নিউজ ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ কখনও মানবাধিকার লঙ্ঘন করে না, সুরক্ষা দেয়। মানবাধিকার নিশ্চিত করে।
এ সময় খুনিদের আশ্রয় দেওয়ায় আমেরিকা ও কানাডার সমালোচনা করে তিনি বলেন, জাতির পিতার সাজাপ্রাপ্ত খুনিদের ফেরতে দিতে বলি, তারা দেয় না। মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীর মানবাধিকার রক্ষা করছে তারা।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান গুম-খুনের সংস্কৃতি শুরু করেছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এদেশে গুম-খুনের কালচার তো শুরু করেছে জিয়াউর রহমান। আমাদের শত শত নেতাকর্মীকে গুম করেছে। ফাঁসি দেওয়ার সংস্কৃতিও তার। এক দিনে দশ জনকে ফাঁসি দিয়েছে।
তিনি বলেন, এক বিমান বাহিনীর ৫৬২ জন, সেনা ২ হাজার অফিসার ও সৈনিক। সে পরিবারগুলো আজও তাদের আপনজনের জন্য কেঁদে ফেরে। মরদেহের খবরটাও তো পায়নি। এরপর কোন মুখে বিএনপি গুম-খুন নিয়ে কথা বলে?
বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে খুনিদের বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা জাতির পিতার খুনিদের দূতাবাসে চাকরি দিয়েছি। তখন মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়নি?
এ সময় বুদ্ধিজীবী দিবসে বিএনপি কোনও কর্মসূচি না থাকার সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, এতে কী বুঝা যায়! জিয়া-এরশাদ-খালেদা স্বাধীনতাবিরোধীদের বিভিন্ন পদ দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার খুনি রশিদ ও ডালিম এখনও পাকিস্তানে পলাতক। খুনি রশিদ, যে আমার সেজ ফুপুর বাড়িতে গিয়ে ৪ বছরের সুকান্ত থেকে শুরু করে ফুপুকে গুলি করেছে; ফুফাকেও হত্যা করেছে, তিন জন ফুপাতো বোনকে হত্যা করেছে, ভাইকে হত্যা করেছে- সে এখন আমেরিকায়। বার বার তাদের কাছে আমরা অনুরোধ করছি, ঐ আসামিকে আমাদের কাছে ফেরত দেন। সে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সেই সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে তারা দেয় না। কারণ খুনির মানবাধিকার রক্ষা করছে তারা। অর্থ, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীর মানবাধিকার রক্ষা করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আর মেজর নূর যে সরাসরি ৩২ নম্বরের বাড়িতে গিয়েছিল, সেই নূর এখন কানাডায়। কানাডা সরকারকে বারবার অনুরোধ করি, তারা ফেরত দেয় না। খুনিদের মানবাধিকার রক্ষা করতে তারা ব্যস্ত। তাহলে আমরা যারা আপনজন ও স্বজন হারিয়েছি, তাদের অপরাধটা কী? সেটা আমি জাতির কাছে জিজ্ঞাসা করি। বিএনপি বা জামাত যারা এদের জন্য হাপিত্যেশ করে কান্নাকাটি করে, তারা এর জবাব দিক।
তিনি বলেন, শুধু এখানে আওয়ামী লীগের হাজারো নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। কত মানুষকে গুম করেছে। আমার ছাত্রলীগের মাহফুজ বাবুর লাশতো তার পরিবার পায়নি। নারায়ণগঞ্জের মনিরের লাশতো পায়নি। যুবলীগ নেতা চট্টগ্রামে মৌলভী সৈয়দকে দিনের পর দিন অত্যাচার করে মেরেছে, ঠিক সেইভাবে খসরুসহ আমাদের বহুনেতাকে দিনে পর দিন অত্যাচার করেছে। একেকজনকে অত্যাচার করে এমনভাবে ছেড়ে দিয়েছে, বেশিদিন তারা আর বাঁচতে পারেনি।
তিনি বলেন, এই বুদ্ধিজীবী হত্যা এবং আওয়ামী লীগকে একদম নিশ্চিহ্ন করার অপরাধ তারা করেছে। এদেশের স্বাধীনতা আমরা এনেছি। জাতির পিতা যদি স্বাধীনতা না আনতেন, তাহলে ঐ মেজর জিয়া কি কোনদিন মেজর জেনারেল হতে পারতো? বা তার পরিবার সেই স্ট্যাটাস ভোগ করতে পারতো? পারতো না। ঐ মেজর থেকেই স্যালুট দিতে দিতে ঐ বুট ও পা ক্ষয় হয়ে শেষ হয়ে যেত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস। যারা আপনজন হারিয়েছে তারা জানে, কী হারিয়েছে। তারাও তো লাশ পায়নি। আর যারা পেয়েছে, তাও গলিত লাশ। দেখার মত নয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ড. আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।