েছেন সমাজের বিত্তবান। ওমরের এমন একক ক্ষমতার কারনে অন্য কর্মকর্তা কর্মচারীরা চরম বিব্রত।
এখানেই শেষ না, ইমরাত আইন লংঘন করে খাস ভিপি ও পুকুর ভরাটকৃত জায়গায় টাকার বিনিময়ে পাকা বাড়ি নির্মানের প্ল্যান তৈরি করে দেন তিনি। আর তার প্ল্যানে স্বাক্ষর করেন মেয়র ও অফিস না করা ভিআইপি সহকারী প্রকৌশলী সরদার জাহাঙ্গীর। এতে করে ওমরের দ্রুত বদলিসহ তার সম্পদের তদন্তের দাবি তুলেছেন পৌরবাসী।
জানা গেছে, তানোর পৌরসভাটি প্রতিষ্ঠিত ১৯৯৫ সালে বিএনপি সরকারের সময়। এরপর ১৯৯৯ সালে প্রথম নির্বাচন হয়। নির্বাচনে ওই সময়ের জনপ্রিয় ব্যক্তি প্রয়াত এমরান আলী মোল্লা মেয়র নির্বাচিত হন। ওই সময় তানোর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তানোর মুন্নাপাড়া গ্রামের মৃত দিদার মন্ডলের পুত্র ওমর আলী টিবওয়েল মিস্ত্রির চাকুরী পান। এরপর থেকে তাকে আর পিছনে ফিরে দেখতে হয়নি। পরে তার প্রমোশন হয়। তিনি এখন নাকি অফিস সহায়ক।
পৌরসভার বেশ কিছু কর্মকর্তারা জানান, ওমর এমন ভাবে মেয়র ও সহকারী প্রকৌশলীকে পকেট বন্ধি করেছেন তাকে ছাড়া কিছুই বুঝেনা। একজন টিবওয়েল মিস্ত্রি হয়ে তিনি খাস ভিপি, পুকুর ভরাটসহ টাকার বিনিময়ে বাড়ির প্ল্যান তৈরি করেন। তিনি যে প্ল্যান তৈরি করেন সেটাতে স্বাক্ষর করেন মেয়র ও অফিস না করা সহকারী প্রকৌশলী।
তারা আরো জানান, ওমর ও তার ভায়েরা রাজমিস্ত্রির কাজ করত। হয় তো বা এবিষয়ে তার অভিজ্ঞতা বেশি। তাহলে তাকেই প্রকৌশলীর পদ দেওয়া ভালো ছিল। ওমর কত টাকার মালিক হয়েছেন নিজেও জানেন কিনা সন্দেহ। কারন যে মেয়র আসুক তাকে কিভাবে পকেটে নিতে হবে সেটা ভালো করে জানেন।
ওমর আলীর সাথে মোবাইলে কথা বলা হলে, তিনি জানান আমি প্ল্যান করলেও ডিজাইন করে দেন কর্মকর্তারা। আপনি টিবওয়েল মিস্ত্রি হয়ে কিভাবে প্ল্যান করেন প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন আমার প্রমোশন হয়েছে আমি এখন অফিস সহায়ক। কিভাবে প্রমোশন হলো জানতে চাইলে তিনি জানান অফিস নিয়মেই হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে তানোর পৌরসভায় গিয়ে দেখা যায়, মেয়র নাই, সহকারী প্রকৌশলী নাই, দায়িত্বে ছিলেন প্যানেল মেয়র আরব আলী তিনি জানান, নামে দায়িত্বে, মেয়র ঢাকায়। ওমর বাড়ির প্ল্যান করতে পারে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, তিনি পারেন না, এটা প্রকৌশলীর কাজ, কি বলব, মাস্টার রোলে কয়জন বেতন পায় প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন এটা মেয়র বলতে পারবেন।
রুমেই ছিলেন এক সময়ের টিবওয়েল মিস্ত্রি বর্তমানে অফিস সহায়ক ওমর আলীর কাছে ভিডিও বক্তব্য চাইলে তিনি কোন কথা বলবেন না বলে সাব জানিয়ে দেন।
তবে হিসাব রক্ষক আব্দুস সবুর জানান, মাস্টার রোলে ১০ জনকে বেতন দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি কারো নাম বলেন নি।
মেয়র ইমরুল হককে ফোন দিয়ে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান পাগল হয়ে গেছিস, এজন্য ভুলভাল কথা বলছিস।
দুপুরের পরে তাকে পুনরায় ফোন দিয়ে জানতে চাওয়া হয় পাগল কাকে বলে, আপনি কি পাশ। আসলে তিনি নিজের অনিয়ম দূর্নীতি ঢাকতে আবল তাবল কথাবার্তা বলছেন।
মেয়র ইমরুলের বাড়ি তালন্দ হরিদেবপুর গ্রামে। ওই গ্রামের পাগল হরিবন্ধুর জমি নিয়েছে ইমরুলেরা বলে দীর্ঘ দিন থেকে প্রচার রয়েছে।