নাজমুল আরেফিন, নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কে জি এম শাহরিয়ারেরর জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় বিশ্ববিদ্যালয়েরর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
এর আগে সকাল ৮টার দিকে পরিবারের কাছে শাহরিয়ারের মরদেহ হস্তান্তর করে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে। সকাল ৯টায় জানাজা শেষে শাহরিয়ারের বাড়ির উদ্দেশে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স রওনা হয়েছে। সঙ্গে শাহরিয়ারের সহপাঠীরা দুই বাসযোগে যাচ্ছেন।
পরিবারের পক্ষ থেকে শাহরিয়ারের দুই ভাই আসেন। তাঁরা ভোররাতে রাজশাহীতে পৌঁছান। জানাজায় বড়ভাই শাকিল বলেন, তাঁরা মর্মামহত ভাইকে হারিয়ে। তিনি যখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেন, তখন শাহরিয়ার এখানে ভর্তি হন। গ্রামের বাড়িতে তাঁর জানাজা হবে বাদ আসর।
জানাজা শেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, তাঁরা এ ঘটনায় মর্মাহত। তাঁদের একজন সন্তানতুল্য শিক্ষার্থী চলে গেলেন। এ ঘটনা ঘটার পর প্রথম কাজ হিসেবে তাঁকে মেডিকেলে নেওয়া হয়েছে। সেখানে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। সে ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি করেছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও আলাদা কমিটি হবে।
এর আগে গতকাল বুধবার রাত ৮টার দিকে মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কে জি এম শাহরিয়ার হলের তৃতীয়তলার বারান্দা থেকে পড়ে যান। হবিবুর রহমান হলেন ৩৫৪ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি। দ্রুত তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে আনা হলে জরুরি বিভাগে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে হাসপাতালে ভাঙচুর চালান শিক্ষার্থীরা।
হাসপাতালের সামনে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল , সহপাঠী চিকিৎসায় অবহেলায় মারা যাওয়ায় তাঁরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। ওই সময় হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক ও আনসার সদস্যরা তাঁদের মারধর করেন। একপর্যায়ে তাঁরা হাসপাতালের গাছের টপ ভাঙেন। এ ঘটনায় পরে মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরে পুলিশ গিয়ে হাসপাতালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। রাত পৌনে ১১টার দিকে রাবি শিক্ষার্থীরা বের হয়ে আসেন।
শাহরিয়ারকে সঠিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি অভিযোগ করে হাসপাতালে আসা শিক্ষার্থীদের কয়েকজন বলেন, তাঁরা শাহরিয়ারকে জরুরিভাবে আইসিউতে নিতে বলেন। কিন্তু হাসপাতালে জরুরি বিভাগে থাকা ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা বলেন, চিকিৎসকের রেফারেন্স লাগবে। পরে ওই শিক্ষার্থী সেখানেই মারা যান।
এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তপক্ষ রাতে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন প্রতিনিধি রয়েছেন। তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।