নাহিদ ইসলাম,নিজস্ব প্রতিবেদক: দুয়ারে কড়া নাড়ছে ঈদ। আগামী বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সূর্যোদয়ের পরপরই শুরু হবে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নানা আনুষ্ঠানিকতা।
শুরুতেই অনুষ্ঠিত হবে ঈদ জামাত। টানা এক মাস সিয়াম সাধনার পর খুশির সওগাত নিয়ে আবার হাজির হয়েছে এ ঈদ।
তাই শেষ মুহূর্তে কদর বেড়েছে ঈদ জামাতের অন্যতম অনুষঙ্গ আতর, টুপি ও সুরমার। নামাজে এ সুন্নতি অনুষঙ্গগুলো কেনাকাটার জন্য প্রতিবছরই চাঁদ রাতে রাজশাহীর মার্কেটগুলোতে মানুষের ভিড় উপচে পড়ে।
এবারও ব্যতিক্রম হয়নি।
বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল থেকেই চলেছে কেনাকাটা।
সন্ধ্যার পর ভিড় আরও বাড়ছে। সবাই সাধ ও সাধ্য অনুযায়ী নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জন্য কেনাকাটা করছেন। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা। তাই শেষ বেলায় সরগরম হয়ে ওঠেছে আতর, টুপি ও সুরমার বাজার।
আজ সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবং বাংলাদেশেরও কোথাও কোথাও ঈদ উদযাপন হচ্ছে। তাই বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই আগামীকাল ঈদ উদযাপন করার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়ে আছেন।
আর রাজশাহী মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত সাহেববাজার জিরোপয়েন্টেই বিশেষত আতর, টুপি ও সুরমার বাজার বসে। সেখাকার প্রতিটি দোকানের সামনেই তাই আজ সকাল থেকেই বিভিন্ন বয়সের ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কেউ পরখ করে দেখছেন, আবার কেউ কিনছেন। আজ কারোরই যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ এ ধর্মীয় উৎসবের আনন্দকে রাঙিয়ে তুলতে এরই মধ্যে বেশিরভাগ মানুষের নতুন পোশাক কেনা শেষ। ঈদের পাঞ্জাবিও ঘরে উঠেছে। তাই এখন সবাই ভিড় জমাচ্ছেন অন্যতম অনুষঙ্গ আতর, টুপি, সুরমা আর জায়নামাজের দোকানে। এর পাশাপাশি তসবিহও কিনছেন অনেকে। ক্রেতার চাহিদাকে মাথায় রেখে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি পণ্য দিয়ে নিজেদের সম্ভার সাজিয়েছেন নগরের দোকানিরাও। সবাইকে স্বতন্ত্র পণ্যটি দিতে চাইছেন তারা।
রাজশাহী মহানগরীর বড় বড় বিপণিবিতান থেকে শুরু করে আজ বিভিন্ন সড়কের পাশের ফুটপাতের দোকানেও তাই এখন আতর-টুপি কেনার ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, আরডিএ মার্কেট ও নিউমার্কেটের বিভিন্ন দোকানে পাওয়া যাচ্ছে আতর, টুপি ও সুরমা। এবার ঈদে আকর্ষণীয় নকশার টুপির প্রতি ক্রেতাদের বেশি আকর্ষণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে নকশা ও কারুকার্যের মান ভালো হওয়ায় দেশি টুপির চেয়ে বিদেশি টুপি বেশি কিনছেন ক্রেতারা। তাই বাহারি সব ডিজাইনের রঙিন টুপির পসরা সাজিয়ে বসেছেন ফুটপাতের দোকানিরা।
রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টের ফুটপাতে বসা ব্যবসায়ী সিকদার জরি হাউস ও আতর হাউসের মালিক রকি সিকদার বলেন, দেশি গোল টুপি বিভিন্ন রকমের টুপি সর্বনিম্ন ১০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া গুজরাটি টুপিও পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। এছাড়া জর্ডানি টুপি ১৫০ টাকা, পাকিস্তানি টুপি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, নেপালি টুপি ২৫০ টাকা ও সৌদি আরবের টুপি ৪০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তার পাশের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলম। তিনি জানান, এবারের ঈদে দেশি আতরের মধ্যে ক্রেতাদের পছন্দের প্রথমেই রয়েছে মদিনা ও তিব্বত আতর। তারপর চন্দন, ফেরদৌস, রাজ দরবার, শাহী দরবার। এগুলো সর্বনিম্ন ১০০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে। সৌদি ও দুবাইয়ের আতর সিফাত, সাফিনা, লামহা, রওজ, ব্লুমুন, মুকাম্মাল, মারওয়া, জমজম, আরফে জোহরা ও মুকাদ্দাস পাওয়া যাচ্ছে ১০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যেই। তার দোকানে একসঙ্গে আতর, টুপি ও সুরমার প্যাকেজও রয়েছে। কেউ চাইলে মাত্র ২৫০-৫০০ টাকার মধ্যে পুরো প্যাকেজ নিতে পারেছেন।