বাগমারা প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর বাগমারায় প্রতারণার শিকার হয়ে ফরজানা (৬৫) নামে এক বৃদ্ধা ঘর-বাড়ি হারিয়ে পথে পথে ঘুরছেন। নিজের সন্তানাদি না থাকায় পালিত মেয়ে মানুষ করে তার ভবিষ্যৎ ভেবে তাকে কিছু জমি-জমা ও গর-বাড়ি লিখে দেন। এতে প্রতিবেশী আল আমীনের নজর পড়ে। অতি লোভী আল আমীন জমির লোভে বৃদ্ধা ওই পালিত মেয়ে তাহরিমা তাজনিনকে বিয়ে করে। পরে কৌশলে পুরা জমি হাতিয়ে নিয়ে তাজনিনকে তালাক দিয়ে অন্যের কাছে জমি বিক্রি করে।
বিষয়টি জানাজানি হলে বৃদ্ধা আদালতের স্বরণাপুর্ণ হন। এদিকে মামলা চলাকালীন আল আমীন প্রতিপক্ষ ওই একই গ্রামের তামছের আলীর কাছে পুরা জমি বিক্রি করে। তামছের মামলা চলাকালীন বৃদ্ধা ফারজানাকে বাড়ি থেকে বের করে তালা ঝুলিয়েছেন। ঘর-বাড়ি হারিয়ে বৃদ্ধা ন্যায় বিচারের আশায় পথে পথে ঘুরছেন।
মামলা ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বৃদ্ধা ফারজানা উপজেলার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার খাজাপাড়া গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলীর স্ত্রী। ছেলে-মেয়ে না থাকায় পালিত করেন শিশু তাহরিমা তাজনিনকে। বিয়ের উপযুক্ত না হতেই জমির লোভে প্রতিবেশী আজাহারের ছেলে আল আমীন তাকে বিয়ে করে। বিয়ের পর শাশুড়ীকে ফুঁসলিয়ে নিজ নামে আল আমীন আরো দুই শতক জমি রেজিস্ট্রেরী করে নেয়ার নামে পুরা ২৯ শতক জমি কৌশলে রেজিস্ট্রেরী করে গোপন রাখে। কিছু দিন পর আল আমীন বৃদ্ধার মেয়েকে তালক দিয়ে জমি ও ঘর-বাড়ি তার বলে দাবি করে।
এতে হতভম্বু হয়ে পড়ে বৃদ্ধা ফারজানা। বিষয়টি জানার পর পর আদালতের আশ্রয় নেয় জমি উদ্ধারের। আদালতে মামলা চলাকালিন ওই বাড়ি কেউ দখল নিতে পারবে না বলে আদালত নিষেধাজ্ঞা জারি করে। সব কিছু জানার পরেও একই মহল্লার প্রতিবেশী তামসের আলী ওই বিবাদমান জমি ক্রয় করে বৃদ্ধাকে বাড়ি থেকে জোর পূর্বক গত মঙ্গলবার বের করে দেয়। ঘর-বাড়ি হারিয়ে বৃদ্ধা এখন পথে পথে ঘুরছেন। গতকাল সরেজমিনে ওই বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়ে তালা মারা দেখা যায়। পথে দেখা মিলে ওই বৃদ্ধার সাথে।
ফারজানা জানান, প্রতারণার শিকার হয়ে তিনি অর্দ্ধাহারে অনাহারে পথে ঘুরছেন। এ বিষয়ে পৌরসভার মেয়র আব্দুল মালেক মন্ডলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি সম্পূর্ন ভাবে জানি। প্রতারণার শিকার ওই মহিলার সব কিছু জেনেও তামছের জমিটি অবৈধ ভাবে ক্রয় করেছেন। ঘর-বাড়ি হারা ওই বৃদ্ধার ব্যবস্থা নিতে বাগমার থানায় তামছেরকে ডাকা হয়েছিল। সেখানে থানার (ওসি) তদন্ত কর্মকর্তা শয়েব খাঁন উপস্থিত ছিলেন। জমি আদালতে বিচারধীন অবস্থায় ওই ঘর-বাড়ি থেকে বৃদ্ধাকে না তাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। তার পরও ওই বৃদ্ধাকে গায়ের জোরে বাইরে রেখেছেন বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত তামছের আলী বলেন, ওই জমিটি আমি আগে ওই বৃদ্ধার সাথে ক্রয়ের জন্য বায়নামা করি। বায়নামা করার পর জমিটি ক্রয় করা হয়েছে। জমির আগের বিষয়টি তিনি জানেন না। ওই বৃদ্ধা বরাবরই বাইরে থাকতেন ফলে এতো কিছু তার জানার বাইরে। তবে জমি ক্রয় ব্যাপারে ওই ঘর-বাড়ির দাগ তার মেয়ের নামেও রেজিস্ট্ররী ছিল না বলে তিনি দাবি করেছেন।