নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহী মহানগরীতে অবস্থিত ৬টি আবাসিক হোটেলগুলোতে চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা। র্যাব, পুলিশ, ডিবি অভিযান পরিচালনা করলেও থামছে না এই দেহ ব্যবসা। এসব আবাসিক হোটেলে দেহ ব্যবসার পাশাপাশি চলে মাদক সেবন। এতে অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে দিনি দিন।
শহরের প্রাণ কেন্দ্রের সাহেব বাজার এলাকার ৫ টি আবাসিক হোটেলে চলছে এই অবৈধ দেহ ব্যবসা। হোটেলগুলো হলো, গণপাড়া এলাকার হোটেল আশ্রয়, মুরগী পট্টি এলাকায় হোটেল সুরমা, মালোপাড়া স্বর্ণপট্টি এলাকার হোটেল ওয়েলকাম, ভুবন মোহন পার্ক সংলগ্ন হোটেল পদ্মা, লক্ষীপুর জিপিও সংলগ্ন বনলতা। এই সকল আবাসিক হোটেলের মূল হোতা মাইনুল, সোহেল, আফজাল ও আজাদ।
আবাসিক হোটেল নামে পরিচিতি থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে হোটেল ব্যবসার আড়ালে চলছে অনৈতিক কার্যকাপাল। আর এই হোটেলগুলোতে উঠতি বয়সী ছেলে-মেয়েদের আনাগোনাই বেশি। বিশেষ করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। দীর্ঘদিন ধরে হোটেলগুলোতে এই ব্যবসা চলার বিষয়টি স্বীকারও করেছেন হোটেলগুলোর ম্যানেজাররা। অনেক কিছুই ম্যানেজ করে এ কাজ করা হয় বলে জানান তারা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকজন দালাল। যারা কাস্টমার নিয়ে হোটেলে নিয়ে যান। দ্বিতীয় ধাপে চলে কাস্টমারের পছন্দের নারী বাছাই পর্ব। কয়েকটি রুমে রয়েছে একাধিক নারী। পছন্দ হলে চলে দরকষাকষি। একই সাথে বিভিন্নভাবে অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে আকৃষ্ট করার চেষ্টাও করছে উঠতি বয়সের মেয়েরা। কৌশলে পরিচয় জানতে চাইলে নিজেকে কলেজের ছাত্রী বলে জানায় একজন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব অবৈধ দেহ ব্যবসায় জড়িতরা বিভিন্ন স্কুল কলেজের মেয়ে। এদের নেটওয়ার্ক আছে বড় ধরনের । বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন এলাকায় পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে এই অবৈধ ব্যবসা করেন তারা।
সরেজমিন পরিদর্শনকালে হোটেল কর্তৃপক্ষ এবং পতিতাদের এই অবৈধ কর্মকাণ্ড প্রতিবেদকের চোখে পড়ে। আবাসিক হোটেলের নামে দিনের পর দিন চলছে এই রমরমা দেহ ব্যবসা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আবাসিক হোটেলে কর্মরত এক ব্যক্তি জানান, আমি এখানে চাকরি করি। হোটেলের মালিক পক্ষ বিভিন্ন বয়সের নারীদের নিয়ে এসে পতিতাবৃত্তি চালিয়ে আসছেন। এই হোটেলে যে কোনো সময়ে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন ধরনের নারীর দেখা মিলবে বলে জানান তিনি।
আবাসিক হোটেলের নামে এই অবৈধ পতিতালয়ের ব্যবসার বিষয়ে আবাসিক হোটেলের ম্যানেজাররা জানান, আমরা কয়েকজন লোকাল মেয়েকে নিয়ে এ ব্যবসা করি এ কথা সত্য। তবে বোয়ালিয়া ওসি কে বিশেষ করে সব হোটেল মেনটেন করে অনেক অর্থ প্রদান করা হয়। তিনি আরো বলেন প্রশাসনের অনেক কিছুই ম্যানেজ করে এ কাজ করি। এই নিউজ না করার জন্য প্রতিবেদককে অনুরোধ করেন তারা।
আরো খোঁজ নিয়ে জানা যায় ওসি বোয়ালিয়া নিজেই ডিলকরে থাকেন।হোটেল বিষয়ে রেট ও অভিযান হওয়ার আগেই ওসি নিজেই জানিয়ে দেন হোটেলের মূল হোতাদের। বিভিন্ন প্রশাসন ডিপার্টমেন্ট হোটেল অভিযান পরিচালনা করলেও বোয়ালিয়া থানা এলাকায় হওয়ার পরেও কখনো দেখা যায়নি হোটেল অভিযানে কোন পদক্ষেপ।
বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম’র সাথে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, র্যাব-৫ সদস্যরাসহ পুলিশ, ডিবি প্রতিনিয়ত আবাসিক হোটেলগুলোতে অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। তবুও আড়ালে হোটেলগুলোতে চলছে দেহ ব্যবসা।