November 24, 2024, 10:45 pm

News Headline :
সীমাহীন দূর্নীতির পরও বহাল তবিয়তে মোহনপুরের ইউএনও আয়শা সিদ্দিকা রাজশাহীতে চাঁদাবাজি ও দখলদারত্ব বন্ধে কঠোর হুশিয়ারি যুবদল নেতা রবি’র পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু রাজশাহীতে কোথাও স্থাপনা করতে না পেরে শেষমেস ভাঙারির দোকানে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত আ.লীগ: নাছিম রাজশাহীতে আলু ও তেলের দাম বাড়তি রাজশাহীতে ‘সমন্বয়ক’ সোহেল রানাকে ‘ভুয়া’ বললো মহানগর ছাত্রদল প্রধান উপদেষ্টার সাথে খালেদা জিয়ার মতবিনিময় দেশের সকল ক্ষমতার মালিক হবেন জনগণ: ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজশাহীতে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
রাবি ছাত্রকে পিটিয়ে সিট থেকে বের করে দিলো ছাত্রলীগ

রাবি ছাত্রকে পিটিয়ে সিট থেকে বের করে দিলো ছাত্রলীগ

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে হলের সিট থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এক ছাত্রলীগের নেতার বিরুদ্ধে। প্রাণনাশের হুমকি ও মারধরের ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রাজশাহী নগরের মতিহার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। প্রাণনাশের হুমকির ঘটনা ঘটে ১২ মার্চ আর মারধরের ঘটনা ঘটে রোববার রাতে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম ফয়সাল আহম্মেদ (২১)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের ৪০৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী। ফয়সাল একজনের নাম উল্লেখসহ ২০ থেকে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করেছেন তার অভিযোগে।অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম মনিরুল ইসলাম ওরফে স্বপন (৩০)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক। বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া শেষ হলেও তিনি শহীদ হবিবুর রহমান হলের ৩০৫ নম্বর কক্ষে থাকেন।

লিখিত অভিযোগে ফয়সাল উল্লেখ করেছেন, ১২ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে শহীদ হবিবুর রহমানের হলের ৪০৪ নম্বর কক্ষে মনিরুল ইসলাম এসে তাঁকে বলেন যে ‘তুমি এখন রুম থেকে বের হয়ে চলে যাও, না গেলে তোমাকে প্রাণে মেরে ফেলব’। ‘তোমাকে বাঁচানোর মতো কেউ নাই’ বলে অন্য একটি ছেলের বিছানাপত্র তাঁর কক্ষে রেখে চলে যান। এরপর গতকাল রোববার (২৬ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে আবার আসেন তিনি। এ সময় তাঁর সঙ্গে ২০ থেকে ২৫ জন আসেন।স্বপন কক্ষে এসে তাঁকে বলেন, ‘তোকে না রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেছিলাম? তুই এই রুমে এখনো কী করিস? হল কি তোর বাপের, আমার এই ব্লকে থাকতে হলে আমাকে টাকাপয়সা দিয়ে থাকতে হবে।’ এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তিনি তাঁর পোশাক ধরে কক্ষ থেকে টেনেহেঁচড়ে বের করার চেষ্টা করেন। বের হতে না চাইলে তাঁরা তাঁকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন।

মনিরুল ইসলাম তাঁর ডান হাতে লাঠি দিয়ে সজোরে আঘাত করেন। এতে তাঁর ডান হাতে আঘাত লাগে। পরে তাঁরা তাঁর বিছানাপত্র বের করে বাইরে ফেলে দেন। পরে আশপাশের অন্যরা এগিয়ে এলে তাঁরা হুমকি দিয়ে ঘটনস্থল থেকে চলে যান। পরে তিনি অন্যদের সহযোগিতায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

ফয়সাল বলেন, তাঁর বাবা একজন কৃষক। তিনি হল প্রাধ্যক্ষের মাধ্যমে ৮ মার্চ হলে উঠেছেন। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে উঠেননি। প্রথমে ১২ মার্চ তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে সিট থেকে নেমে যাওয়ার হুমকি দেন। পরে গতকাল রোববার তাঁকে মারধর করা হয়েছে। বিছানাপত্র ফেলে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে তিনি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।অভিযোগের বিষয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘৪০৪ নম্বর কক্ষে আমাদেরই এক ছোট ভাই ছিল। ওখানে এক দরিদ্র শিক্ষার্থী উঠবে, এই কথা ছিল। তাঁর আবাসিক সুবিধা আছে। পরে সেখানে তাঁকে তুলে দেওয়া হয়। সেখানে উচ্চবাচ্য হয়েছে। মারধরের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। বরং ওর (ফয়সাল) আচরণই খারাপ ছিল।

 

বড় ভাই হিসেবে গিয়ে সেখানে ভালো আচরণ পাইনি। তখন কেউ একজন তাঁকে বলছিল রেকর্ড করার জন্য। তখন ধমক দিয়ে ওর ফোনটা নিয়ে বলছি এই কী রেকর্ড করছিস দেখি। ওর গায়ে একটা ফুলের টোকাও দেওয়া হয়নি। আর ওখানে তো আমি একা ছিলাম না। আমার সঙ্গে ছাত্রলীগের প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন ছিলেন।’

 

 

মনিরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘ওই ছেলে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমানের (অপু) মাধ্যমে উঠেছে। হয়তো টাকাপয়সা দিয়েছে। তাঁরা অভিযোগ করেছে, তদন্ত হোক। এ বিষয়ে আমরাও অভিযোগ করব। দেখি তাঁদের পেছনে কে আছে। পুরোনো কমিটির কয়েকজন হলগুলোতে আছেন। এখন চারপাশে নতুন কমিটিতে আসছেন, যে যাঁর মতো ছেলে তুলছেন। টাকা নিয়ে উঠাচ্ছেন। এটা হচ্ছে মূল কথা।’

লেখাপড়া শেষেও হলে থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখন এটা যদি দোষের হয়, তবে তো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়াকে আগে হল থেকে চলে যেতে হবে।’

হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। সোমবার হলে গিয়েছিলেন। মূলত দুজনই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। একজনের সিট বরাদ্দ আছে হলের তিনতলায়। তিনি কারও মাধ্যমে চারতলায় ওই সিটে যান। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।

লেখাপড়া শেষেও মনিরুলের হলে থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তাঁর লেখাপড়া শেষ হয়ে গেছে। তাঁর বাড়িও শুনেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই। এ জন্য বোধহয় মাঝেমধ্যে এসে থাকেন।’

মতিহার থানার (ওসি) হাফিজুর রহমান হাফিজ বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল থেকে মারধর করে নামিয়ে দেওয়ার বিষয়ে এক শিক্ষার্থী থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। তাঁরা অভিযোগটি রোববার রাতে পেয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

ads



© All rights reserved © 2024
Developed by- .:: SHUMANBD ::.