তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে ফাঁকা চেক নিয়ে ৫২ হাজার টাকার কিটনাশক বাঁকি দিয়ে এক ভূমিহীন আদিবাসীর নামে আদালতে ৬ লাখ ৯২ হাজার টাকার মামলা করেছেন এক কিটনাশক ব্যবসায়ী।
রাজশাহীর তানোর উপজেলার তালন্দ ইউপির মোহন আদিবাসী পল্লীর সুশীল হেমরমের পুত্র রতন হেমরমের উপর এ মামলাটি করেছেন তানোর উপজেলার চান্দুড়িয়া ইউপির চান্দুড়িয়া গ্রামের আশরাফ আলী খানের পুত্র চান্দুড়িয়া বাজারের কিটনাশক ব্যবসায়ী মিলন খান।গত ২ বছর ধরে রতন হেমরম এ মামলায় আদালতে নিয়মিত ভাবেই হাজিরা দিয়ে আসছেন। নুন আন্তে পান্থা ফুরানোর মত অবস্থার দিনমুজুর ভূমিহীন এ আদিবাসি স্ত্রীসহ ২ কন্যা ও ২ পুত্র সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন মানুষের বাড়িতে কামলা দিয়ে।
গত ২৩ মে মঙ্গলবার রাজশাহীর আদালত চত্বরে দেখা হয় রতনের সাথে তিনি বলেন, বিগত ২০১৭-১৮ সালের দিকে চান্দুড়িয়া বাজারের কীটনাশক ব্যবসায়ী মিলনের কাছ থেকে একটি ফাঁকা চেক দিয়ে আলু চাষের জন্য ৯২ হাজার টাকার সার বিষ বাঁকি নিয়েছিলাম। ওই বছর আলুতে সবার মত আমিও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলাম। তারপরও আলু তুলে ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছিলাম। তারপরও কিটনাশক ব্যবসায়ী মিলন ওই ফাঁকা চেক দিয়ে বিগত ২০১৮ সালে আদালতে আমার নামে ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকার মামলা করেছেন। ওই মামলার হাজিরা দিতে আদালতে এসেছি।তিনি বলেন, আমার ৪ সস্তানের মধ্যে বড় ছেলে সবুজ হেমরম কলেজে পড়ছে, মেয়ে বিউটি হেররমও কলেজে পড়ছে, আরেক ছেলে সজিব হেমরম আগামী বছরে এসএসসি পরিক্ষা দিবে এবং ছোট মেয়ে মিঠি হেমরম ২য় শ্রেণীতে পড়ছে। মামলার কারনে আমার স্ত্রী কয়েকবার অসুস্থ হয়ে পড়েছিল এবং আমাকেও কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। কারন ৫২ হাজার টাকার বিপরীতে ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকার মামলার বোঝা নিয়ে চলতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। খুব টেনশন পড়েছি। তিন বেলা খেতেই পাচ্ছিনা, ছেলে মেয়েদের স্কুলে পড়াতে পারছিনা। খাস জায়গায় ভাঙ্গাচুরা খুপরি বাড়িতে বসবাস করছি। টাকা পরিশোধ করার কোনই ক্ষমতা নাই। পরিবার নিয়ে আত্মহত্যা করা ছাড়া উপায় নাই। ছেলে সজিব বলেন, টাকার টেনসনে বাবা মা ঘুমাতে পারেনা, আমরাও পড়তে পারছিনা। মরা ছাড়া উপায় নেই।এবিষয়ে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে কিটনাশক ব্যবসায়ী মিলন খান বলেন, কোন বাকির টাকা না, রতন আমার কাছ থেকে ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিল। পরিশোধের জন্য একাধিকবার বলার পরও না দেয়ার কারনে আদালতে মামলা করেছি। ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর নিয়ে কোন এমাউন্ট না লিখে চেক নেয়া যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এমাউন্ট বসিয়ে স্বাক্ষর নেযা হয়েছে।