তানোর প্রতিনিধি: বর্তমানে রাজশাহী জেলাজুড়ে যখন মাথা উঁচু করে দাড়িয়েছে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ তখন কিছু পাতি নেতার অবৈধ কর্মকান্ডের জন্য সেই সুনাম নষ্ট হচ্ছে আওয়ামী লীগ দলের বলে মনে করছেন সচেতন মহলের বিশিষ্টজনেরা। এরা মদের নেশায় মাতাল হয়ে হাতে অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে পুরাতন পুকুর খননের নামে কৃষি জমিতে পুকুর খনন করা থেকে শুরু করে সেই পুকুর খননের মাটি পাকা রাস্তা নষ্ট করে বিক্রি বানিজ্য করছেন। যার জন্য একদিকে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা রাস্তা গুলো নষ্ট হচ্ছে,অন্যদিকে প্রতিনিয়ত ট্রাক্টার (কাঁকড়া) গাড়িতে করে মাটি বহন করতে গিয়ে সেইসব গাড়ির বিকট শব্দদূষণে অতিষ্ঠ হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এমনকি গাড়ি ঘনঘন চলাচলের জন্য ধুলোবালি উড়ে মানুষের বাড়ি ঘরে ঢুকে ঘটছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। সচেতন মহলের অভিমত,কিছু নামধারী মাতাল পাতি নেতারা জনপ্রতিনিধিদের ছত্রছাঁয়ায় থেকে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছে। যার ফলে,এইসব পাতি নেতাদের কারণে এলাকার সাধারণ মানুষরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। সেই সাথে রাস্তা ঘাটে সাধারণ মানুষের চলাফেরা করাও কঠিন দায় হয়ে পড়েছে।
এইসব নামধারী পাতি নেতাদের মধ্যে অন্যতম গডফাদার জেলা যুবলীগের সহসভাপতি পরিচয় দানকারী মোহনপুর উপজেলার ধুরইল ইউপির ধুরইল গ্রামের পাতি নেতা ভূমিদস্যু আনোয়ার হোসেন। তবে এলাকায় ভূমিদস্যু মাস্তান আনোয়ার নামেই বেশি পরিচিত তিনি। জানা যায়,এই ভূমিদস্যুর নাম শুনলে লজ্জা শরমে তার আশেপাশে যায়না কোন ভালো মানুষ। এমনকি বাড়ির বাহিরে বেরোতে ভয় পায় সাধারণ মানুষ।জেলা যুবলীগের সহসভাপতি পরিচয় দানকারী এই আনোয়ার দিনরাত মদের নেশায় মাতাল হয়ে পাড়া মহল্লায় হোন্ডা নিয়ে চালিয়ে বেড়ান তান্ডব। এমনকি যখন নেশায় মাতাল হয়ে থাকেন তখন বউ বিটি তো দূরের কথা কে মা কে মাসি দেখার সময় থাকেনা তার কাছে। তার বাহিরে কেউ কথা বললে অশ্লীল শব্দোচ্চারণের শেষ থাকেনা। বেশি রেগে গেলে গায়ে হাতও তুলতে তার হাত কাপে না। এতে করে এলাকায় আনোয়ারের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড’র বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়না। যদিও বা কেউ ভূমিদস্যু আনোয়ারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে তাহলে প্রকাশ্যে দিবালোকে অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে বাড়িতে ঢুকে অতর্কিত হামলা হুমকি ধামকি দেন এই নামধারী মাতাল ভূমিদস্যু আনোয়ার।
এই ভূমিদস্যু মাস্তান আনোয়ারের একসময় কিছুই ছিলোনা, বর্তমানে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে হয়েছেন কিছু অবৈধ টাকার মালিক। সম্প্রতি, তানোর পৌর এলাকার কালীগঞ্জ হাট সংলগ্ন মোহনপুর উপজেলার ধুরইল ইউনিয়নের পিয়ারপুর বিলে অবৈধ ভাবে পুকুর খননের নামে কৃষি জমি নষ্ট করে বিভিন্ন এলাকায় ট্রাকটারে করে মাটি বিক্রি করছেন জেলা যুবলীগের সহসভাপতি পরিচয় দানকারী আনোয়ার হোসেন। এতে করে অবৈধ পুকুরের মাটি বিক্রি করতে গিয়ে রাস্তা নষ্ট করার পাশাপাশি নষ্ট করছে পরিবেশের ভারসাম্য। এলাকাবাসীর অভিযোগে সরেজমিনে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন ঘটনার সত্যতা। সেখানে পুকুর খননের নামে কৃষি জমি নষ্ট করে ভেকু গাড়ি দিয়ে কাটা হচ্ছে পুকুর। সেই পুকুরের পঁচা কাঁদা মাটি বহন করছে সাত থেকে আটটি ট্রাক্টর গাড়ি দিয়ে। পুকুর পাড়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে লাঠিসোঁটা নিয়ে পাঁচ ছয়জন বখাটে মাদকসেবি যুবকদের কে। তাদের কাছে পুকুর খনন ও মাটি বিক্রি করার অনুমতি প্রশাসনের কাছে থেকে আছে কি না জানতে চাওয়া হলে তারা উত্তরে বলেন,আমরা পাঁইট হিসাবে দেখা শোনা করছি,কিছু জানতে হলে আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ারের সাথে যোগাযোগ করেন।
এসময় তাদের কাছে থেকে পুকুর খনন ও মাটি বিক্রি কারী আনোয়ারের ফোন নম্বর নিয়ে ফোন দিয়ে যোগাযোগ করে পুকুর খনন ও মাটি বিক্রি করার অনুমতি আছে কি না জানতে চাইলে তিনি মোবাইল ফোনেই চড়াও হয়ে অশ্লীল ভাষায় সাংবাদিকের পরিবার তুলে গালাগালি করতে শুরু করেন। আর বলেন পুকুরে থাক আসছি বলে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ঘন্টা পার হয়ে গেলেও তার দেখা মেলেনি। ঘটনাস্থল থেকে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও কে অবহিত করে পুকুর খনন ও মাটি বিক্রি করার বিষয়ে অনুমতি আছে কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, কোন পুকুর খননের অনুমতি দেয়া নেই, আর পুকুর খনন বা উঁচু নিচু জমির মাটি কেটে বিক্রি করার কোন সুযোগও নেই,বিষয়টি জরুরি ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে সহকারী কমিশনার ভূমি এসিল্যান্ড কে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। এতে সহকারী কমিশনার ভূমি এসিল্যান্ড সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অভিযান পরিচালনা করে ভেকু গাড়ির ব্যাটারি জব্দ করেন।
এসময় পুকুর পাড়ে রাখা মাদকসেবি বখাটে যুবকরা পালিয়ে যায়। পুকুর পাড়ে থেকে ভূমিদস্যু মাস্তান আনোয়ার কে এসিল্যান্ড একাধিক বার ফোন দিয়েও ফোনে পাননি। ভূমিদস্যু আনোয়ারের এসব অপকর্মের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সুদৃষ্টি কামনা করছেন এলাকাবাসী। সেই সাথে এরকম একজন মাতাল চুয়ানি খোরের দ্রুত দল থেকে বহিষ্কারের দাবিও তুলেছেন এলাকাবাসী। এসব চিট বাটপার দের কাছে থেকে আওয়ামী লীগের সুনাম নষ্ট হওয়ার আগেই বহিষ্কার করা ভালো। নয়তো আওয়ামী লীগের সুনাম নষ্ট করতে এই মাতাল আনোয়ার যথেষ্ট বলেও জানান জেলা সৈনিক লীগের সভাপতি জিমি কাটার রনি।