যারা বোকা তারা দুপুরের পর কলেজ চালাবে। তারাতো দেশের অবস্থা বুঝবেনা, আমি প্রবীন ব্যক্তি বলেই সব কিছু জানি। এসময় কখনো দুপুরের পরে কলেজ চলে না। শুধু আইন নিয়ম বেধে দিলে হয় না, বাস্তবতাটাও সঠিক ভাবে বুঝতে হবে: অধ্যক্ষ
তানোর প্রতিনিধি
দেশে নাকি প্রচুর বিদ্যুৎ ঘাটতি, এজন্য সরকার বেকায়দায় আছে,যার কারনে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কলেজ বলে দম্ভক্তি প্রকাশ করেন রাজশাহীর তানোর উপজেলার কৃষ্ণপুর আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আলহাজ আতাউর রহমান। তিনি আরো জানান, যারা বোকা তারা দুপুরের পর কলেজ চালাবে। তারাতো দেশের অবস্থা বুঝবেনা, আমি প্রবীন ব্যক্তি বলেই সব কিছু জানি। এসময় কখনো দুপুরের পরে কলেজ চলে না। শুধু আইন নিয়ম বেধে দিলে হয় না, বাস্তবতাটা সঠিক ভাবে বুঝতে হবে।
কলেজের সময় বিকেল চারটা পর্যন্ত আপনি দুপুর একটার সময় বন্ধ করে পতাকাটাও নামিয়ে ফেলেছেন জানতে চাইলে তিনি জানান কলেজ বন্ধ হলে পতাকা কেন থাকবে, তোমাদের যত খুশি লিখতে পার, আমার কলেজের সুনাম নষ্ট হবে না।
মঙ্গলবার দুপুর একটার সময় কলেজ বন্ধ করে পতাকা নামানো হলেও কোন শিক্ষার্থী ছিল না। ফলে কলেজের এমন অবস্থায় অভিভাবক মহল চরম ক্ষুব্ধ। এতে করে কলেজটির পাঠদানও ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার কৃষ্ণপুর মোড়ে কলেজের শিক্ষার্থীদের দেখে জানতে চাওয়া হয় ছুটি না টিফিন তারা জানান ছুটি, প্রতিদিন এসময় ছুটি দেওয়া হয়। মোড় থেকে দক্ষিণে মহিলা কলেজ, সেখানে গিয়ে দেখা যায় মুল গেট খোলা, ভিতরে গিয়ে সব ক্লাস রুমে তালা, পতাকা নামানো আছে। কয়েক কর্মচারী ছিলেন তারা জানান, শিক্ষার্থীরা দুপুরের পরে আসতে চায় না। আগের মত জৌলুস নাই কলেজে। জরাজীর্ণ ভবন থাকলেও বিশাল ব্যয়ে গেট নির্মান করা হয়েছে। গেটে পাচন্দর ইউনিয়ন থেকে এলজিএসপি প্রকল্পের ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, কিন্ত গেট নির্মান খরচ নাকি ৩/৪ লাখ টাকা বলে ধারনা।
খোজ নিয়ে জানা যায়, চলতি এইচএসসি পরিক্ষা দিচ্ছে মাত্র ৩৬ জন। অথচ রেজিস্ট্রেশন করেছিল ১৪২ জন। এর মধ্যে মাত্র ৩৬ জন পরিক্ষায় অংশ নিয়েছেন। বাকিগুলোর কোন খবর নাই। একাদশ শ্রেণীতে ৭৫ শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও হাতে গোনা ২০/২৫ জন শিক্ষার্থী নিয়োমিত। ডিগ্রিতে ভর্তি আছে ৩০০ জন, কিন্তু কলেজে কেউ আসেন না। উচ্চ মাধ্যমিকে প্রভাষক ২২ জন, দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা ৫ জন ও কর্মচারী ১২ জন। ডিগ্রিতে সব মিলে ২৩ জন রয়েছেন। অবস্থাটা এমন শিক্ষার্থীর চেয়ে শিক্ষক কর্মচারীই বেশি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী জানান, আমাদেরকে নিয়োমিত কলেজে আসতে হয়, অথচ প্রভাষকরা নিয়ম বেধে আসেন। কেউ সপ্তাহে দুদিন, কেউ তিন দিন, আবার অনেকে আসেন না। কারন একটাই শিক্ষার্থী নেই। এসে শুধু বসে থাকা। কলেজের ভবন দীর্ঘ দিনের, ক্লাস রুমগুলোর অবস্থাও ভালো না, নেই কম্পিউটার ল্যাব ঘর ও লাইব্রেরি। এক কোথায় কোন মতে টিকে আছে। কর্তৃপক্ষ সুদৃষ্টি না দিলে আগামীতে কি হবে কে জানে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার পংকজ চন্দ্র দেবনাথ জানান, বিকেল চারটার আগে কলেজ ছুটি দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।