নিজস্ব প্রতিবেদক: অবশেষে রাজশাহী নগরীতে সিরিয়াল প্রতারক প্রিয়া খাতুনকে (৩১) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আরিফ ও সঙ্গীয় ফোর্স তাকে নগরীর আমবাগান এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন। প্রতারক প্রিয়া খাতুনের বিরুদ্ধে বহু নারীকে তার প্রতারণার ফাঁদে ফেলে নি:স্ব করে দেয়ার অভিযোগ পুরোনো হলেও এবার শেষ রক্ষা হয়নি তার।
গ্রেফতার হওয়ার দুইদিন আগে পাওনা টাকা চাইতে গেলে সুইটি বেগম নামের এক নারীকে ব্যাপক মারধর করে প্রিয়া খাতুনসহ তার সহযোগীরা। ভুক্তভোগী সুইটি বেগমের বাড়ি বোয়ালিয়া থানাধীন সপুরা এলাকায়। এ ঘটনায় বোয়ালিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী সুইটি বেগম। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে প্রিয়া খাতুন গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়লে ভুক্তভোগী নারীরা জড় হতে থাকেন বোয়ালিয়া মডেল থানায়। এসময় তারা অভিযোগ করেন, লাখ লাখ টাকার মালামাল প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রিয়া।
শিরোইল মঠপুকুর এলাকার ভুক্তভোগী ইয়াসমিন আক্তার (৩৭) জানান, ৭ মাস পূর্বে তার বাসা থেকে পর্যায়ক্রমে ৩ লাখ টাকার মালামাল যেমন থ্রি-পিচ, নকশি কাঁথা, বেড সিট, শাড়ি ও লুঙ্গি প্রতারণার মাধ্যমে নিয়ে যায়। কিন্তু টাকা চাইলে তালবাহানা করে প্রতারক প্রিয়া খাতুন। পরে স্টাম্পের মাধ্যমে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকায় আপোষ মিমাংসা হলেও আজ অবদি কোনো টাকা প্রদান করেননি প্রিয়া খাতুন।
শিরোইল কলোনী এলাকার রাখি বেগম নামের এক তরুণী বলেন, ৫ মাস পূর্বে তার বাসায় গিয়ে ১৭ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে আসে প্রিয়া। ভুক্তভোগী হাসি, বেবি, রেশমা, লায়লী বেগমসহ বহু নারী উদ্যোক্তা জানান, তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে গেলেও কোনো টাকা দেননি প্রিয়া।
প্রতারণার কৌশল হিসেবে প্রিয়া নিজেকে বড় উদ্দ্যোক্তা দাবি করে এবং তার এনআইডির ফটো কপি হাতে ধরিয়ে দেয়। এর আগে ভুক্তভোগীদের বাসায় গিয়ে বলেন, আপনার বাসায় যে সকল মালামাল আছে তা সম্পূর্ণ আমি নিবো। দাম দরেও সমস্যা নেই। তারপর ২০ হাজার টাকার মাল হলে ৫ হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে বলেন বাকি টাকা বিকেলে দিচ্ছি। এর পর আর খবর থাকে না তার।
এ ব্যাপারে উপশহর পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মোঃ আরিফ হোসেন জানান, প্রতারণা মামলায় প্রিয়া খাতুনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারের পর অসংখ্য ভুক্তভোগী নারী উদ্দ্যোক্তা থানায় হাজির হন। তারা প্রত্যেকে অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করেন। মোবাইল ফেসবুকের মাধ্যমে ঠিকানা এবং ফোন নম্বর সংগ্রহ করে
তাদের বাসায় গিয়ে বিভিন্ন কৌশলে মালামালগুলো প্রতারণার মাধ্যমে নিয়ে আসে। ভুক্তভোগীদের তালিকা আমি নিয়েছি। এটি সিডি আকারে আদালতে পাঠানো হবে।