মান্দা প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দায় এক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অন্য বিদ্যালয়ের হয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ১৩ মেয়ে পরীক্ষার্থীসহ আলোচিত দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুটো হল চকগোপাল উচ্চবিদ্যালয় ও চকচম্পক ছোট বালিকা বিদ্যালয়।
অভিযোগ উঠেছে চকগোপাল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী টাকার বিনিময়ে এসব পরীক্ষার্থীদের ননএমপিওভূক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চকচম্পক ছোট বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রহিদুল ইসলামের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন।
ঘটনাটি তদন্ত করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেখ শাহ্ আলম বলেন, গত সোমবার এ সংক্রান্ত একটি পত্র পেয়েছি। আজ বুধবার দুই প্রতিষ্ঠান প্রধানকে তদন্তের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চকগোপাল উচ্চবিদ্যালয়ের ১৩জন মেয়ে পরীক্ষার্থী চকচম্পক ছোট বালিকা বিদ্যালয়ে হয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। বিষয়টি জানাজানির পর ভুক্তভোগী এক পরীক্ষার্থীর বাবার অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ নির্দেশ দেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান।মানবিক বিভাগের পরীক্ষার্থী ইসরাত জাহান ইভা জানায়, ‘পরীক্ষার আগের দিন বিকেলে আমাদের ১৩জনকে আলাদাভাবে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়।এসময় প্রত্যেকের হাতে ৫০০ টাকা করে ধরিয়ে দেন প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী। প্রবেশপত্রে দেখা যায় চকচম্পক বালিকা বিদ্যালয়ের হয়ে আমরা পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী এক পরীক্ষার্থীর বাবা জানান, ‘আমার মেয়েকে চকগোপাল উচ্চবিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করি। নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশনের জন্য ছবিসহ যাবতীয় তথ্যাদি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলীর কাছে জমা দেওয়া হয়েছিল। যথাসময়ে অন্য সহপাঠীদের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষার ফরমও পুরন করে। কিন্তু কীভাবে সে চকচম্পক ছোট বালিকা বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী হয়ে গেল তা বুঝে উঠতে পারছি না।’অভিভাবক তানজিলা আক্তার বলেন, ‘গত পাঁচবছর ধরে আমার মেয়েকে চকগোপাল উচ্চবিদ্যালয়ে পড়িয়ে আসছি। পরীক্ষার আগের দিন জানতে পারি আমার মেয়ে অন্য স্কুলের ছাত্রী।প্রধান শিক্ষক অত্যন্ত গোপনে আমাদের না জানিয়ে কোমলমতি মেয়েদের অন্য স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে টাকার বিনিময়ে বেঁচে দিয়েছে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের অপসারণসহ বিচার দাবি করছি।’
চকগোপাল উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোবারক হোসেন বলেন, ‘আমি সবেমাত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী বলেন, ‘শিক্ষার্থী সংকটে ভুগছে চকচম্পক ছোট বালিকা বিদ্যালয়। দীর্ঘদিনেও প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভূক্ত হয়নি। তাই শিক্ষার্থী দিয়ে তাদের উপকার করেছি।’চকটম্পক ছোট বালিকা বিদ্যালয়ের অপর অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক রহিদুল ইসলামের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি