তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর পৌরসভার জন্ম নিবন্ধনের প্রায় ৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন মাস্টার রোল কর্মচারী দেলোয়ার বলে নিশ্চিত করেন মেয়র ইমরুল হক। আত্মসাতের ঘটনা জানতে পেরে মেয়র দেলোয়ারকে সে দায়িত্ব থেকে বাদ দিয়ে কাজিম নামের আরেক জনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একজন মাস্টার রোল কর্মচারী এত টাকা কি ভাবে আত্মসাৎ করেন এটা নিয়ে পৌর কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে, সেই সাথে মেয়রের বিরুদ্ধেও উঠেছে সমালোচনার ঝড়। কারন মেয়রের ইন্ধন ছাড়া এত টাকা গায়েব করা অসম্ভব বলে মনে করছেন তারা।
জানা গেছে, বিগত ২০২১ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি তানোর পৌরসভা ভোটে প্রথমবারের মত নির্বাচিত হন নৌকার প্রার্থী পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি ইমরুল হক। দায়িত্ব পেয়ে তার আত্মীয় ধানতৈড় গ্রামের দেলোয়ারকে চুক্তি ভিত্তিক বা মাস্টাররোলে নিয়োগ দেওয়া হয়। সে ওই গ্রামের মৃত আওয়ালের পুত্র। দেলোয়ার জন্ম নিবন্ধনের কাজ শুরু করেন। কাজ শুরু পর থেকে জন্ম নিবন্ধনের টাকা সরকারী কোষাগারে জমা না দিয়ে তছরুপ করেন। সম্প্রতি বিষয়টি ধরা পড়লে মেয়রসহ কর্মকর্তারা হতাশ হয়ে পড়েন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তারা জানান, জন্ম নিবন্ধনের টাকা সরকারী কোষাগারে জমা দিতে হয়। কিন্তু বিগত ২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকে টাকা জমা না দিয়ে নিজের পকেটে রাখেন দেলোয়ার। শুধু তাই না নিবন্ধন নিতে আসা ব্যক্তিদের কাছে নানা তালবাহানায় অধিক টাকা আদায় করে থাকেন এবং খারাপ আচরণ করেন। এসব নিয়ে মেয়রকে একাধিকবার বলা হলেও কোন গুরুত্ব দেন নি। না দেওয়ার কারনে ও মেয়রের ইশারায় টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে আমরা মনে করছি। কারণ দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা কাজিমকে কোন কাজ করতে দেওয়া হত না। কিন্তু টাকা আত্মসাতের পর পুনরায় কাজিমকে কাজ করতে দেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত দেলোয়ার বলেন, আমি টাকা আত্মসাৎ করিনি, টাকা নিয়ে আলু কিনেছিলাম, আলু বিক্রি করে গত সপ্তাহে ৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। অল্পদিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ করা হয়। আপনি কার অনুমতি নিয়ে টাকা কোষাগারে জমা না দিয়ে ব্যবসা করেছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি ধানে বাতাস দিচ্ছি পরে কথা বলছি। পরে আর কথা বলতে চাননি।
অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী ও সচিব সরদার জাহাঙ্গীরের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা। এতদিন ধরে টাকা জমা হয়নি আপনি কেন জানতেন না প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন মেয়র ভালো বলতে পারবে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মেয়র ইমরুল হক বলেন, আমি জানার পর টাকা ফেরত দিতে বলি, দেলোয়ার বলে আমি আলু কিনেছি বিক্রি করে টাকা ফেরত দিব। এজন্য তাকে চাপ দেওয়া হয়নি। গত সপ্তাহে আলু বিক্রি করে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছে। ১০ টাকা কেজি আলু কিনে ২৮ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছে, ভালোই দান মেরেছে। আমি এ সুযোগ তাকে দিয়েছিলাম। দেলোয়ার বলেছে ৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে আরো কয়েক লাখ টাকা পাবে জানতে চাইলে মেয়র জানান না এত টাকা হবে না বলে দায় সারেন তিনি।