নিউজ ডেস্ক
দীর্ঘ প্রায় এক বছর পর দলে ফিরছেন গাজীপুরের আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম। বহিষ্কারাদেশ উঠিয়ে নেওয়ায় তার মেয়র পদে ফেরার বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানা গেছে।
গত শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির বৈঠকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীসহ দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতা-কর্মীকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয় বলে জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ ঘোষণার পর থেকেই দল থেকে বহিষ্কৃত জাহাঙ্গীর আলমের দলে ফেরার বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে।
গত বছর ১৯ নভেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। এরপর জাহাঙ্গীর আলম হারিয়ে ফেলেন মেয়র পদও।
এ দিকে জাহাঙ্গীর আলম ফিরছেন প্রচার হওয়ার পর গাজীপুরের সর্বসাধারণের মধ্যে কৌতূহল লক্ষ্য করা গেছে। দলে ‘জাহাঙ্গীর পন্থী’ হিসেবে যারা এতো দিন কোণঠাসা ছিলেন তাদেরও উজ্জীবিত দেখা যাচ্ছে। জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির সামনে নেতাকর্মীরা ইতোমধ্যেই আনন্দ মিছিল করেছেন। সেখানে বিগত দিনগুলোর তুলনায় নেতাকর্মীদের ভিড়ও বেড়েছে। সাধারণ মানুষের মনে এখন একটিই প্রশ্ন- দলে ফিরলেও মেয়র পদে কি ফিরবেন জাহাঙ্গীর? ভারমুক্ত হবে কি গাজীপুর সিটি করপোরেশন?
এ বিষয়ে বুধবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে গাজীপুরের মৌচাক স্কাউট ক্যাম্প মাঠে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘গাজীপুরে জাহাঙ্গীর আলমের মেয়র পদে ফেরার বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তাকে তো মেয়র পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়নি, সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। সাময়িকভাবে বরখাস্ত যেসব কারণে করা হয়েছে, সেগুলো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে কথা বলতে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এর আগে, গত ৪ আগস্ট মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে দায়ের করা ৭ মামলায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া জাহাঙ্গীর আলমকে আগাম জামিন দেন হাইকোর্ট। পঞ্চগড়, রাজবাড়ী, গাজীপুর, নওগাঁ, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ জেলায় দায়ের করা মামলায়ও তিনি জামিন পেয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে গোপনে ধারণ করা জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করেন। পরে ১৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভায় জাহাঙ্গীরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। ২৫ নভেম্বর তাকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।