নিজস্ব প্রতিবেদক: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এক ব্যক্তির বিভিন্ন মেয়াদে দুই বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত। আজ বুধবার (১০ মে) দুপুরের দিকে এই দণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ জিয়াউর রহমান।
দণ্ডিত ব্যক্তি হলেন, বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম থানাধীন কুহলী এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে আব্দুল আলিম (৪০)। রায় ঘোষণার সময় কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন দন্ডপ্রাপ্ত আসামি। পরে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বেগম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ২৪(২) ও২৫(২) ধারায় অভিযুক্ত আব্দুল আলীমকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। একইসঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয় এবং মূল হাজতবাস দণ্ড থেকে বাদ যাবে বলে জানিয়েছেন আদালত। মামলার বিবরণে পিপি জানান, দণ্ডিত আব্দুল আলীম ২০২১ সালের মার্চ মাসে বগুড়ার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার মোবাইল ফোনে তার বান্ধবীর ছোট ভাই পরিচয়ে কথা বলতেন। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সার্জেন্ট পদে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত আছেন বলেও জানান আব্দুল আলীম।কথা বলার একপর্যায়ে ওই শিক্ষিকার ইমুতে ম্যাসেজ করে সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত কয়েকটি ছবিও পাঠান তিনি। তার চারদিন পর বগুড়া শহরস্থ নিউমার্কেটে তাদের উভয়ের দেখা হয়। সেখানে কথা বলার একপর্যায়ে শিক্ষিকার হাত থেকে তার মোবাইল ফোন নিয়ে কয়েকটি ছবি গোপনে তার ইমুতে পার করে নেয়। এর মধ্যে গত ৩ এপ্রিল ২০২১ ইং তারিখে সকাল ৯টার সময় শিক্ষিকার স্বামী অফিসের কাজে – বাহিরে থাকার সুযোগে অভিযুক্ত আব্দুল আলীম তার বাসার ভিতরে প্রবেশ করে এবং বিভিন্ন বড়য়ভীতি দেখিয়ে জোর পূর্বক তার সাথে কিছু অন্তরঙ্গ ছবি তার মোবাইলে ধারণ করে। পরবর্তীতে সেই ছবিগুলি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে শুরু হয় আব্দুল আলীমের ব্ল্যাকমেইল।
এর মধ্যে বিভিন্ন সময় বিকাশ ও রকেটের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয় ওই প্রতারক। একপর্যায়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করে সে। পরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বগুড়া শাজাহানপুর থানায় ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষিকা বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে অব্দুল আলীমকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে তাকে এই দণ্ড দেন আদালত।