November 24, 2024, 9:56 pm

News Headline :
সীমাহীন দূর্নীতির পরও বহাল তবিয়তে মোহনপুরের ইউএনও আয়শা সিদ্দিকা রাজশাহীতে চাঁদাবাজি ও দখলদারত্ব বন্ধে কঠোর হুশিয়ারি যুবদল নেতা রবি’র পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু রাজশাহীতে কোথাও স্থাপনা করতে না পেরে শেষমেস ভাঙারির দোকানে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত আ.লীগ: নাছিম রাজশাহীতে আলু ও তেলের দাম বাড়তি রাজশাহীতে ‘সমন্বয়ক’ সোহেল রানাকে ‘ভুয়া’ বললো মহানগর ছাত্রদল প্রধান উপদেষ্টার সাথে খালেদা জিয়ার মতবিনিময় দেশের সকল ক্ষমতার মালিক হবেন জনগণ: ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজশাহীতে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
রাজশাহীতে ভর্তি জালিয়াতি ও প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের হোতা আটক

রাজশাহীতে ভর্তি জালিয়াতি ও প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের হোতা আটক

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বিভিন্ন নিয়োগ এবং ভর্তি পরীক্ষার জাল প্রশ্নপত্র ও প্রবেশপত্র তৈরি করে ডিজিটাল জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়া চক্রের মুল হোতা নয়ন ইসলামকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর তার কাছ থেকে বিপুল সংখ্যক বিভিন্ন পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ড, পরীক্ষার প্রবেশপত্র, জীবন বৃত্তান্ত, নাগরিক সনদপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে যশোহরের বেনাপোল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বুধবার দুপুরে আরএমপি সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে নয়নকে গ্রেপ্তারের বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিজয় বসাক। গ্রেপ্তার নয়ন ইসলাম রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলার আচিনঘাট এলাকার আজগর হোসেন মন্ডলের ছেলে। তিনি মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার উপশহর এলাকায় বসবাস করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানান , গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বেসরকারি টিভি চ্যানেল নিউজ২৪ একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয় সারাদেশব্যাপী আসন্ন মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস, জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়া ও বিভিন্ন চাকরির প্রলোভন দিয়ে মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু এবং চাকরি প্রার্থীদের নিকট হতে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের সদস্যগণ নগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন নিউমার্কেট সংলগ্ন পিজি টাওয়ার বিল্ডিং-এর ১০ম তলায় অবস্থান করছে।

এখান থেকেই তারা নগরীর বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের মালিকদের সহযোগিতায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে ভর্তিচ্ছ ও চাকরি প্রত্যাশীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের নিকট হতে পরীক্ষার প্রবেশপত্রের কপি এবং চুক্তি মোতাবেক অর্থের জিম্মা হিসাবে তাদের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার মূল সনদপত্র, রেজিস্ট্রেশন কার্ড সংগ্রহ-সহ প্রাথমিক খরচ বিকাশ, রকেট এবং নগদ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নগদ টাকা সংগ্রহ করে।

বিষয়টি আরএমপি’র পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমানের নজরে আসে। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে রাজশাহী মহানগর গোয়ন্দা পুলিশ (ডিবি)-কে নির্দেশ প্রদান করেন। এর পর আরএমপি গোয়েন্দা টিম জালিয়াত চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারের অভিযান শুরু করেন। পরবর্তীতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের টিম নগরীর পিজি টাওয়ারের ১০ম তলায় অভিযান পরিচালনার জন্য গেলে জালিয়াতি চক্রের সদস্যরা গোয়েন্দা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়।

ফ্ল্যাটের মালিকের মাধ্যমে জানা যায় ভাড়াটিয়ার নাম নয়ন ইসলাম। সে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে তার অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে বসবাস করতো। বাড়ির মালিক আরও জানান, নয়ন নিজেকে কখনও ডাক্তার, কখনও সরকারি কর্মকর্তা বা এনজিও কর্মী পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন চাকরি প্রার্থী ও ভর্তিচ্ছু ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে যোগাযোগ করে। অনেকে এখানে আসা-যাওয়া করে।গোয়েন্দা পুলিশ প্রতারক চক্রের মূল হোতাদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে আসামি নয়নসহ অন্যান্য সদস্যরা যাতে বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য গত ২৬ ফেব্রুয়ারি দেশের সব বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরসমূহে বিশেষ পত্র প্রেরণ করেন। কিন্তু আসামি নয়ন এর পূর্বেই ভারতে পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে আসামি নয়ন ইসলাম গত ৬ মার্চ বিকেলে যশোর জেলার বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় উক্ত পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে বেনাপোল ইমিগেশন পুলিশ তাকে আটক করে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করেন।

গত ৭ মার্চ বিকেলে রাজশাহী পুলিশ কমিশনারের নির্দেশক্রমে গোয়েন্দা পুলিশের ঐ টিম যশোর জেলার বেনাপোল পোর্ট থানায় উপস্থিত হয়ে আসামি নয়নকে হেফাজতে নেয়।

জিজ্ঞাসাবাদে আটকৃত নয়ন জানায়, সে ও তার সহযোগী পলাতক আসামি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলর বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র সনেট এবং আরো অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জন সহযোগী পরস্পর যোগসাজসে বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের সাথে যোগাযোগ করে চাকরিপ্রার্থী ও বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু প্রার্থীদের সঙ্গে মোবাইল ফোনের বিভিন্ন এ্যাপস(হোয়াটস অ্যাপস, ভাইবার, টেলিগ্রাম) এর মাধ্যমে যোগাযোগ করে তাদের চাকরি দেওয়ার কথা বলে এবং বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করে দিবে মর্মে আশ্বাস দিয়ে ডিজাটাল ডিভাইস (মোবাইল ফোন) ব্যাবহার করে মোবাইল ফিন্যান্স (বিকাশ, রকেট, নগদ) অ্যাকাউন্ট এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ডিজিটাল প্রতারণা করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়।

পলাতক আসামিদের আটক অভিযান অব্যাহত আছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিসহ পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা ও পেনাল কোডে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়

Please Share This Post in Your Social Media

ads



© All rights reserved © 2024
Developed by- .:: SHUMANBD ::.