প্রাথমিকভাবে ১৭ জেলার মোট ২৪ হাজার ৭৬১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা স্মার্ট আইডি কার্ড এবং ৪৬ হাজার ৮০৩ জন ডিজিটাল সার্টিফিকেট পাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড বিতরণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী জানান, ইতোমধ্যে ১৭টি জেলার ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড প্রিন্টিং কাজ সম্পন্ন হয়েছে। জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- কিশোরগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, নড়াইল, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, ঢাকা, শরীয়তপুর, মেহেরপুর ও নারায়ণগঞ্জ।
বাকি ৪৭টি জেলার ডিজিটাল সার্টিফিকেট এবং স্মার্ট আইডি কার্ডের প্রিন্টিং কাজ দেড় মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলেও জানান তিনি।
প্রথম দফার ৪৬ হাজার ৮০৩ জন ডিজিটাল সার্টিফিকেটধারীর মধ্যে জীবিত ২৪ হাজার ৭৬১ এবং মৃত ২২ হাজার ৪২ জন বলেও জানান মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল সার্টিফিকেট এবং স্মার্ট আইডি কার্ড বিতরণের এ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মহানগরের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। জেলাভিত্তিক ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড সর্বশেষ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের (ওয়েবসাইটে) www.molwa.gov.bd প্রকাশিত সমন্বিত তালিকা যাচাই করে বিতরণ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সমন্বিত তালিকায় নাম না থাকলে ওই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে পাঠানো ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড বিতরণ স্থগিত রাখতে হবে। সমন্বিত তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত হয়নি এমন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বিত তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম সমন্বিত তালিকায় থাকা সত্ত্বেও কোনো কারণে ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড প্রিন্ট হয়নি তাদের এমআইএস নম্বরসহ নামের তালিকা উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানোর পর পরবর্তীতে তাদের নামে ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড পাঠানো হবে। যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধা ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের নামে পাঠানো ডিজিটাল আইডি কার্ড বিতরণ স্থগিত রেখে শুধু ডিজিটাল সার্টিফিকেট বিতরণ করতে হবে। স্থগিত ডিজিটাল আইডি কার্ড মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর ফেরত পাঠাতে হবে।
সচিব বলেন, ইতোমধ্যে কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বা সনদ বাতিল হয়ে থাকলে তাদের কার্ড বিতরণ বন্ধ রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ডে তথ্যগত ভুল থাকলে সংশোধনের জন্য কার্ড বিতরণের দুই মাসের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর আবেদন করতে হবে। যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম সমন্বিত তালিকায় অর্থভুক্ত হয়নি তাদের ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড বিতরণ স্থগিত রাখতে হবে। কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে শুনানিরত থাকলে তাদের কার্ড বিতরণ বন্ধ রাখতে হবে।
উপজেলা থেকে সুপারিশ ছাড়া কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম সমন্বিত তালিকায় উঠে থাকলে তাদের কার্ড বিতরণ বন্ধ রাখতে হবে বলেও অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। অনুষ্ঠানে ১৭টি জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।