রাজশাহী: রাজশাহীতে সাংবাদিক রাজীব আলীকে মাদক মামলায় ফাঁসানো, বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া এবং ‘ক্রসফায়ারের’ ভয় দেখিয়ে মুক্তিপণ বাবদ ৫ লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বহিষ্কৃত ডিবি এসআই মাহবুব হাসানের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর রাজশাহী মহানগর ডিবি পুলিশের এসআই মাহবুব হাসানের নেতৃত্বে একটি দল সাংবাদিক রাজীব আলীর বাসায় অভিযান চালায়। পরে তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়, মামলা নং ৮৫/১১০৮ (২৩ অক্টোবর ২০১৯)।
তবে মামলার এজাহার ও ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজে ব্যাপক অসঙ্গতি ধরা পড়েছে।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশ সদস্যরা নিজেরাই ফেন্সিডিলের বোতল বের করছেন, অথচ এজাহারে ফেন্সিডিলের কোনো উল্লেখ নেই।
রাজীব আলীর পরিবারের দাবি, কনস্টেবল মিল্টন দরজা ভেঙে প্রথমে বাসায় প্রবেশ করে। পরে এসআই মাহবুব হাসান, কনস্টেবল শুভঙ্কর ও সুব্রত যোগসাজশে রাজীবকে ফাঁসিয়ে দেয়।
পরিবারের অভিযোগ, রাজীব আলীকে থানায় না নিয়ে গোপন স্থানে রাখা হয় এবং ‘ক্রসফায়ারের’ ভয় দেখিয়ে তার বাবার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা আদায় করা হয়। টাকা নেওয়ার পর রাজীবের বিরুদ্ধে মাদক মামলা দেওয়া হয়।
তৎকালীন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মতিন বলেন, হাসান আমাকে যেভাবে বলেছে, আমি সেভাবেই কাজ করেছি। কোনো ভিডিও ফুটেজ আমি দেখিনি। কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা সাক্ষী ছিল, তাদের কথামতো রিপোর্ট দিয়েছি।
টাকা দিলে মামলা হালকা করে দেওয়ার কথা বলে মোটা অংকের টাকা নেন ভুক্তভোগীর বাবার কাছ থেকে এবং মামলা হালাকা না করে চার্জশিট দাখিল করে, মামলার ভিডিও ফুটেজের সাথে মামলার এজাহারের কোন মিল নেই।
ঘটনার পাঁচ বছর পর, ২০২৪ সালের ২১ আগস্ট রাজীবের বাবা মো. মাসুদ রানা সরকার নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি চাঁদাবাজি ও অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২৪/৩৫৬ । এতে সাবেক ডিবি পরিদর্শক হাসানসহ অজ্ঞাতনামা পাঁচজনকে আসামি করা হয়। এই মামলায় হাসানকে বহিষ্কার ও পরবর্তীতে গ্রেফতার করা হয়।
এ বিষয়ে সাংবাদিক রাজীব আলী বলেন, ডিবির বহিষ্কৃত এসআই মাহবুব হাসান একাধিক নিরীহ ব্যাক্তি কে অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করে মিথ্যা মাদক মামলা দিয়ে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছে। আমি তার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। আমার পরিবার বিএনপির সাথে যুক্ত থাকায় আমাকে ফাঁসানো হয়েছিলো।
মামলার বাদী সাংবাদিক রাজীব আলীর বাবা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ মাসুদ রানা সরকার বলেন ঘটনায় সময় ডিবি হাসান একা ছিলোনা সাথে ছিলো ডিবির পুরো টিম যারা হাসানের সাথে সমান অপরাধী তাই হাসানের সাথেও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রনি জানান, মামলার তদন্ত প্রায় শেষের পর্যায়ে। এই মাসের মধ্যেই চার্জশিট দিয়ে দিবে।