তিনি জনপ্রিয় উপস্থাপিকা। নাম তার ইসরাত পায়েল। ইতোমধ্যেই উপস্থাপনা করে বেশ জনপ্রিয়তা তৈরি করেছেন। এটা তার ভালো দিক। তবে মিডিয়ায় আলোচনা থেকে সমালোচনাই হয়েছে বেশি তাকে নিয়ে। তা তো হবারই কথা। বছর কয়েক আগে একটি অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা নিয়ে বেশ হইচই পড়ে গিয়েছিল তাকে নিয়ে। কারণ, তাকে নাকি কুপ্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। আর এটা নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছিলেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে। কিন্তু এবার ফের সমালোচনায় তিনি।
বলা চলে সবসময় নেতিবাচক আলোচনা-সমালোচনায় থাকতে পছন্দ করেন তিনি। আর তারই ধারাবাহিকতায় সদ্য আলোচনায় এলেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা মীর সাব্বিরের নাম উচ্চারণ করে। বিতর্কিত এই উপস্থাপিকার অভিযোগ, মীর সাব্বির তাকে বুলিং করেছেন।
বিবাহিত নারীদের নিয়ে আয়োজিত বিউটি কনটেস্ট ‘মিসেস ইউনিভার্স বাংলাদেশ’-এর গ্র্যান্ড ফিনালেতে উপস্থাপিকা ইশরাত পায়েল অভিনেতা মীর সাব্বিরকে মঞ্চে ডাকেন। মঞ্চে দাঁড়িয়ে মীর সাব্বির জানান, তিনি প্রথম কোনো সুন্দরী প্রতিযোগিতার বিচারক হয়েছেন। উপস্থাপিকার কাছে জানতে চান, জীবনানন্দ দাশের বাড়ি কোথায়? ইশরাত পায়েল বলেন, নির্দিষ্ট করে জানি না। তবে এতটুকু জানি বরিশাল। তখন মীর সাব্বির তাকে ধন্যবাদ দেন।
তখন ইশরাত পায়েল বলেন, আপনার বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় নাটক খুবই জনপ্রিয়। ওই ভাষায় দুটি লাইনে ডায়ালগ শুনতে চাই! মীর সাব্বির বলেন, ওতটা মনে রাখতে পারি না। উপস্থাপিকার অনুরোধে তাৎক্ষণিক তার দিকে তাকিয়ে বরিশালের মীর সাব্বির বলেন, এই মাতারি তুমি এমন উদলা হইয়া দাঁড়ায়ে আছো কিল্লেইজ্ঞা? শুনে সঙ্গে সঙ্গে হেসে দেন উপস্থাপিকাসহ অতিথিরা।
তখন বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নিলেও পরে এটি নিয়ে সরব হন ওই উপস্থাপিকা। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মীর সাব্বিরকে নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন পায়েল। কিন্তু মীর সাব্বির বলছেন, এটি শ্রেফ বরিশালের আঞ্চলিক ভাষা, আপত্তিকর নয়। আর সাব্বিরের পক্ষে বেশ জোড়ালো অভিযোগ তুলেছেন সিনিয়ার অভিনয়শিল্পীরা। কারণ, এটা কীভাবে বুলিং হয় সেটাই তাদের বোধগম্য হচ্ছে না।
অন্যদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন উঠেছে কে এই ইশরাত পায়েল? খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পায়েল মাধ্যমিক পাস করেছেন টাঙ্গাইলের বিন্দুবাসিনী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে। উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন শাহিন কলেজ টাঙ্গাইল থেকে। পরে হোটেল ম্যানেজমেন্টের ওপর ডিপ্লোমা করেছেন এশিয়া ইনস্টিটিউট অব সিঙ্গাপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ২০১৫ সালে তিনি ‘মিস হেরিটেজ’ নির্বাচিত হন। তার পর থেকে মডেলিং ও উপস্থাপনা করছেন।
আরও জানা যায়, খোলামেলা উপস্থাপিকা হিসেবে বেশ আগে থেকেই পরিচিত ইশরাত পায়েল। বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খোলামেলা পোশাক পরিহিত ছবি শেয়ার করে ফুরফুরে মেজাজে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে তাকে।
২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি প্রেমিকের তোলা মার্কিন মুলুকের মহাসমুদ্রের বাহামা দীপপুঞ্জে কয়েকটি বিকিনি পরিহিত ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন পায়েল। সে সময় ছবিগুলো ঘিরে নানা আলোচনা, সমালোচনা ও বিতর্ক হয়।
ওই সময় পায়েলের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে প্রেম-বিয়ের খবরও রটে। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ব্যবসায়ী আজান খানের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্কের কথা জানা যায়। গুঞ্জন রয়েছে, ইতোমধ্যে আংটিও বদল করেছেন তারা। অনেক দিন ধরেই এই ব্যবসায়ীর সঙ্গে তার প্রেম রয়েছে। বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে বেশ কিছু ঘনিষ্ঠ ছবিও তোলেন, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। বিয়ের কথাও শোনা যায়। যদিও প্রেমের বিষয়টি অবশ্য স্বীকার করেছিলেন পায়েল। জানিয়েছিলেন, বিয়ে করতে চলেছেন তারা। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের বিয়ে হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।
মীর সাব্বিরকে কেন্দ্র করে ইশরাত পায়েলের আলোচনা নিয়ে নেটিজেনরা অনেকেই বলছেন, মূলত এই উপস্থাপিকা আলোচনায় থাকার জন্য বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা করছেন। কারণ শুরু থেকেই ইশরাত পায়েল বিতর্কিত। এ সময় অনেকেই তার সমালোচনা করেন।
প্রসঙ্গত, উপস্থাপিকার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার (১৬ নভেম্বর) নিজের সেই মন্তব্যের বিষয়টি স্পষ্ট করেন মীর সাব্বির। তার ভাষ্য, ‘এক দেশের গালি, আরেক দেশের বুলি।’ এ কথা বলার পেছনে অভিনেতার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। উপস্থাপিকা তার শব্দের মানে বুঝতে পারেননি।