নিজস্ব প্রতিনিধিঃ আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনকে ঘিরে প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্লাবটির সাংবাদিকরা। ক্লাবের যেকোন দিকে তাকালেই দেখা মিলছে প্রার্থীদের প্রচারনী ব্যানার আর ফেস্টুন। শুধু ব্যানার ফেস্টুন নয়, টান টান উত্তেজনা আর ভোটের যোগ বিয়োগ নিয়ে কঠিন সমিকরণের মিষ্টবার্তা দিচ্ছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।
গত ১০ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই শেষ করে প্রতিটি প্রার্থীর সকল কাগজপত্র সঠিক ও বৈধ ঘোষনা করেছে নির্বাচন কমিশন। তাদের তথ্যমতে নির্বাচনে মোট ১৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এতে ৫ টি পদের প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ের সীমান্তে পৌছে গেছেন। তারা হলেন সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন সাগর, কোষাধ্যক্ষ ওদুদুজ্জামান সুবাস, দপ্তর সম্পাদক সুলতানুল আরেফিন নিহাল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রাফিজ বিন সরকার পাভেল।
আর বাঁকী ৮ পদে হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। প্রতিদ্বন্দ্বী কয়েকজনের অনুভুতি ও সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, আমাদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে কিন্তু প্রতিহিংসা থাকবে না। আমাদের মধ্যে কোন প্যানেল নেই। জয় পরাজয় থাকবে এটা নিয়ে আমাদের মধ্যে কোন বিভেদ সৃষ্টি হবে না। ভোট যুদ্ধে যেই বিজয়ী হোক আমরা সকলে তাকে সাদরে অভিনন্দন জানিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক হয়ে কাজ করবো।
এদিকে প্রচার প্রচারণার ক্ষেত্রে প্রতিটি প্রার্থীই ক্লাবকে সুসংগঠিত করে সকলের ভাগ্য উন্নয়নের এক বুক আশা দিচ্ছেন। সদস্যদের কল্যান তহবিল গঠন, বার্ষিক মিলন মেলা বা ভ্রমন, নিজস্ব ক্লাবঘরসহ বিভিন্ন সুবিধা বাস্তবায়ন করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তারা।
তবে নির্বাচনী এই গরম হাওয়া শুধু বরেন্দ্র প্রেসক্লাবেই নয়, এই হাওয়া ঝড়ের গতিতে ছুটে চলেছে রাজশাহীর মিডিয়া পাড়ায়। রাজশাহীর প্রবীন ও সিনিয়র সাংবাদিকের আলোচনার খোরাক এখন ১৬ তারিখের নির্বাচন। তারাও হিসেব করছেন কে কেমন ভোটের ব্যবধানে নিজেকে যোগ্য প্রমান করবেন। আগামী নির্বাচনের কে কোন পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে, কে কেমন ভোট পেতে পারে সকল খোঁজ খবর নিচ্ছেন তাঁরা।
গণতান্ত্রিক উপায়ে এমন নির্বাচন দেখে ইতোমধ্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন রাজনীতিক মহল, সুশীল সমাজ ও প্রবীন সাংবাদিকরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবীন সাংবাদিক বলেছেন, এই ক্লাবের সাংবাদিকরা এত অল্প সময়ে এভাবে এগিয়ে যাবে এটা কেউ ভাবেনি। কারন রাজশাহীতে এর আগেও অনেক সাংবাদিক সংগঠন হয়েছে, কিন্তু কয়েক মাস যেতে না যেতেই তাদের কার্যক্রম আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। অনেকেই এমন ধারনা করেছিল রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের ক্ষেত্রেও শুধু তাই নয়, শুনেছি এই ক্লাবের হিসাব নিকাশও নাকি সচ্ছতার সাথে বুঝিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। খুব ভাল লেগেছে তাদের এমন সচ্ছতা দেখে। শুভকামনা রইলো রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের সকল সদস্যদের জন্য।
এছাড়াও রাজশাহীর কয়েকজন প্রবীন রাজনীতিবিদদের সাথে কথা বললে তারা বলছেন, তোমাদের এমন কার্যকলাপে ঈর্ষান্বিত হচ্ছে একটি মহল। ঐ মহলের সাথে যুক্ত আছে কিছু সাংবাদিক। তারা কখনই চাইনা তোমরা ভাল কিছু করো। তারা সব সময় তোমাদের ক্ষতির অপেক্ষা করছে। তোমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির লক্ষে তারা কাজ করছে। তোমরা সাবধানে থাকবে। আমরা জানি এই ক্লাবে এক ঝাঁক তরুন সাংবাদিক রয়েছে। তারা কারো কাছে মাথা নত করে না। তোমাদের সকলের প্রতি শুভকামনা রইলো এবং আগামী ১৬ তারিখ নির্বাচন সফল ও স্বার্থক হোক এই কামনা করি।
উল্লেখ, নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বরেণ্য শিক্ষাবিদ রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, সহকারি নির্বাচন কমিশনার পদে রয়েছেন এটিএন বাংলার সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার সুজাউদ্দিন ছোটন ও এডভোকেট জ্যোতিউল ইসলাম শাফী। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সচিব পদে দায়িত্ব পালন করছেন রাজশাহী অনলাইন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মীর তোফায়েল হোসেন।
প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন দৈনিক রাজশাহীর আলো’র সম্পাদক-প্রকাশক আজিবর রহমান। সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে থাকবেন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক শ্যাম দত্ত, রাজশাহী মহানগর যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক চৌধুরী মাহমুদ হাসান খান ইতু ও মাইটিভি রাজশাহী প্রতিনিধি শাহরিয়ার অন্তু।
নির্বাচন কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান আলী বরজাহান, রাজশাহী মহানগর জাসদ সভাপতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী, রাজশাহী মহানগর সিপিবি সাধারণ সম্পাদক অজিত কুমার মন্ডল, রাজশাহী মহানগর যুবলীগ সভাপতি রমজান আলী এবং চ্যানেল আই সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার আবু সালে মোহাম্মদ ফাত্তাহ ।
এছাড়াও নির্বাচনের দিন পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যমে কর্মরত বেশ কয়েকজন সাংবাদিক ও রাজশাহীর প্রথিতযথা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।