নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর চারঘাটে এক ছাত্রলীগ নেতার ভয়ঙ্কর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দুই যুবক। যাদের একজনকে নির্যাতন করে হাত ভেঙে দেয়া হয়েছে। আর আরেকজনকে প্রথমে মাটিতে পুতে এবং পরে হাত-পা বেঁধে পানিতে ডুবিয়ে রেখে নির্যাতন করা হয়। ফেনসিডিল বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় চারঘাট উপজেলার শলুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর ওয়াদুদ শুভ ও তার সহযোগিরা ওই দুই যুবককে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে।
নির্যাতনের শিকার যুবকরা হলেন, শলুয়া ইউনিয়নের কানাজগাড়ি গ্রামের আবু বক্করের ছেলে নুর মোহাম্মদ পলক (১৮) ও তার খালাতো ভাই একই গ্রামের সৈকত আলীর ছেলে শাকিল রহমান (২০)। এদের মধ্যে পলককে মাটিতে পুতে এবং পরে হাত-পা বেঁধে পানিতে ডুবিয়ে রেখে নির্যাতন করে। আর শাকিলকে চোঁখ-মুখ বেঁধে পিটিয়ে নির্যাতন করে হাত ভেঙে দেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পৃথকভাবে নির্যাতনের সময় তাদের কাছে প্রথমে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছিল। এদের মধ্যে পলক ৪০ হাজার টাকা দিতে রাজি হলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
পলককে পানিতে ডুবিয়ে নির্যাতনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, একটি পুকুরের হাটু পানিতে হাত-পা বেঁধে পলককে ফেলে রাখা হয়েছে। পানির মধ্যে একটি খুটির সঙ্গে তাকে বেঁধে রাখা হয়। মাঝে মাঝে চেষ্টা করে মাথা তুলে শ^াস নিচ্ছে। আর পাশে একজন দাঁড়িয়ে দেখছে এবং আরেকজন স্বীকারোক্তি আদায় করার ভিডিও করছে।
নির্যাতনকারি ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল ওয়াদুদ শুভ শলুয়া গ্রামের সাজেদুর রহমানের ছেলে। তার সহযোগিরা হলেন, শলুয়া গ্রামের সইমুদ্দির ছেলে সাব্বির, আনজু আলীর ছেলে মুক্তা ও রমজান আলীর ছেলে লালন। এরা সবাই মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।
শাকিল আরও বলেন, শুভ তার লোকজন নিয়ে গিয়ে চোদ্দপাই এলাকা থেকে আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে চোখ-মুখ বেঁধে নির্যাতন করে বাম হাত ভেঙে দেয়। এর পর ওই অবস্থায় তাকে রাস্তার পাশে ফেলে চলে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে পাঠায়।
শাকিল বলেন, দুইদিন আগে শুভ ও মুক্তা আমার বাড়িতে এসে তাদের সরবরাহকৃত ফেনসিডিল বিক্রি করার প্রস্তাব দেয়। এতে ত রাজি না হলে আমাদের এভাবে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনার পর আবার রাত ১টার দিকে বাড়িতে গিয়ে নির্যাতনের বিষয়টি প্রকাশ না করার জন্য হুমকি দিয়ে আসে। প্রকাশ করলে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে আব্দুর ওয়াদুদ শুভ পলক ও শাকিলকে নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, তাদের আমি চিনি না। আপনারা ফোনে কথা না বলে সামনা সামনি এসে কথা বললে ভাল হয় বলে ফোন কেটে দেয়।
চারঘাট মডেল থানার ওসি মাহবুবুল আলম বলেন, মুক্তার, সাব্বির, লালনের বিরুদ্ধে মাদকের ৬/৭টি মামলা রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারও করেছিলাম। এখন জামিনে রয়েছে। নির্যাতনের অভিযোগ পেলে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।