নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) এখন ভিসিশূন্য অবস্থায় পড়েছে। রবিবার শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে দিনভর অবরুদ্ধ থাকার রাতে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন পদত্যাগ করেছেন। এরপর থেকেই ভিসিশূণ্য রয়েছে রুয়েটে।
এ অবস্থায় রুয়েটের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা চরম হতাশায় ভূগছেন। তারা এখন ‘উপরে’র (শিক্ষা মন্ত্রণালয়) নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে সোমবার বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা অবধি কোনো নির্দেশনা অসেনি।এদিকে ভিসির পদত্যাগের পর সোমবার ক্লাশ-পরীক্ষা রূটিন অনুযায়ী হলেও শিক্ষক কর্মকর্তারা পড়েছেন হতাশায়। তারা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।জানা যায়, রবিবার দিনভর আন্দোলনের মুখে নিজ দফতরে অবরুদ্ধ ছিলেন অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন। এ ঘটনার পর রাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেনের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। রেজিস্ট্রার নিজেই গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।পদত্যাগ প্রশ্নে রুয়েট রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেন জানান, তিনি পদত্যাগপত্র পেয়েছেন। তবে এ বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের পরে বিস্তারিত জানানো হবে। তবে সোমবার তিনি কিছু বলেন নি। তাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও রিসিভ করেন নি।
এর আগে রবিবার সকাল থেকে রুয়েটের অর্ধশতাধিক শিক্ষক তাদের পদোন্নতির দাবিতে রুটিন দায়িত্বের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। রাত পৌনে ৯টা পর্যন্ত তিনি সেখানেই অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন। শেষে চাপের মুখে রাত সোয়া ৯টার দিকে তিনি পদত্যাগ করেন।
জানা গেছে, গত বছরের ৩০ জুলাই রুয়েট ভিসির পদ শূন্য হয়ে যায়। এরপর ১০ মাস থেকে রুটিন দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করছিলেন অ্যাপ্লাইড সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন।আন্দোলনরত শিক্ষকদের অভিযোগ ছিল, ১১ মাস ধরে ক্যাম্পাসে ভিসি নেই। অভিভাবক না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে চরম স্থবিরতা নেমে এসেছে। এ ছাড়া সব শর্ত পূরণ করেও গত ১৫ মাসে অন্তত ৮০ জন শিক্ষক তাদের ন্যায্য পদোন্নতি ও আপগ্রেডেশন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
পদোন্নতির দাবিতে রবিবার বেলা ১১টার দিকে রুয়েট শিক্ষক সমিতির কয়েকজন নেতার সঙ্গে শিক্ষকরা ভিসির দফতরে প্রবেশ করেন। এ সময় রুটিন দায়িত্বের ভিসিকে পদোন্নতির বিষয়টি বললে তার হাতে কোনো ক্ষমতা নেই বলে জানান। এরপর থেকে থেকেই শিক্ষকরা ড. সাজ্জাদের দফতরে সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি তাকে তার দফতরে অবরুদ্ধ করে রাখেন। প্রেক্ষিতে রাতে পদত্যাগ করেন তিনি।