নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ফলিতবিজ্ঞান ও মানবিক অনুষদের ডিন ড. সাজ্জাদ হোসেন। তার দায়িত্বগ্রহণের আট মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত উপাচার্য (ভিসি) নিয়োগ সম্পন্ন হয়নি।
রুয়েটের উপাচার্য হওয়ার জন্য প্রথম দফায় জীবনবৃত্তান্ত জমা দেওয়া কেউই নিয়োগ পাননি। ফলে দ্বিতীয় দফায় আবারও দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তবে এসব প্রার্থীর অধিকাংশের বিরুদ্ধেই বিতর্কিত কর্মকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
সূত্র জানায়, ভিসির হওয়ার দৌড়ে থাকা সম্ভাব্য প্রার্থীদের একজন হলেন কম্পিউটার সাইন্স এ- ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. শহীদুজ্জামান। সাবেক ভিসি যন্ত্র কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. রফিকুল আলম বেগের সময়ে ইনস্টিটিউট অব কোয়ালিটি এ্যাসুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে থাকাকালীন রুয়েটের সিসিটিভি স্থাপন কাজের তদারকির দায়িত্ব পালন করেন অধ্যাপক ড. শহীদুজ্জামান। কিন্তু অল্পসময়ের ব্যবধানে বেশ কিছু সিসিটিভি ক্যামেরা নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তীতে সিসিটিভি’সহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি ক্রয়ে আর্থিক অনিয়মের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। এনিয়ে তখন ক্যাম্পাসে সমালোচনা শুরু হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সাথে সখ্যতা থাকার অভিযোগও রয়েছে। যদিও তিনি এসব অভিযোগ এরআগে অস্বীকার করেছেন।
আরেক সম্ভাব্য প্রার্থী ড. শামীমুর রহমান সাবেক ভিসি সিরাজুল করিম চৌধুরীর আমলে ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ছিলেন। শামীমুর রহমানের বিরুদ্ধেও ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বেচ্ছাচারিতা ও বিতর্কিত কর্মকা-ের অভিযোগ রয়েছে। ইলেকট্রিক্যাল এ- ইলেকট্রনিকস বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. ফারুক হোসেন রুয়েট গবেষণা সম্প্রসারনের পরিচালকসহ রুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি তিনি। তার বিরুদ্ধে রুয়েটে নিয়োগ ও লাইব্রেরীতে ফটোকপি বই ক্রয়ে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকারও অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, রুয়েটের অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম সেখের উপাচার্য থাকার মেয়াদ শেষ হয় গত ৩০ জুলাই (২০২২)। এর এক দিন পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে রুয়েটের ফলিতবিজ্ঞান ও মানবিক অনুষদের ডিন ড. সাজ্জাদ হোসেনকে রুয়েটের ভারপ্রাপ্ত ভিসির দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপর আট মাসের বেশি সময় ধরে রুয়েট পরিচালনা করছেন ভারপ্রাপ্ত ভিসি।
রুয়েট সূত্রে জানা গেছে, গত জুলাইয়ে কিছু অধ্যাপক ভিসি হওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়ে দিয়েছিলেন। কেউ কেউ এমপি-মন্ত্রীর সুপারিশ নিয়েও মন্ত্রণালয়ে তদবির করেন। কিন্তু তখনকার একজনেরও জীবনবৃত্তান্ত বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। দ্বিতীয় দফায় আবার জীবনবৃত্তান্ত নেওয়া হয়। এবার উপাচার্য হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন অন্তত ডজনখানেক অধ্যাপক। এর মধ্যে প্রথম দফায় চেষ্টা করা কয়েকজনও রয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউজিসির সদস্য ড. মো. আবু তাহের এরআগে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, উপাচার্য নিয়োগ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সব দিক থেকে ভালো একজনকে খুঁজে পেতে হয়তো একটু সময় লাগছে। তিনি বলেন, এ নিয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করছে।