নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণে বিলম্ব হওয়ায় সংক্ষুদ্ধ হয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারারা। কেন ও কাদের কারণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণে বিলম্ব হচ্ছে, সেটিও জানতে চান তারা। এদিকে অনতিবিলম্বে রাজশাহীর কেন্দ্রীয় শহীদ নির্মাণের দাবি এবং শহিদ মিনারের জায়গায় জেলা পরিষদ কর্তৃক মার্কেট নির্মাণের সিদ্ধান্তে প্রতিবাদে বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরউল্লাহ্ এনডিসি এ নিকট আজ মঙ্গলবার স্মারকলিপি প্রদান করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, রাজশাহী মহানগর কমাণ্ডের সাবেক কমাণ্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে এই স্মারকলিপি প্রদান করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।স্মারকলিপি থেকে জানা গছে, রাজশাহীতে ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ-এদেশের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস ও স্মৃতিতে সমৃদ্ধ শিক্ষা নগরী রাজশাহী। অথচ ঐতিহ্য বহনকারী এমন একটি শহরে শহীদদের স্মরণে কোন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নাই। ২০২০ সালে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন সহ সকল শ্রেণিপেশার মানুষ ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে সোনাদিঘি সংলগ্ন পুরাতন সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিত্যক্ত জায়গায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ১৬ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি ভাষাসৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু। উক্ত ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে ছিলেন তৎকালীন রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা সহ রাজশাহীর সর্বস্তরের জনসাধারণ। সেই আন্দোলন ও ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল নিজেও ছিলেন। অথচ রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হয়ে মীর ইকবাল লোভের কারণে সব ভুলে গেছেন। আমরা হুঁশিয়ার দিয়ে বলতে চাই কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করতে দেয়া হবে না। আমরা দ্রুত শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, রাজশাহীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের জায়গায় রাজশাহী জেলা পরিষদ কর্তৃক মার্কেট নির্মাণের প্রচেষ্টায় নিন্দা জানিয়ে ২৯ মে বিবৃতি দেন দেশের ১৯জন বিশিষ্ট নাগরিক। বিবৃতিদাতারা হলেন, রামেন্দু মজুমদার, সুজেয় শ্যাম, আবেদ খান, ডা. ফওজিয়া মোসলেম, মামুনুর রশীদ, মফিদুল হক, নাসির উদ্দিন ইউসুফ, গোলাম কুদ্দুছ, ড. মুহম্মদ সামাদ, প্রফেসর ডা. কামরুল হাসান খান, এ্যাড. আবদুন নূর দুলাল, অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া, ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, প্রফেসর ড. এহতেশামু হক চৌধুরী, অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার, সাংবাদিক হারুন হাবিব, সাংবাদিক শ্যাম দত্ত, কেরামত মওলা ও মো. আহ্কাম উল্লাহ।
একই ঘটনায় গত ২৪ মে রাজশাহী জেলা কমাণ্ড, মহানগর কমাণ্ড, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন এবং ২৮ মে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক, রাজশাহীর উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।