স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে মহানগর ডিবি পুলিশের এস আই হুমায়ন কবিরের ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে রক্ষা পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী গাফফার(৫০)ও তার পরিবার।
শনিবার (৪ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নগরীর একটি প্রেস ক্লাবে উক্ত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।উক্ত সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী গাফফার আপনি ও তার পরিবার জানান,
নগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন খরবোনা নদীরধার এলাকায় আমার বাড়ি।কেঁদুরমোর শহররক্ষা বাধের উপর আমার একটি ভাংড়ি মালামাল কেনাবেচার দোকান রয়েছে।এই দোকান থেকে ভাংড়ি মালামাল কেনাবেচা করে কোনরকম ডাল ভাত খেয়ে জীবিকা নির্বাহ করি।হঠাৎ গত ১৩ই সেপ্টেম্বর বিকেলে ডিবির এস আই হুমায়ুন কবিরসহ সঙ্গীও ফোর্স আমার বাড়িতে আসে। অসুস্থতার কারণে আমি বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলাম।কোন কথা ছাড়াই আমাকে বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে চলে যাই ডিবি অফিসে।ডিবি অফিসে নিয়ে আমার ২ হাত উপরের দিকে বেঁধে আমাকে ঝুলিয়ে রাখে।বলে চোরায় সাইকেল কিনেছিস কোথায় রেখেছিস বের করে দে।আমি বলি চোরায় সাইকেল আমি কিনিনি,কোথায় থেকে বের করে দিব।তাছাড়া আমি কোন চোরাই মালামাল কেনাবেচা করি না।এসময় রাগান্বিত হয়ে ডিবির এসআই হুমায়ুন কবির বলেন,চোরায় সাইকেল কিনেছিস স্বীকার কর তা না হলে এভাবে ঝুলিয়ে রাখবো, মাদক মামলা দেবো,বিস্ফোরক মামলা দেবো, সারা জীবন জেল খাটবি।তোর ছেলেদেরকেও বিস্ফোরক মামলায় নাম ঢুকিয়ে দেবো। পরের দিন ১৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে আমাকে আদালতে প্রেরণ করে কিন্তু এর আগ পর্যন্ত আমাকে দু হাত বেঁধে ডিবি অফিসে ঝুলিয়ে রাখে কিছুই খেতে দেয়নি, বারবার পানি খেতে চেয়েছি পানিও খেতে দেয়নি, আমি অসুস্থ মানুষ আমার আম্মা ওষুধ দিয়ে এসেছিল আমাকে ওষুধ ও খেতে দেয়নি।
প্রসঙ্গত:কিছুদিন আগে ডিবির এস আই হুমায়ুন কবির আমার ভাংড়ির দোকানে এসেছিল এবং আমাকে প্রতিমাসে ৭ হাজার টাকা মিট দিতে বলে।আমি মিট দিতে অস্বীকার করলে নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয় আমার বিরুদ্ধে। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে চোরাই সাইকেল কেনার মিথ্যা মামলায় আমাকে ধরে নিয়ে যায় ডিবি অফিসে। আমাকে বলে তুই তো ২ নাম্বার আসামি ৫০হাজার টাকা দিলেই তোকে ছেড়ে দেবো।আমি গরিব মানুষ কোথায় থেকে এত টাকা দেব।টাকা দিতে না পারায় ডিবির এস আই হুমায়ুন কবির আমাকে মিথ্যা মামলায় নাম দিয়ে আদালতে প্রেরণ করে এবং একদিনের রিমান্ড নিয়ে আমাকে উপরের দিকে দুই হাত বেঁধে ঝুলিয়ে অমানবিক টর্চারিং করে। দুইদিন আমাকে এভাবেই দুই হাত বেঁধে ঝুলিয়ে রেখেছিল কিছুই খেতে দেয়নি। আমি জামিনে বের হয়ে এখনো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দিচ্ছে যেকোনো সময় বিস্ফোরক ও মাদক মামলা দিয়ে তুলে নিয়ে যাবে।ডিবি অফিসে আমার প্রতি অমানবিক নির্যাতনের কথা প্রকাশ করলে আমাকে সহ আমার ছেলেকেও তুলে নিয়ে বিস্ফোরক ও মাদক মামলা দিবে বলে হুমকি দিচ্ছে ডিবির এসআই হুমায়ুন কবির।গত১৩ সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত আমার দোকান খুলতে দেয়নি ডিবির এস আই হুমায়ুন কবির।আমাকে বলছে তুই কোনদিন ওই দোকান খুলবি না,যদি দোকান খুলিস তাহলে আবার ধরে নিয়ে যাব।আমি গরিব মানুষ দোকান খুলতে না পারলে আমার সংসার কিভাবে চলবে, আমরা কি খেয়ে বেঁচে থাকবো। আমি ও আমার পরিবারকে নিয়ে চরম নিরাপত্তাহিনতায় ভুগছি। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তাই আপনাদের মাধ্যমে আমার প্রতি হওয়া অন্যায়ের বিচার চাই ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে এই দুর্নীতিবাজ সাধারণ জনগণের রক্তচোষা ডিবির এসআই হুমায়ুন কবিরের অপসারণ চাই।বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে অনেক সাধারন মানুষ নির্যাতনের শিকার হয়েছে হুমায়ুন কবিরের মত অসৎ ও দুর্নীতিবাজ অফিসারের কারণে।জুলাই গণঅভ্যুত্থান হয়েছে কিন্তু স্বৈরাচারের দোসর এখনো রয়ে গেছে। আমি আরএমপি পুলিশ কমিশনার মহোদয়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টা বরাবর আবেদন জানাচ্ছি আমাকে এই অন্যায় ভাবে মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি দেবার জন্য,একই সাথে আমার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।সেই সাথে দুর্নীতিবাজ ডিবির এস আই হুমায়ুন কবিরের অপসারণের দাবী জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে মহানগর ডিবির এস আই হুমায়ন কবিরের মুঠোফোনে ফোন দেয়া হলে তিনি বলেন,আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ছরানো হচ্ছে।আমি রাজশাহীতে নতুন এসেছি, এর আগে আমি পিবিআই এ ছিলাম।আমার কাজে বাধাগ্রস্থ করার জন্য কোন তৃতীয় পক্ষ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে আরএমপি মিডিয়া মুখপাত্র গাজিউর
রহমানের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, এ বিষয় আমার জানা নাই, আমাকে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি,যদি কোন পুলিশ সদস্য কোন ব্যক্তির নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে থাকে তাহলে তদন্ত-সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।