নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষক, উদ্যোক্তা, উন্নয়ন অংশীদার এবং সরকারী প্রতিনিধিদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে হেইফার বাংলাদেশ সম্প্রতি রাজশাহী ও নাটোর জেলায় দুই দিনের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান বিনিময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
২৪ মে ২০২৩ শেষ হওয়া দুইদিনের এই অভিজ্ঞতা ও পারস্পরিক জ্ঞান বিনিময় অধিবেশনে চারটি নারী গ্রামীণ সমবায়ের সদস্য, ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট (ইফাদ), জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), কৃষি মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ, এবং পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসফ) মহিলা-নেতৃত্বাধীন গ্রামীণ সমবায়ের সহযোগিতা কর্মসূচি এবং নারীরা কী ধরনের বাঁধার মুখোমুখি হন, পাশাপাশি বাঁধা অতিক্রমে করণীয় নিয়েও মতবিনিময়ে উপস্থাপন করা হয়।ইফাদ বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আর্নউড হ্যামিলার্স, হেইফার বাংলাদেশের উন্নয়ন মডেল পর্যবেক্ষণের জন্য আমন্ত্রিত প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন, যা কৃষক উৎপাদনকারী সমবায়ী সংগঠন (এফপিও) কীভাবে একটি টেকসই ব্যবসায়িক মডেলের ‘হাব’ হিসেবে কাজ করতে সহায়তা করে, যা ক্ষুদ্র কৃষকদের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ব্যবস্থাপনা, এবং উন্নত বাজারে প্রবেশাধিকারে ব্যবসায়িক উন্নয়ন পরিষেবা প্রদান করে।কৃষিদ্রব্য উৎপাদনকারী সমবায়ী সংগঠনগুলোর নারীদের জন্য চ্যালেঞ্জ এবং চাহিদাগুলির প্রতি নজর দেয়া, স্থানীয় খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করতে এবং কৃষি ব্যবসা এবং নারীর ক্ষমতায়নে রূপান্তরের লক্ষ্যে সরকারী, বেসরকারী এবং উন্নয়ন অংশীদারদের কাছ থেকে বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তার সাথে তাদের যুক্ত করে।প্রতিনিধি দল চারটি স্থানীয় কৃষক সংগঠন এবং তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সংগ্রহ কেন্দ্র এবং স্টোরেজ ইউনিট পরিদর্শন করে এবং যেগুলো নারী কৃষকদের তাদের কমিউনিটির আত্মনির্ভরশীল, সক্রিয় সদস্য হওয়ার সাথে সাথে কার্যকর কৃষি-বাস্তবতাত্ত্বিক অনুশীলনগুলো বাস্তবায়নের জন্য সজ্জিত করে।
ইফাদ বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আর্নউড হ্যামিলার্স পরিদর্শনকালে বলেন “বাংলাদেশের ক্ষুদ্র কৃষকরা সম্মিলিতভাবে কাজ না করলে তারা কঠিন ভবিষ্যতের মুখোমুখি হতে পারে।
তাই নারী-নেতৃত্বাধীন সমবায়ের বাস্তবায়ন মডেল নারী কৃষকদের শক্তিশালী কণ্ঠস্বর, ন্যায্য ব্যবসা পরিচালনা করতে এবং কমিউনিটির নেতৃত্ব দক্ষ করতে ভূমিকা রাখবে বলেও উল্লেখ করেন।হেইফার বাংলাদেশ নারী কৃষকদের প্রশিক্ষণ সামাজিক পুঁজি, লিঙ্গ সমতা, জলবায়ু-স্মার্ট কৃষি অনুশীলন, আর্থিক ব্যবস্থাপনা, এবং উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও দক্ষতা এবং ব্যক্তি, গোষ্ঠী এবং কমিউনিটির ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে ভোক্তাদের সাথে উৎপাদকদের সংযুক্ত করার উপর অগ্রাধিকারভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
পরিদর্শনকালে হেইফার বাংলাদেশ’র কান্ট্রি ডিরেক্টর (অর্ন্তবতীকালীন) নুরুন নাহার বলেন, নারী কৃষকরা আর্থ-সামাজিক ক্ষমতায়ন অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, ইনপুট এবং বাজার প্রবেশাধিকারে বাধাঁর সম্মুখীন হয়।তাই আমরা মনে করি, প্রশিক্ষণের সুযোগ, ন্যায্যমূল্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাজার এবং খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে স্থানীয় খাদ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে, জলবায়ু বিপর্যয়ের ঝুঁকি হ্রাস এবং আমদানির উপর দীর্ঘমেয়াদী নির্ভরতা কমাতে পাওে নারীদেও ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
হেইফার ইন্টারন্যাশনাল ২০১২ সালে বাংলাদেশে কাজ শুরু করে, সরকার এবং স্থানীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অংশীদারিত্বে ভিত্তিত্বে প্রকল্প কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে।
উল্লেখ্য, হেইফার বাংলাদেশ ৪৫,৬৭৫টিরও বেশি কৃষক পরিবারকে এবং ৪৩টি নারী-নেতৃত্বাধীন সমবায়কে টেকসই খাদ্য ও কৃষি ব্যবসা গড়ে তুলতে সহায়তা করছে, যা গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে এবং ‘জীবিকা-উপার্জন’-এর পথ তৈরি করে।