নিজস্ব প্রতিবেদক:রাজশাহীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবদুল জলিল গতকাল শেষ কর্মদিবস অতিবাহিত করেছেন। তিনি বদলি হয়ে ঢাকায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপসচিব হিসেবে যোগদান করবেন। আর তাঁর স্থলে গতকাল দায়িত্বভার নিয়েছেন শামীম আহমেদ। আজ সকালের বিমানে আব্দুল জলিলের রাজশাহী ছাড়া ছাড়া কথার আছে। বদলির আদেশ হওয়ার পরে রাজশাহী ছাড়ার আগে তিনি মাত্র আট দিনের মধ্যে ৬জনকে নিয়োগ দিয়েছেন। নতুন জেলা প্রশাসক যোগদানের আগে এভাবে তড়িঘড়ি করে নিয়োগ দেওয়া নিয়ে ব্যাবপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন আব্দুল জলিল।
তবে তিনি দাবি করেছেন, নতুন জেলা প্রশাসক যোগদানের পরে তাঁকে পেইন দিতে চান না আব্দুল জলিল। এ কারণে তিনি যাওয়ার আগেই প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ছয়জন কর্মচারীকে নিয়োগ দিয়েঅনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ১২ মার্চ জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিলের বদলির আদেশ জারি হয়। এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে চারজন অফিস সহায়ক এবং একজন করে নিরাপত্তা প্রহরী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। তিন পদে মোট ছয়জন লোকবল নিয়োগের আবেদনের শেষ তারিখ ছিল গত ১৬ মার্চ। কিন্তু বদলির আদেশ পেয়ে জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল যাওয়ার আগেই এই ৬ জনকে নিয়োগ দিতে উঠে পড়ে লাগেন। সেই হিসেবে ১৬ তারিখ রাতেই আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। পরের দিন ১৭ ও ১৮ মার্চ শুক্র ও শনিবার হওয়ার কারণে ছুটি ছিল। পরদিন ১৯ মার্চ অর্থাৎ আবেদনের তারিখ শেষ হওয়ার ঠিক পরের কার্যদিবসেই চাকরিপ্রার্থীদের কাছে ডাকযোগে প্রবেশপত্র পাঠানো হয়। এতে পরীক্ষার তারিখ উল্লেখ করা হয় ২৪ মার্চ। সেই অনুযায়ী ওইদিন পরীক্ষা সম্পন্ন করে পরের দিনই নিয়োগ পক্রিয়াও সম্পন্ন করা হয়।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও নিয়োগ কমিটির সদস্যসচিব শরিফুল হক বলেন, ‘আমাদের লোকবলের সংকট আছে। অনেক আগেই আমরা ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পেয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করি। সেই হিসেবে ২৪ তারিখে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করে ছয়জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগে এত তড়িঘড়ি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জনসেবা তো দ্রুতই দিতে হবে। দ্রুত দিলেও সমস্যা, না দিলেও সমস্যা।’
জানতে চাইলে সদ্য সাবেক জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, নতুন যে ডিসি আসবেন, তাঁকে ‘পেইন’ দিতে চাই না। তাই নিয়োগ প্রক্রিয়াটা শেষ করা হয়েছে।’
এদিকে,জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, চলে যাওয়ার আগে তড়িঘড়ি করে করে শেষ ৬জনকে নিয়োগ দিয়েছেন সাবেক জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল। যে ছয়জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তারা সবাই জেলা প্রশাসকের দপ্তরের আগে থেকেই বিভিন্ন পদে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আত্মীয়-স্বজন। এর আগে গত তিন বছরে আব্দুল জলিল কয়েক দফায় আরও ১১৬ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন। সবমিলিয়ে তাঁর আমলে রেকর্ড ১২২ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এর আগে একজন জেলা প্রশাসকের অধিনে এতোসংখ্যক জনবল নিয়োগ কখনোই হয়নি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) এ এন এম মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘সাধারণত কোনো জেলা প্রশাসক বদলির পর নিয়োগপ্রক্রিয়ায় থাকতে পারেন না। আমি বিভাগীয় কমিশনারকে বিষয়টি জানিয়েছি।