নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়ীহাট সংস্থার ও জায়গা বরাদ্দের নামে চাঁদা তোলার অভিযোগ উঠেছে দেওপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দীন সোহেলের বিরুদ্ধে।
এই নিয়ে ওই হাটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা হওয়ায় ব্যবসায়ীরা প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় করছেন।রাজাবাড়ীহাটের কাপড় ব্যবসায়ী আসাদুল হক বলেন, দেওপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান হাট সংস্কার ও জায়গা লীজ দেওয়ার নামে আমাদের কাছে এসে টাকা চেয়েছে। আমি নিজে গতকাল (মঙ্গলবার) টাকা দিতে গিয়েছিলাম তবে টাকা নেওনি। উপজেলা চেয়ারম্যান ও এসিল্যান্ডে কাছে হাটের ব্যবসায়ীরা যাওয়ার পর টাকা নেওয়া আপাতত বন্ধ আছে বলে জানান। তবে তিনি অভিযোগ করেন, অনেকের কাছে দোকান প্রতি ৩০ হাজার টাকা তুলেছেন। সেই টাকা ফেরত দিতে পারেন এমনটা শোনা যাচ্ছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী বলেন, আমরা সিএ্যান্ডবির জায়গায় বসে ব্যবসা করি। হাটের ভেতরে এডিসি রাজস্বর মাটি আছে। আমাদের ডেকে চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল বলেন, আপনাদের হাট সংস্কার করা ও জায়গা লিজ নিয়ে দেওয়া হবে। আমরা আপত্তি জানালে সে বাধ্যতামূলক আমাদের চাপ দিয়ে বলে, আপনাদের ক্ষয়ক্ষতি হবে না সে ব্যবস্থা করে দিবো। আপনারা কিছু টাকা দিবেন লিজের কাগজ দেবো।
আমাদের বিরোধীতা সত্ত্বেও ৩০ হাজার টাকা চেয়ারম্যান নিজে চাই। পরে তার দালাল যোগসাজসে দোকানদারদের কাছ থেকে টাকা নিতে লাগলো। আমরা কয়েকটি দোকানদার প্রতিবাদ করি। এটা বিশ্বরোডের জায়গা সে কেমন লীজ দেয়। ব্যবাসায়ীদের মধ্যে মহির উদ্দিন, বকুল, জগদীশসহ অনেকেই ৩০ হাজার করে টাকা দিয়েছে।
তিনি আরো জানান, গতকাল (মঙ্গলবার) চেয়ারম্যানের এমন কান্ডে এসিল্যান্ড ও উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে লীজের বিষয়ে জানতে যাওয়ার পর টাকা নেওয়া বন্ধ আছে বলে জানা গেছে।বেলাল উদ্দিন সোহেল ব্যবসায়ীদের কাছে নিজে টাকা চাওয়ার পর তার চাচাতো ভাই সাবেক ইউপি সদস্য উৎসবের মাধ্যমে প্রায় ৪০ জন ব্যবসায়ীর কাছে থেকে টাকা উত্তলোন করেছেন বলে হাটের ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন।
টাকা উত্তোলনের বিষয়ে চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেলের চাচাতো ভাই সাবেক ইউপি সদস্য উৎসবের কাছে জানতে চাইলে তিনি টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, যারা বলছে সঠিক বলছে না।
গোদাগাড়ী সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. জাহিদ হাসান বলেন, রাজাবাড়ী হাটের কয়েকজন ব্যবসায়ী আমার কাছে এসে হাটের লীজ দেওয়া হবে কিনা তা জানতে এসেছিলো। তবে কে টাকা নিচ্ছেন এমনটি আমার জানা নেই।
এবিষয়ে দেওপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক বেলাল উদ্দিন সোহেলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যারা এসব বলছে ঠিক না। কারো কাছে কোন টাকা পয়সা নেইনি। আমার জানা মতে এর আগের এসিল্যান্ড ও তহসিলদার সেখানে গিয়েছিলো। আমি এসব কাজে জড়িত থাকি না সেটা সবাই জানে। কারো জায়গা দখল করেছি এমনটাও নজির নেই। রাজশাহী জেলার শ্রেষ্ট করদাতা হিসেবেও পুরস্কৃত হয়েছি বলে জানান তিনি।গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিষয়টি আমি পুরোপুরি ক্লিয়ার নই, তবে রাজাবাড়ীহাটের কয়েকজন ব্যবসায়ী আমার কাছে এসেছিলো এসব অভিযোগ নিয়ে। তাদের দেখে মনে হয়েছে নিরীহ টাইপের ব্যবাসায়ী। আমি তাদের পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছি হাট সংস্কার বা লীজ দেওয়া হলে অন্তত উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে আমার জানা থাকবে বা চিঠি আসবে। যেহেতু এসব কিছু নেই তাই তাদের বুঝিয়ে বলা হয়েছে। এসব কাজ তো ইউএনওর মাধ্যমে হবে সেটাও আমার নজরে আসবে বলে জানান।